ঝালকাঠিতে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী শিব চতুর্দশীর মেলা
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির, ঝালকাঠি : সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তৃতীয় আন্তর্জাতিক পীঠস্থান-খ্যাত ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়ার ঐতিহ্যবাহী শিববাড়ীতে তিন দিনব্যাপী শিব চতুর্দশী উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছে। এ উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ ঐতিহ্যের মেলা বসেছে।
শুক্রবার রাত থেকে ত্রাম্বকেশ্বর ভৈরবের পূজা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পূজা অর্চনা, শিব দর্শন, পুণ্যস্নানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান শুরু হয়। শনিবার বসে বড় মেলা। এদিন সকাল থেকে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার দর্শনার্থী এই মেলায় আসেন তাদের মনবাসনা পূরণ করার জন্য। আজ রোববার সকালে এ মেলা শেষ হয়।
মেলা আয়োজকরা জানান, ৪০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতি বছর এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। শিব চতুর্দশী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের নানা বয়সের হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থী শিব দর্শন করতে আসার কারণেই এ মেলার উৎপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পুণ্যার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
স্বামীর মঙ্গল কামনায় দেবতা শিবকে তুষ্ট করতে গৃহবধূরা শিব অর্ঘ্য দিতে আসেন। আর অবিবাহিত মেয়েরা আসেন শিবের ন্যায় নিজের যোগ্য বর (স্বামী) প্রত্যাশায় ফুল-জলের নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবতাকে তুষ্ট করতে।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ পুরাণের বর্ণনা মতে, দক্ষরাজা যজ্ঞ করার সময় কন্যা সতীকে নিমন্ত্রণ না করায় অপমানিত সতী যজ্ঞস্থলে দেহত্যাগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিব স্ত্রী সতীর দেহ মাথায় নিয়ে প্রলয় নাচ শুরু করেন। ওই সময় যজ্ঞকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে দেবতা বিষ্ণু চক্র দিয়ে সতীর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করেন। খণ্ডিত অংশগুলো যেসব স্থানে পড়ে, সেসব স্থান তীর্থস্থানে পরিণত হয়।