ঘোড়াঘাটে জরাজীর্ণ ডাকবাংলো


ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় ডাকবাংলো। ব্রিটিশ আমলে চুন-সুরকির গাঁথুনি ও ছাদ ঢালাই করে নির্মাণ করা হয় ঘোড়াঘাট ডাকবাংলো। বর্তমানে এটি রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থা হয়েছে। ঘোড়াঘাট উপজেলা সদর থেকে থানার উত্তর পাশে গেলেই মিলবে এই ডাকবাংলো। এটি সংস্কার করাসহ পুনরায় চালুর ব্যবস্থা করবেন বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডাকবাংলোটি বর্তমানে অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত থাকায় প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। বৃষ্টির দিনে ছাদ ও টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। এ ছাড়া দরজা-জানালার নড়বড়ে অবস্থা, আবার কোনো ঘরের দরজা-জানালা নেই। এতে নষ্ট হচ্ছে অনেক আসবাবপত্র। ভবনের ইট খুলে পড়ছে ও ছাদের উপরিভাগে জন্মেছে বিভিন্ন আগাছা। চুরি হয়ে যাচ্ছে নিরাপত্তাবেষ্টনীর প্রাচীরের ইটগুলো। অন্যের দখলে চলে যাচ্ছে বাংলোর অনেক জায়গা। সন্ধ্যা নামলেই অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে শতবর্ষী প্রাচীন এই স্থাপনা অন্যতম। ব্রিটিশ শাসনের পর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি পাক হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করা হতো এটি। এখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে এনে ঝুলিয়ে রেখে ব্লেড দিয়ে শরীর কেটে লবণ লাগানোসহ গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দেশ স্বাধীনের পর ডাকবাংলোটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে কিছুদিন চললেও গত ২০ বছর ধরে এটি বন্ধ। এ উপজেলায় রাতযাপন করার মতো কোনো ভালো মানের হোটেল বা রেস্ট হাউজ না থাকায় অনেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী-এমপি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তির আগমনে এটি ব্যবহার করা হতো। সবমিলিয়ে অরক্ষিত অবস্থার মাঝেও কোনোরকমে টিকে আছে এই ডাকবাংলো। জানতে চাইলে ইউএনও রফিকুল ইসলাম জানান, ডাকবাংলোটি জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলে এটি সংস্কার করাসহ পুনরায় চালু করার ব্যবস্থা করবেন বলে জানান তিনি।