![পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার পাথর-বালু ক্রয় বিক্রয় শুরু পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার পাথর-বালু ক্রয় বিক্রয় শুরু](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2022/08/pic-1-16.jpg)
পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার পাথর-বালু ক্রয় বিক্রয় শুরু
![](https://spnewsbd.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে গত তিন দিন ধরে পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকার পর উভয় পক্ষের যৌথ আলোচনা শেষে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (২৯আগস্ট) দিবাগত রাতে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবসায়ী ও শ্রমিক নেতাদের যৌথ আলোচনায় বিষয়টি সমাধান হওয়ায় ব্যবসায়ীরা তাদের সিদ্ধান্ থেকে সরে আসে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকাল থেকে পাথর ও বালু ক্রয়- বিক্রয় শুরু হয়েছে।
যৌথ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন,পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মাহমুদুর রহমান ডাবলু, উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন আলী মন্ডল।
এসময় অন্যদের মধ্যে পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান, সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান,তেতুলিয়া উপজেলা পাথর বালি ব্যবসায়ী ও শ্রমিক কল্যান সমিতি সভাপতি মজিবর রহমান,সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন,সাধারন সম্পাদক হারুন অর রশিদ লিটন, অফিস সহকারি আশির উদ্দীন, পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালী ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির সাধারন সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম টয়েল,সহ-সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নয়ন, সড়ক সম্পাদক মজাফ্ফর হোসেন,সাবেক সড়ক সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুনির, দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ,মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ২৬৪ এর সভাপতি আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী, শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীনসহ পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, আগে ট্রাকে পাথর ও বালু লোড আনলোডে শ্রমিকদের প্রতি সেফটি ২ টাকা ৮০ পয়সা করে দেয়া হয়ে থাকতো। কোন যৌক্তিক কারণ ও আলোচনা ছাড়াই সেই পারিশ্রমিক ৫ টাকা ৫০ পয়সা দাবী করে জোর পূর্বক আদায় শুরু করে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের হঠাৎই এমন বাড়তি পারিশ্রমিক দাবী ও খারাপ আচরণের কারণে পাথর-বালু যৌথ ফেডারেশন গত ২৭ আগষ্ট (শনিবার) থেকে পঞ্চগড়ে পাথর-বালু ক্রয়-বিক্রয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখে। এদিকে প্রায় তিন দিন ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকার পর উভয় পক্ষের আলোচনা শেষে সমাধানের মাধ্যমে ধর্ষঘট প্রত্যাহার করে ব্যবসায়ীরা। সোমবার (২৯ আগস্ট) রাতে যৌথ আলোচনায় নতুন সিদ্ধান্তে প্রতি সেফটি পাথর ২ টাকা ৮০ পয়সার পরিবর্তে ৩ টকা ৯০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। অন্যদিকে পাথরের ট্রাকে অতিরিক্ত বকশিশ নেয়া আলোচনার মাধ্যমে এবার প্রতি ১০ চাকার ট্রাকে ৪’শত টাকা এবং ৬চাকা ট্রাকে ২’শত টাকার অধিক নিতে পারিবেনা। এদিকে বালু ১০ চাকা ট্রাকে ১৭০০ টাকার পরিবর্তে ১৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে ৬ চাকা ট্রাকে ৮০০ টাকার পরিবর্তে ৯০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এসময় পাথর ব্যবসায়ীরা জানান, কোন আলোচনা ছাড়াই জোর পূর্বক ভাবে শ্রমিকেরা অতিরিক্ত টাকা নেয়া শুরু করলে তারা পাথর ও বালু ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করে। এর প্রেক্ষিতে প্রশাসন সমঝতা চাইলে উভয় পক্ষের আলোচনায় পরবর্তী সীদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জেলা পাথর-বালু ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, হঠাৎ করে পাথর ও বালু লোডিং খরচ কোন আলোচনা ছাড়াই শ্রমিক নেতারা বৃদ্ধি করলে এর প্রতিবাদে গত শনিবার থেকে পাথর ও বালু ক্রয়- বিক্রয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন জেলার ব্যবসায়ীরা। প্রায় তিনদিন পর উভয় পক্ষের যৌথ আলোচনা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান হয়েছে।
শ্রমিক সংগঠন ২৬৪-এর সভাপতি আব্দুল লতিফ ও ২০০০ এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন বলেন, আমাদের দাবী ছিলো ৫ টাকা ৫০ পয়সা। আমরা শ্রমিকদের দাবীর প্রেক্ষিতে ৪টাকা করে নেয়া শুরু করি। এর পর ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদে কার্যক্রম বন্ধ করে রাখে। এখন উভয় পক্ষের আলোচনায় বিষয়টি সমাধান হয়ে ৩ টাকা ৯০ পয়সায় এসেছে। তবে পাথরের ট্রাকে লোড হওয়ার অতিরিক্ত বকশিশ নেয়ার পরিবর্তে ব্যাবসায়ীগন প্রতি ১০ চাকা ট্রাকে বকশিশ দিবেন ৪’শত টাকা এবং ৬চাকা ট্রাকে বকশিশ দিবেন ২’শত টাকা। আমরা এই সিদ্ধান্ত মানিয়া নিয়েছি।
পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রশাসক আনোয়ার সাদাত সম্রাট বলেন,পাথর বালি যৌথ ফেডারেশন ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাসহ ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করা হয়। এবং তারা সবাই এ সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করায় পাথর বালি যৌথ ফেডারেশন তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।