তাহেরপুর পৌরসভা হাটে শীত কালিন সবজি উঠলেও দাম দ্বিগুণ
নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে
রাজশাহী জেলার বৃহতম বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা হাটে কাঁচা বাজারে শীতের সবজি বাজারে আসলে কমেনি সবজির দাম। শরতের শেষে প্রতিবছর এ সময়ে অগ্রিম শীতকালীন সবজি ওঠলেই বাজারে দাম কমতে শুরু করে। স্বস্তি ফিরে পায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু বাজারের বর্তমান চিত্র ভিন্ন। এই সময়ে সবজির যে দাম থাকার কথা,তার চেয়ে তুলনামূলক বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। এছাড়া নিয়মিত বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকা এবং প্রতিটি দোকানে দাম নির্ধারণ করে তালিকা না দেওয়ায় ইচ্ছামত দাম হাকিয়ে নিচ্ছে খুচরা দোকানীরা। তাই স্বস্তিতে নেই নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। এদিকে শীত যত ঘনিয়ে আসছে তাহেরপুর হাটে শীতকালীন সবজির আমদানি তত বাড়ছে। তবে সরবরাহ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে সবজির। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শীতকালীন সবজির দাম কেজিতে বেড়ে চলেছে। বাজারে সিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মূলা, নতুন আলু পাওয়া যাচ্ছে। এসব সবজিও দাম তুলনামূলক বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির সরবারহ কম। তাই বেড়েছে দাম। তবে সবজি ক্রেতাদের দাবি, বাজারে সিন্ডিকেট করে দাম নির্ধারণ করা। সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে পণ্যের দাম কমবে না। গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজিতে। আলুর কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে।মানভেদে প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এছাড়া করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, সিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ধুন্দুল ৫৫ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। টমেটো ১৪০ টাকা, ফুলকপি প্রতিকেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বাধাকপি আকার ভেদে প্রতিটি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে। নিম্ম আয়ের,লোকজন জানান, তরি তরকারী কিনতে এসে বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে। এত দাম হলে কিভাবে চলা যায়। হাটে আসা একাধিক ক্রেতা জানান সরকারী মুল্যের চেয়ে খাজনা আদায় হয় কয়েকগুন বেশি। আর এসবের জের টেনে সাধারন নিম্ম আয়ের মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে বেপরোয়া ভাবে। প্রশাসনের কোন ধরনের বাজার মনিটরিং না থাকার কারনে ইচ্ছেমত দাম নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্রেতারা বলছে খুচরা ব্যবসায়ীরা সবজি বিক্রিতে অতি মুনাফা করছেন। মোকামে দাম কম হলেও তারা দাম বেশি নিচ্ছেন। প্রশাসন বাজার পর্যবেক্ষণ করে অতি মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে সবজির দাম কিছুটা আয়ত্বের মধ্যে আসবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তবে নিয়মিত বাজার মনিটরিং না থাকা এবং প্রতিটি দোকানে দাম নির্ধারণ করে তালিকা দেয়া হলে এত অনিয়ম থাকবেনা বলে দাবি একাধিক ক্রেতার। উল্লেখ্য,১৯৬৪ সালের অ্যাগ্রিকালচারাল প্রডিউস মার্কেটস্ রেগুলেশন অ্যাক্ট ও ১৯৮৫ সালের সংশোধিত বাজার নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৬ (১) ও ১৬ (২) ধারামতে কৃষিজাত ও ভোগ্যপণ্যের ক্রয়মূল্য, বিক্রয়মূল্য ও মজুদ পরিস্থিতির তদারকির ক্ষমতা রয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার কর্মকর্তাদের। কিন্তু বাস্তবে কোথাও আইনটির প্রয়োগ হতে দেখা যায় না। তাছাড়া ১৯৫৩ সালের মজুদবিরোধী আইন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইনেরও প্রয়োগ নেই। সেজন্যে ক্রমাগতভাবে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে বাজার।