বুধবার- ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রস্তুতি সভা

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রস্তুতি সভা

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবের লক্ষন বৃহস্পতিবারও দেখা যায়নি। জেলা জুড়ে রোধে পোড়া তাপদাহের আবহাওয়া বিরাজ করছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার পূর্বাভাসে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। মুলত কাগজ পত্রে প্রস্তুতির তথ্য দেয়া হলেও বাস্তবে তার কোন প্রস্তুতি নেই। সভায় অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেননা। কর্মকর্তাদের মিথ্যা তথ্যে ভোলায় যে কোন র্দূযোগে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান বেশী হয়।

বৃহস্পতিবার (১১মে) দুপুরে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলা ভোলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী।

এ সময় তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে যেন বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মিটিং করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এলাকায় এলাকায় মাইকিং করে সবাইকে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ৭৪৬টি সাইক্লোন শেল্টার, আশ্রয়কেন্দ্র, পর্যাপ্ত ত্রাণসহ ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। উপজেলায় উপজেলায় খোলা হয়েছে আটটি কন্ট্রোল রুম। উপকূলীয় এলাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে কোস্টগার্ডের উদ্ধারকারী জাহাজ। এজন্য দ্বীপ জেলা ভোলার উপকুলীয় উপজেলার জনসাধারনকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আমরা আশা করি জানমালের ক্ষয়ক্ষতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারব। নিরাপদে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে চরাঞ্চলে ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের। ১৩ হাজার ৬০০ জন (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে।

জেলার ৭০টি ইউনিয়ন এবং সাতটি উপজেলায় ৯২টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন ডাঃ কেএম শফিকুজ্জামান। প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা জানান, চরাঞ্চলে গরু-মহিষ, ছাগল-ভেড়ার আশ্রয়ের জন্য ৬টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কোষ্টগার্ড কমান্ডার জানান, তারা উদ্ধার কারী জাহাজসহ কয়েকদিনের খাদ্য সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোড (পাউবো) সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী হাসানুজ্জামান। এদিকে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে এবং সগর, মেঘনা থেকে সব ধরনের নৌকা ও ট্রলার গুলোকে নিরাপদে অবস্থান করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন। কোস্ট গার্ড, প্রনীসম্পদ, মৎস্য বিভাগ, সিভিল সার্জন সভায় মিথ্যা তথ্য প্রদানের অপরাধে কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকদের তোপের মুখে পরেন।

সভায় বিদ্যুত, বন, জনস্বাস্থ্য, আনসার বিভাগের কোন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি অংশগ্রহন করেননি। ভোলা আবহাওয়া কর্মকর্তা জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরো শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আগের স্থরে রয়েছে। এটি আরো শক্তিশালী হয়ে ১২ মে শুক্রবার থেকে (১৪ মে) রবিবার নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখার-রূপ নিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেবে। এটার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২২০ থেকে ২৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূল থেকে এখনও গড়ে ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এ সময় পুলিশ সুপার মোহান্মদ সাইফুল ইসলামসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

৬৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares