শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নান্দনিক সৌন্দর্যে ডোমার রেলষ্টেশন, মুগ্ধ করেছে রাতের সৌন্দর্য ।

নান্দনিক সৌন্দর্যে ডোমার রেলষ্টেশন, মুগ্ধ করেছে রাতের সৌন্দর্য ।

রবিউল হক রতন, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি:  এক সময়কার জরাজীর্ণ নীলফামারীর ডোমার রেলওয়ে স্টেশন এখন ধপধপে সাদা আলোয় আলোকিত। নান্দনিক সৌন্দর্যে নতুন রূপের স্টেশনটি রাত্রিকালীন সময়ে সকলকে মুগ্ধ করছে রীতিমতো।

স্টেশন আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন কাজের শেষ হওয়ায় ডোমার স্টেশন রূপ নিয়েছে নতুনভাবে। সন্ধ্যে হলেই দুই প্লাটফর্মে মোট ৩৪টি ল্যাম্পপোস্ট এবং দুইটি শেডে প্রায় ২০টি বাতি জ্বলছে। এতে একসময়কার অন্ধকারাচ্ছন্ন স্টেশনে আলোর ঝলকানিতে দিনের আলোর মতো সৌন্দর্য বিরাজ করছে।

ছিনতাই ও চুরির শংকা থেকে মুক্তি পাওয়া যাত্রীরাও বেশ আনন্দিত। যাত্রীদের নিরাপত্তায় রাত্রিকালীন বাতির আলো অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মত সবার। এছাড়া ১নং প্লাটফর্ম থেকে ২নং প্লাটফর্মে আসা-যাওয়া করতে অন্ধকারে হাঁটতে হয় যাত্রীদের। এখন সেসব জায়গাতেও আলোর ব্যবস্থা হওয়ায় খুশি শিশু থেকে বৃদ্ধরা।

সিনথিয়া পারভীন ঝরণা নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, আগে রাজশাহী থেকে ডোমার এসে প্লাটফর্মে স্বল্প আলো থাকায় নিজের মাঝে শংকা কাজ করতো। একজন নারী হিসেবে রাতে একা চলাচল এদেশে কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও, নারীদের অদম্য সাহসে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। স্টেশনের আলোকিত রূপে আমি সত্যিই মুগ্ধ। এতে স্টেশনে অপেক্ষা করতে এখন থেকে কোনোপ্রকার ভয় কাজ করবে না।

তবে সৌন্দর্যের প্রতীক ডোমার স্টেশনে একটি ফুটওভার ব্রিজ চায় যাত্রী সহ স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে সকলেরই সুবিধা এবং স্টেশনটির সৌন্দর্য আরও দ্বিগুণ ত্বরান্বিত হবে। স্টেশনের প্লাটফর্ম উঁচু করার ফলে লাইন পারাপারে সমস্যা হচ্ছে সবার। দ্রুত একটি ফুটওভার ব্রিজ এখন সময়ের দাবী বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রহমান দাম্বেল বলেন, এখানকার লাইনের দুই পাড়ের মানুষের নিবিড় সম্পর্ক। কিন্তু বর্তমানে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে উঁচু প্লাটফর্ম। একটি ওভারব্রিজ হলে আশেপাশের শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লি, যাত্রী সাধারণ ও এলাকাবাসী কোনো রকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবে। স্টেশনে একটি ওভারব্রিজ এখন সময়ের দাবী।

সারাদিনের কাজ শেষে বাড়িতে ফেরা যুবক থেকে বৃদ্ধবয়সীরাও স্টেশনের আলোকিত প্লাটফর্মে এসে সময় কাটান রীতিমতো। এছাড়া ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও খুব স্বাচ্ছন্দ্যে এক হাজার ২০০ ফুট লম্বা প্লাটফর্মে নিয়মিত হাঁটাহাঁটি এবং শারীরিক চর্চা করছেন। এক কথায়, সন্ধ্যে নামলেই সব বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয় স্টেশন এলাকা।

সাজু কিবরিয়া আলম নামে এক যুবকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, সারাদিন চাকরি শেষে বাড়ি ফিরে খাওয়া-দাওয়ার পর একটু বাইরে বের হয়ে এখানে এসেছি। শরীরের ফিটনেস ঠিক রাখতে প্লাটফর্মটি পুরোটা কয়েক চক্কর দিলে মোটামুটি অনেকটা ভালো লাগে। আর তাছাড়া এখন আলোয় আলোকিত হওয়ায় স্টেশনের দৃশ্যটাও অসাধারণ লাগে। এক কথায়, মন খারাপ থাকলে নিমিষেই মন ভালো করার জায়গা এটি।

রেলওয়ে সুত্রে জানা যায়, গতবছরের ১১ই নভেম্বর রেলমন্ত্রী নূরল ইসলাম সুজন এমপি ডোমার রেলওয়ে স্টেশনের আধুনিকায়ন ও সৌন্দর্য বর্ধন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়ে কয়েক কোটি টাকা। এরমধ্যে, প্লাটফর্ম উঁচু ও বৃদ্ধিকরণ, শেড নির্মাণ, ভবন নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার নির্মাণ, বিশ্রামাগার তৈরি, শৌচাগার স্থাপন, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন সহ আরও অনেক কাজ রয়েছে প্রকল্পটিতে।

২৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS