সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নাচোলে বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশংকা নিয়ই বোরো ধান কাটা শুরু

নাচোলে বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আশংকা নিয়ই বোরো ধান কাটা শুরু

মোঃ ইব্রাহীম, নাচোল (চাঁপাইনবাগঞ্জ) প্রতিনিধি : বরেন্দ্র অঞ্চল চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বৈশাখী ঝড়, শিলা বৃষ্টির আশংকা ও শ্রমিক সংকটের মধ্যেই আগাম ধানকাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। মাঠে ১৫% ধান কাঁচা থাকলেও গৃহস্তের অনুরোধে কাঁচা-পাকা ধান কাটা শুরু করেছেন স্থানীয় শ্রমিকেরা। এবছর কয়েকদফা বৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টির করাণে মাঠের ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে ধানকাটা শ্রমিকের সংকট থাকলেও মহিলা শ্রমিক দিয়েই ধান কাটা শুরু করে দিয়েছেন গৃহস্তরা। জেলার ভোলাহাট, শিবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলায় আবাদকৃত বোরোধান একই সাথে পেকে যাবার করেণে শ্রমিক সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসের সূত্রমতে এবছর বোরো আবাদের ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তাই এ মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। সাম্প্রতিক কয়েকদফা বৈশাখী ঝড়ো বাতাসে আধা পাকা ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও ফলনে তেমন প্রভাব পড়বেনা বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ ও উপসহকারি কৃষি অফিসার আমিনুল ইসলাম। তবে মাঠের পাকা ধান তুলতে বেগ পেতে হবে কৃষকে। এবছর উপজেলায় ৯২৫ হেক্টোর জমিতে হাইব্রীড জাতের আবাদ হয়েছে। হাইব্রীড জাতের ধান ঝড়ো বাতাসে একটুও নুয়ে পড়েনি। কৃষকরা বোরো মৌসুমে বেঁটে জিরা, রডজিরা ও ব্রী-৫৮ জাতের প্রচুর আবাদ করেছেন। বেঁটে জিরা, রড জিরা, ব্রী-৫৮ ও ব্রী-৮১ জাতের বোরো ধান ঝড়ো বাতাশ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল তাই এধরনের ধান চাষের জন্য কৃষকদের প্রতি আহŸান জানান উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বুলবুল আহম্মেদ জানান, এবছর নাচোল উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ৯হাজার ৯০০ হেক্টোর। কিন্তু আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ও বীজচারা পর্যাপ্ত হওয়ায় রবিশস্য উঠানোর পরও কৃষকরা ওই জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। নাচোল উপজেলায় প্রায় ৯হাজার ৯শ’ ৯০ হেক্টোর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। সূত্রমতে এবছর উপসি জাতের আবাদ হয়েছে ৯হাজার ৬৫ হেক্টোর ও হাইব্রীড জাতের আবাদ হয়েছে ৯২৫ হেক্টোর। ধান উত্তোলন পর্যন্ত আবহাওয়া ভাল থাকলে উপসি জাতের প্রায় ১হাজার ৩শ’ ৭৪ মেট্রিকটন ও হাইব্রীড জাতের প্রায় ১২৪ মেট্রিকটন অর্থাৎ প্রায় ১হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে। উপসহকারি কৃষি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, উপজেলার চারটি ইউনিয়নে ১শ’টি প্রদর্শনী প্লট আছে। পলিথিন থেরাপির মাধ্যমে তীব্র শীত উপেক্ষা করে বীজচারা উৎপাদন, সঠিক সময়ে সেচ, রাসায়নিক সার ও বালাইনাশকসহ অন্যান্য পরিচর্যার ফলে এবছর বোরোর বাম্পার ফলনের আশায় বুক বেঁধে চেয়ে আছেন কৃষক। আবহাওয়া ভাল থাকলে ইদুল ফিতরের পর পরই ধান কাটতে লাগতো কৃষক। কিন্তু বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির ভয়ে অনেক কৃষক প্রায় ১৫ থেকে ২০% কাঁচা ধান ঈদুল ফিতরের আগেই কাটা শুরু করেছেন। উপজেলার হাঁকরইল গ্রামের কৃষক আলহাজ¦ সেকান্দার আলী জানান, তিনি এবছর সাড়ে ৫বিঘা সরিসা উঠিয়ে বোরো ধানের আবাদ করেছেন। মাঠে ধানও হয়েছে মাশাআল্লাহ। কিন্তু বৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির ভয়ে কিছু ধান কাঁচা থাকতেই কাটা শুরু করে দিয়েছি। একই গ্রামের আব্দুল মালেক ও সূর্যপুর মোড়ের আশরাফুল হক জানান, তারা দু’জনে প্রায় ২৭ বিঘা বেঁটে জিরা ও রড জিরা ধানের আবাদ করেছেন। মাঠের কাঁচা-পাকা ধান বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির ভয়ে কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা।

১০৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares