শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শহীদদের নিয়ে ফেসবুকে কুটুক্তি করায় যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারের দাবী

শহীদদের নিয়ে ফেসবুকে কুটুক্তি করায় যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতারের দাবী

দুলাল সরকার, সৈয়দপুর-নীলফামারী প্রতিনিধি : মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে ফেসবুকে জঘন্য কুটুক্তির প্রতিবাদে নীলফামারীর সৈয়দপুরে বিতর্কিত উপজেলা যুবলীগ আহŸায়ক দিলনেওয়াজ খানের উপযুক্ত বিচার দাবী করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও প্রজন্ম ৭১। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় শহরের আদিবা কনভেনশন সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবী তুলেছেন নেতৃবৃন্দ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মহসিন হক মহসিন। তিনি লিখিত বক্তব্যে ওই যুবলীগ নেতাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেফতার না করা হলে সৈয়দপুরকে অবরুদ্ধ করে ফেলার হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। সেই সাথে দলের সকল পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের প্রতি আহŸান জানান। এতে বক্তব্য রাখেন শহীদ আমিনুল হকের সন্তান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, পৌর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু, প্রথম শহীদ মীর্জা মাহতাব বেগের সন্তান মীর্জা সালাহউদ্দীন বেগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার শাহজাহান সরকার, মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, ফজলুল হক, শহীদ সন্তান মোনায়েমুল হক, মুজিবুল হক প্রমুখ। সাংবাদিকদের মধ্যে প্রশ্ন করেন সাংবাদিক শাহজাহান আলী সরকার, শহীদ সন্তান এম আর আলম ঝন্টু, দৈনিক মুক্তভাষা সম্পাদক ও প্রকাশক ফয়েজ আহমেদ, দৈনিক আমার সংবাদ প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ ওয়ালিউর রহমান রতন ও দৈনিক ভোরের কাগজ প্রতিনিধি জিকরুল হক প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এ কে এম রাশেদুজ্জামান রাশেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক শাহজী, মাসুদুর রহমান লেলিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কাজী রুবেল, ত্রাণ সম্পাদক মোতালেব হোসেন, সুরুজ মন্ডল, যুবলীগ নেতা রাহাত সরকার, কাজী রাশেদ, সাবেক কাউন্সিলর কবির উদ্দীন ইউনুস, তাঁতীলীগের রুবেল বসুনিয়া, ছাত্রলীগের আকাশ সরকার। বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়েও পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা আজও সক্রিয়। তারা বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।তাই বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা-কে বার বার হত্যার চেষ্টা করেছে। ব্যর্থ হয়ে উন্নয়ন কে বাধাগ্রস্ত ও আওয়ামীলীগ কে বিতর্কিত করতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারই অংশ হিসেবে তারা পাকিস্তানি এজেন্টদের আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। তার বাবা কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডা। যে ৭১ এ অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে। অগণিত মা বোনের সম্ভ্রমহানী ঘটিয়েছে। এমনকি ট্রেন ট্রাজেডির সাথেও জড়িত নঈম খান। তার নেতৃত্বেই মুক্তিযোদ্ধা নিধনযজ্ঞ চালানো হয়েছে সৈয়দপুরে ও পার্বতীপুরে। বর্তমানে সৈয়দপুর উপজেলা যুবলীগের আহŸায়ক পদ বাগিয়ে নিয়ে ৭ বছর ধরে বহাল আছে। অথচ সে মাদক সম্রাট হয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ করায় সৈয়দপুর মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। তার নামে গড়ে ওঠা গুন্ডা বাহিনী দখল বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। যুবলীগের আহŸায়ক হওয়ার ৩ মাসের মধ্যেই সে সংখ্যালঘু হিন্দু মাড়োয়াড়ির বাড়ি দখলে নিয়েছিল। স¤প্রতি সে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্ট থেকে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের শয়তান বলে অভিহিত করে পোস্ট দিয়েছে। তাতে সে শহীদ পরিবারের সন্তানদের মাটিতে ফেলে পা দিয়ে কচলায় মারবে বলেও উলে­খ করেছে। এমন জঘন্য আচরণ মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি চরম ধৃষ্টতা। তাই দিলনেওয়াজ খান যে বাংলার শত্রু, স্বাধীনতার দুশমন। তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। একারণে তার বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় জিডি করা হয়েছে। জিডি নং ১২২৪, তারিখ ১৭/১১/২০২২ ইং। এহেন ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের জন্য তাকে ৭ দিনের মধ্যে গ্রেফতার করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি। অন্যথায় মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের সন্তানরা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির জনগণকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দিলনেওয়াজ খানকে সৈয়দপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করা হলো। প্রয়োজনে সৈয়দপুরকে অচল করে দেওয়া হবে বলেও হুশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়। বক্তারা বলেন, ইতোপূর্বেও সে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ ও আওয়ামীলীগ নিয়ে বিভিন্ন কুরুচিকর মন্তব্য করেছে। এজন্য তাকে পৌর আওয়ামীলীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যুবলীগের পদ থেকেও বহিষ্কারের জন্য জেলা ও কেন্দ্রে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কতিপয় নেতা তার অর্থের প্রভাবে নতজানু হয়ে তার পদ-পদবী বহালের সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা তাদেরও চিহ্নিত করেছি। তাদের ব্যাপারেও দলের উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ করা হলেও তার বিরুদ্ধে এখনও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি দায়িত্বশীল জেলা নেতাসহ কতিপয় কেন্দ্রীয় নেতারা।

১৮৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares