বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দুই কিলমিটার খাল খননে ভাগ্য বদলেছে দু-গ্রামের প্রান্তিক চাষিদের

দুই কিলমিটার খাল খননে ভাগ্য বদলেছে দু-গ্রামের প্রান্তিক চাষিদের

শার্শা(যশোর) সংবাদদাতাঃ যশোরের শার্শায় দুই কিলমিটার খাল খননে ভাগ্য খুলেছে দু গ্রামের প্রান্তিক চাষিদের। শার্শা ও স্বরুপদাহ মৌজায় অবস্থিত ভাওতার খালটি দির্ঘ ৫০ বছরের অধিকসময় হাজা মজার কারনে খালটির নাব্যতা হারিয়ে কৃষকের গলার কাটা হযে দাড়ায়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপিচেয়ারম্যানের তৎপরতায় এলজিইডি বিভাগের পুকুর, খাল, উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে দুই কিলমিটার খাল খনন করা হয়। ১ কোটি টাকার বিনিময়ে খননকৃত খালটি এখন প্রান্তিক চাষিদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। শার্শা ইউপি চেয়ারম্যান কবির উদ্দীন আহম্মেদ তোতা এক স্বাক্ষাতকারে বলেন ৫০ বছরের অধিক সময় দু-গ্রামের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভাওতার খালটি হাজা মজা ছিল । নাব্যতা না থাকায় চাষিদের কোন উপকারে আসতো না এখালটি। বর্তমানে খালটি খনন করায় খালের দু-পাড়ে কলা চাষ, বেগুন, পেপে, কুমড়া সহ বিভিন্ন প্রকার সবজী চাষ করে প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হচ্ছে। এছাড়া খালের ভিতরে সার্ফেস ওয়াটার বা পুষ্টিগুন সম্পন্ন পানি ব্যবহার করে আউষ, আমন ও ব্যোরো চাষ করছে সহজলভ্যে। স্বরুপদাহ গ্রামের প্রান্তিক চাষি শুকুর আলী এ প্রতিনিধি কে বলেন খাল খননের আগে প্রতি বিঘা জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য সেচ মালিকদের কে ৪ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা সেচের টাকা দিতে হতো। বর্তমানে খাল খননের কারনে এ বছর ৩ হাজার টাকা বিঘা প্রতি সেচ মালিকদের দিয়েছি। কখনই সবজী চাষ করার স্বপ্ন দেখিনি, কিন্তু খাল খননের ফলে আমি ২ শতাধিক কলাগাছ ও বেগুন চাষ করে লাভবান হয়েছি। এছাড়া ৫০ জনের একটি সমিতি গঠন করে খালে মাছচাষ, হাসের খামার করে তাদিয়ে আমিষের চাহিদা পুরন করছে ৫০ টি পরিবারের সদসরা। উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা এম এম মামুন হাসান এক স্বাক্ষাতকারে বলেন সরকারের এধরনের উন্নয়ন প্রকল্পের কারনে দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্ম সংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। তিনি বলেন খাল খননের ফলে সার্ফেস ওয়াটর অবারিত হওযায় গ্রাউন্ড ওয়াটারের জন্য এখন আর প্রয়োজন হয়না। খাল খননের ফলে সার্ফেস ওয়াটার বা পুষ্টি গুন সম্পন্ন পানি ব্যবহার করে ব্যোর, আমন, আউস ধান চাষ হচ্ছে। তাছাড়া গ্রাউন্ড ওয়াটারে হ্যাভিমেটাল থাকে তার মধ্যে আয়রন, আর্সেনিক, ম্যাংগাজিন, সহ ভারি ধাতব পদার্থ থাকে যা ফসল ও মানবদেহের জন্য খুবি ক্ষতিকর। খাল খননের মাধ্যমে সার্ফেস ওয়াটার ব্যাবস্থা পনার ফলে গ্রাউন্ড ওয়াটারের উপর চাপ কমে এবং গ্রাউন্ড ওয়াটার টেবিল নীচে নামার সম্ভাবনা কমে যায়। যা পরিবেশের জন্য ভারসম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সরকারের পুকুর ও খাল খনন প্রকল্পটি সারা দেশে চলমান থাকলে লক্ষ লক্ষ দরীদ্র ও প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃস্টি হবে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র পাল এক স্বাক্ষাতকারে জানান খাল খননের ফলে ৫০টি পরিবারের আত্ম কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সার্ফেস ওয়াটার ব্যবহার করে দুই গ্রামের মানুষ আউশ, আমন ও ব্যোরো চাষে সেচ কার্য পরিচালনা করছে। এব্যবাপের নির্বাহী প্রকোশলী শরিফুল ইসলাম এক স্বাক্ষাত কারে বলেন, খাল ও পুকুর সৃষ্টির পর থেকে কোন সময় খনন করা হয়নি, বর্তমান সরকার পুকুর ও খাল খনন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করে আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষে পুকুর ও খাল খননের ফলে নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে, ভাগ্য বদলেছে ঐ এলাকার প্রান্তিক চাষিদের।

২৪৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares