পঞ্চগড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ও বালি ক্রয় বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা

পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই লোড-আনলোড খরচ বৃদ্ধি করায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর ও বালি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করেছে পঞ্চগড় জেলা পাথরবালি যৌথ ফেডারেশন।
শুক্রবার (২৬আগস্ট) দিবাগত রাতে পঞ্চগড় জেলা পাথরবালি যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে একই দিন সন্ধায় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর পাথর বালি ব্যবসায়ীক সমিতির অফিস কার্যালয়ে পাথর বালি ব্যবসায়ী ও মালিকসহ সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা শেষে রাতে এই সিদ্ধাস্ত গ্রহণ করা হয়।
পাথর বালি যৌথ ফেডারেশন সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড় জেলায় দীর্ঘদিন ধরে পাথর বালি লোড- আনলোডে প্রতি সেফটি ২টাকা ৮০ পয়সা করে শ্রমিকদের দিয়ে আসছিলো জেলার সকল ব্যবসায়ীরা।
এদিকে জেলা ট্রাক ট্রাক্টর, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ ও পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ২৬৪ এর সভাপতি সম্পাদক ১০ আগস্ট লোড- আনলোডের দাম বৃদ্ধির জন্য পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।
কিন্তু জেলা প্রশাসক কর্তৃক কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগেই শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ ও ২৬৪ গত ২০ আগস্ট থেকে জোর পূর্বক ভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ২ টাকা ৮০ পয়সার পরিবর্তে ৫ টাকা ৫০ পয়সা করে নেয়া শুরু করে। এতে করে ব্যবসায়ীরা যৌথ ফেডারেশনের সাথে কয়েক দফা আলোচনা শেষে কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর বালি ক্রয় বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা পাথরবালি যৌথ ফেডারেশনের সভাপতি হাসিবুল হক প্রধান জানান, ওই দুই শ্রমিক সংগঠন আমাদের ব্যবসায়ীদের সাথে কথা না বলে এবং প্রশাসনের কোন নির্দেশনা ছাড়াই দাম বৃদ্ধি করে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তারই প্রতিবাদে শনিবার (২৭ আগস্ট) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসায়ীদের সম্মতিতে পাথর বালি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
জেলা পাথরবালি ব্যবসায়ি ও সরবরাহকারী সমিতির দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রউফ জানান, পঞ্চগড়ের ওই দুই শ্রমিক সংগঠন জেলা প্রশাসনকে তোয়াক্কা না করে মনগড়া ভাবে দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জোর পূর্বক টাকা নেয়া শুরু করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। মূলত শ্রমিকরা একটা মালিক/ ব্যবসায়ীদের আন্ডারে কাজ করে। তারা যাই কিছু করুক মালিকদের জনাবেন। তাদের সংগঠনের সংবিধানে বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এই দুই সংগঠন সব কিছুকে বৃদ্ধাআঙ্গল দেখিয়ে একটা খারাপ পরিস্থিত সৃষ্টির জন্য তারা ভিন্ন রূপ দেখাচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে শ্রদ্ধা করি। তাই জেলা প্রশাসকের একটা সুষ্ঠু ও সঠিক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশৃঙ্খলা না সৃষ্টি করার লক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য পাথর বালি ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে পঞ্চগড় জেলা মটর পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন ২৬৪ এর সভাপতি আব্দুল লতিব জানান, দ্রব্যমূল্লের উর্ধ্বগতির কারনে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন থেকে লোড খরচা বাড়ানোর দাবী জানিয়ে আসছিল। সেই দাবীর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক বরাবর কয়েকদফা আবেদন করে গত বৃহস্পতিবার (২৫আগস্ট) থেকে ৪ টাকা নেয়া শুরু করেছি।
জেলা ট্রাক ট্রাক্টর, ট্যাংকলরী ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন ২০০০ এর সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন জানান, প্রথমে তেঁতুলিয়া লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন দাম বৃদ্ধির আবেদন করে জেলা প্রশাসক বরাবরে। এর পর ভজনপুর লেবার শ্রমিক ইউনিয়ন। পরে আমাদের ইউনিয়নের শ্রমিকরা আমাদের কাছে শ্রমের দাম বৃদ্ধির আবেদন করে। তবে জেলা প্রশাসক এখন পর্যন্ত আমাদের আবেদনের কোন উত্তর পাই নাই। তাই আমরা যৌথ ফেডারেশন ও জেলা প্রশাসকে অবগতসহ লিখিতভাবে দাম বৃদ্ধির আবেদন করে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শ্রমিকদের মূল্য বৃদ্ধির আবেদন পেয়েছি। আবেদনের পর এখনো কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় নি। সে বিষয়ে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে।