রবিবার- ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায় ——ড. হাছান মাহমুদ

বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায় ——ড. হাছান মাহমুদ

ইসাহাক আলী, নাটোর, ১৫ নভেম্বর- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। এই লক্ষ্যে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ শ্লোগান দিয়ে তারা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

মন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে স্বাধীনতা উপহার দেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনঃগঠন এবং উন্নয়নে আতœনিয়োগ করেন। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে দেশে ১০ হাজার টন উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন হয়, দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় ৯.৫৪ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধি এ পর্যন্ত সর্বাধিক। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে, তবুও বঙ্গবন্ধুর রেকর্ড করা প্রবৃদ্ধি ছোঁয়া যায়নি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র যাদুকরী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর মর্যাদাশালী রাস্ট্র। ২০০৮ সালে আমাদের ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এখন বাস্তবে রুপ নিয়েছে। মানুষের জীবন হয়েছে সুন্দর। এখন অনায়াসে ঘরে বসেই সকল নাগরিক সুবিধা পাওয়া যায়। ২০১৮ সালে আমাদের ঘোষিত ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামগুলো জেগে উঠেছে। আগে মানুষ ছিলো শহরমুখী, এখন তাঁরা গ্রামে যেতে চায়। গ্রামগুলো বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত, অর্থনীতির চাকা সচল। দেশে এক কোটি জনগোষ্ঠিকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে হ্রাসকৃত মূল্যে নিত্যপণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে, ৫০ লক্ষ জনগোষ্ঠি পাচ্ছেন চাল। বদলে যাওয়া বাংলাদেশে মানুষ এখন নিরাপদ। বাংলাদেশ আর কখনোই পেছনে বিভিষিকাময় পেছনে ফিরে যাবেনা।

মন্ত্রী বলেন, ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ শ্লোগান দিয়ে বিএনপি দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যেতে চায়। হাওয়া ভবনের বড় চোর তারেক রহমানের নেতৃত্বে তারা পাঁচশ’ নয় পাঁচ হাজার স্থানে বোমা হামলা চালাতে চায়, গ্রেনেড হামলা চালাতে চায়, বাংলা ভাই-ইংরেজী ভাই সৃষ্টি করতে চায়। কিন্তু দেশের সচেতন মানুষ আর কখনোই বিভিষিকাময় দিনে ফিরে যেতে চায়না।

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রধান সমন্বয়ক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশ আজ শান্তি আর সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ। দেশ ও মানুষের কল্যাণে আওয়ামী লীগের অর্জণগুলো দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে নেতা-কর্মীদের। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। সম্মানীত অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম বকুল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা.রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ। গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজান।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কার্যনিবাহী পরিষদ গঠন করা হয়। নতুন কমিটিতে এডভোকেট আনিসুর রহমানকে সভাপতি এবং আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষনার পর নজিরবিহীন শ্যুনসান নিরবতা বিরাজ করে প্যান্ডেল জুড়ে। এ সময় কোন করতালি বা শ্লোগানও দেয়নি কোন সমর্থক বা কর্মি।

এদিকে এই কমিটিকে স্থানীয় এমপি ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির পকেট কমিটি দাবি করে তার বাসায় তাৎক্ষনিক সাংবাদিকদের কাছে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় তিনি বলেন, এটি এমপির করা পকেট কমিটি। জীবনে আওয়ামীলীগ না করলেও তাকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। কিভাবে এই কমিটি হলো এ ব্যাপারে সকলের সংশয় সন্দেহ আছে। টাকার বিনিময়ে এমন কমিটি করা হয়েছে দাবি করে তিনি কমিটি পূনর্বিবেচনা করতে দলীয় প্রধানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। এ সময় তিনি এই কমিটি বহাল থাকলে আর কোন পদ পদবী গ্রহণ না করে কর্মি হিসাবে থাকবেন বলে ঘোষনা দেন। এ সময় তিনি দাবি করেন স্থানীয় এমপি বিগত সকল নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হওয়ার পরও তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বিকল্প প্রার্থীর পক্ষে ভোট করেন। শাহনেওয়াজ বলেন , এই কমিটির মাধ্যমে গুরুদাসপুরের ত্যাগী আওয়ামীলীগতে শুধু হেয় করা হয়নি এখানে আওয়ামীলীগকে হত্যা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডেও থাকবেন না বলে ঘোষনা দেন তিনি।

এ সময় শাহনেওয়াজ আলী ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের ব্যাপক নেতাকর্মি উপস্থিত ছিলেন।

৭৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares