সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সৈয়দপুরে কবরস্থানে যাওয়ার রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার প্রতিবাদ করায় মিথ্যে মামলা

সৈয়দপুরে কবরস্থানে যাওয়ার রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার প্রতিবাদ করায় মিথ্যে মামলা

দুলাল সরকার, (সৈয়দপুর-নীলফামারী) প্রতিনিধি ; সম্মিলিত উদ্যোগে কবরস্থানে যাতায়াতের জন্য তৈরী করা রাস্তায় চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন সাখাওয়াত হোসেন নামে একব্যক্তি। এলাকাবাসী এর প্রতিবাদ করায় একজন সাবেক সেনা সদস্যসহ ৯ টি পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দেয়া ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। এমন ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ায়। গত রবিবার ঘটনাস্থলেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে ধরেছেন ভুক্তভোগী ৯ টি পরিবারসহ এলাকাবাসী। সংবাদ সম্মেলনে এলাকার মৃত. মনছুর আলীর ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ দুলাল হোসেন বলেন, আমার আপন ভাইয়েরাসহ আরও প্রায় ৯টি পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় অত্যন্ত কষ্ট করে চলাচল করত। এমনকি নামাজের জন্য মসজিদে এবং মৃত্যুর পর শেষ ঠিকানা কবরস্থানে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তারা ভোগান্তির সম্মুখিন। কারণ এই পথেই এলাকাবাাসী কবরস্থানে যাতায়াত করেন। এমতাবস্থায় গত ২০২০ সালে সকলের সম্মতিতে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার, ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে পর পর ৩ দিন সকলে বসে রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় ৭ ফুট চওড়া ও ১৮১ ফুট লম্বা জায়গা ছাড়ার জন্য মাপজোক করে খুটি পোতা হয়। রাস্তার জায়গার পরিবর্তে অন্যত্র বদলি জমি প্রদানের লিখিত চুক্তিনামাও করা হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী রাস্তার জায়গা ছেড়ে দেয় প্রত্যেকেই। কিন্তু প্রতিবেশী মৃত. বদিউজ্জামান বজু’র ছেলে মোঃ সাখাওয়াত হোসেন তার অংশে কিছু জায়গা ছাড়লেও পূর্বের একটি ঘরের বর্ধিত অংশ সরিয়ে না নেয়ায় রাস্তাটি নির্মাণ হলেও দীর্ঘ একবছর যাবত চলাচলে আগের মতই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চেকরু মামুদ নামে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধ বলেন, বার বার বলা সত্বেও সাখাওয়াত কোন প্রকার কর্ণপাত করছেন না। এমন একগুয়েমীর কারণে দূর্ভোগের প্রতিবাদ করলে তারা সাফ জানিয়ে দেয় রাস্তা বাবদ জমি গ্রহণ বা প্রদান করা সংক্রান্ত চুক্তিনামা মানেন না। তাই জায়গা ছাড়বেন না। কথা কাটাকাটির সূত্র ধরে প্রায়ই পুলিশ ডেকে অহেতুক হয়রানী করে চলেছেন। এমনকি নিজেরাই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে সেই অভিযোগে প্রতিপক্ষদেরকে ফাঁসিয়ে একটি মিথ্যে মামলাও করেছিলেন। যা পরবর্তীতে তিনি শর্ত সাপেক্ষে তুলে নেন। কিন্তু বাঁশকাটা এবং মারামারির অভিযোগে আরও দুটি মিথ্যে মামলা করেছেন। যা এখনও বিচারাধিন। তারপর থেকে প্রায়ই পায়ে পড়ে ঝগড়া বাধিয়ে অত্যন্ত বিভিষীকাময় পরিবেশ করে রেখেছে। গত শুক্রবার আবারও বহিরাগত কিছু লোকজনকে ডেকে এনে নিজ বাড়িতে আগুন লাগিয়ে তার দায় প্রতিবেশিদের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানোর প্রাক্কালে ৪ জনকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এমন অমানবিক ও অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে আমরা অসহনীয় অবস্থায় পড়েছি। হেলাল হোসেন বলেন, সাখাওয়াতের ছেলে মিজানুর রহমান ও মিনহাজুল ইসলাম চিহ্নিত থাই জুয়ারী। একারনে অবৈধ টাকার দাপটে এবং পুলিশের সাথে সখ্যতার সুযোগে তারা এমন বেআইনী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ বার পুলিশ ডেকে এনে আমাদেরকে মামলায় ফাঁসিয়ে আর্থিক ও সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিবারই পুলিশ এসে অজ্ঞাত কারণে শুধু তাদের পক্ষ নিয়ে আমাদেরকেই ভয়ভীতি দেখিয়েছে। আমাদের কথা শোনার চেষ্টাও করেনি। এতে আমরা অত্যন্ত চাপের মধ্যে আছি। এখন আবার হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্ত সাখাওয়াতের ভাই ইয়াকুব আলী বলেন, একটি পরিবারের জন্য আজ এলাকার ৯টি পরিবারের প্রায় অর্ধশত মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। অথচ অযৌক্তিকভাবে তারা স্থানীয় শালিস মিমাংসাকে অগ্রাহ্য এবং নিজেদের স্বাক্ষরকৃত চুক্তিপত্রকে অস্বীকার করে গায়ের জোরে বিবাদ জিইয়ে রেখে প্রতিনিয়ত অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ রেখে চরম অন্যায় কাজ করছেন। তাদের এই খুটির জোর কোথায় তা আমাদের জানা নেই। উপস্থিত এলাকাবাসী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমরা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। আমাদের কোন দোষ থাকলে তা আইনগতভাবে বিচার করা হোক। অহেতুক মিথ্যে অভিযোগ এনে মামলা করে হয়রানীর কোন মানে হয়না। একারণে আমরা আজ আপনাদের সহায়তা চাচ্ছি। আমরা সবাই অত্যন্ত দরিদ্র। রিক্সা ভ্যান চালিয়ে, দিনমজুরী করে সংসার চালাই। আপনারা তদন্ত করে দেখেন। স্থানীয় মেম্বার চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলে সঠিকটা জেনে প্রকৃত বিষয়টি তুলে ধরেন। যদি আমাদের কোন অপরাধ না থাকে তাহলে এর একটা সুষ্ঠু সমাধানের ব্যবস্থা করেন। নয়তো প্রশাসনকে এর সুরাহা করার জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। আমরা আর এমন ভোগান্তি এবং বেআইনী হয়রানীর চাপ সইতে পারছিনা। বিশেষ করে আজ রাস্তাটি বন্ধ করে ঘর তোলায় যাতায়াত করা দূরহ হয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী সহ সকল কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবী করেছেন এলাকাবাসী।

১৩০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares