শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মান্দায় চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক

মান্দায় চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক

মান্দা (নওগাঁ) সংবাদদাতা: নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে একের পর এক পাকা স্থাপনা নির্মাণের হিড়িক শুরু চলছে। পাউবোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যনেজ করেই চলছে এসব তুঘলকি কাজ বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ হলেই কেবল এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। কিন্তু লোক দেখানো কিছুদিন কাজ বন্ধ রাখার পর অলৌকিক ক্ষমতাবলে ওইসব স্থাপনার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন প্রভাবশালী ওই দখলদারেরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত ৫/১০ বছরের মধ্যে মান্দা উপজেলায় আত্রাই ও ফকিন্নি নদীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পাউবোর অধিগ্রহণ করা সম্পত্তিতে অন্তত দুইশর বেশি পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ফেরিঘাট-মিঠাপুর বিশ্ব বাধ সড়কের ফেরিঘাট,প্রসাদপুর খেয়াঘাট সংলগ্ন দরগা তলা মোড়ে পাকা স্থাপনা নিয়ের্মাণ কাজ করা হয়েছে কিছু চলমান রয়েছে। এসব নির্মাণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলে প্রাথমিকভাবে নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর কিছুদিন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন দখলদারেরা। পরে সুযোগ মতো পাউবোর কর্তাদের মোট অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। এ সময় আবার নতুন করে অভিযোগ দেওয়া হলেও আর আমলে নেওয়া হয় না। তখন পাউবোর কর্মকর্তারা টাকা খেয়ে একেবারে নিরবতা পালন করেন। আবার বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা এসব বিষয় একদম এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁজরভাঙ্গা বাজারের একাধিক বাসিন্দা জানান, পাঁজরভাঙ্গা বাজার এলাকায় নতুন করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছেন ফজলুল করিম বাবু ও বুলবুল হোসেন। অভিযোগ দেওয়ার পর স্থাপনা দুটির নির্মাণ কাজ বন্ধের জন্য নোটিশ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিছুদিন বন্ধ রাখার পর ফজলুর করিম বাবু সম্প্রতি ওই স্থাপনার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করেন। অভিযোগ উঠেছে দেড় লাখ টাকায় পাউবোর কয়েকজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে এ অবৈধ কাজ সম্পন্ন করেন তিনি। এরইমধ্যে এ বাজারের আলাউদ্দিন প্রামাণিক, আতাউর রহমান, গৌউর চন্দ্র প্রামাণিক, জালাল হোসেন একইভাবে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেন। আতাউর রহমান নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন। এছাড়া প্রসাদপুর খেয়াঘাট বিশ্ববাধ মোড়ে পাউবোর স্থায়ী হুকুম দখল করা আরএস হাল দাগ নম্বর: ৪৩৭,৪৩৮,৪৩৯,৪৩৩,৪৪২ নবির উদ্দিন, হাসেন আলী প্রামানিক, নয়ন চন্দ্র গংরা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। কিছু চলমান রয়েছে। এছাড়া ২৮৬ ২৮৭,৩২৮,৩৩৭, ৪২৮ দাগের বিশ্ববাধের হুকুম দখল করা জমিতে বাড়ি ও ফসলী জমি হিসেবে ব্যবহার করছে সড়কের মাটি ধসিয়ে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফজলুল করিম বাবু বলেন, ‘স্থাপনা নির্মাণের সময় নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে পাউবো অফিসে যোগাযোগ করে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ করেছি। তবে কীভাবে ম্যানেজ করলেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এসব বিষয়টি বলা যাবে না।’ এ বিষয়ে জোতবাজার বণিক সমবায় সমিতির সভাপতি ফজলুল বারী সাফি সাংবাদিকদের বলেন, ‘জোতবাজার চৌরাস্তা মোড়ের অদুরে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ করে পাউবোর সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের জন্য এলাকাবাসী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। পত্রপত্রিকায় বহু লেখালেখি হয়েছে। পাউবোর সকল দপ্তরে অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ হয়নি। তবে পকেট ভারী হয়েছে পাউবোর কর্মকর্তাদের।’ এ বিষয়ে পাউবো নওগাঁর সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মহসীন রেজা বলেন, ‘পাউবোর সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করে ঘর নির্মাণ কাজে এ দপ্তরের কেউ জড়িত আছে কি না তা আমার জানা নেই। তবে আমি জড়িত নই।’ পাউবো নওগাঁর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী পবিত্র কুমার পাল এ বিষয়ে মোবাইলফোনে কথা বলতে রাজি হননি। জানতে চাইলে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ফইজুর রহমান বলেন, এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এভাবে মোবাইলে কথা হবে না। অফিসে আসেন বলে সংযোগ কেটে দেন।

১০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS