ভাষা শহীদদের রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন।।
এস,কে কৃষ্ণা ঢাকা বিভাগীয় ব্যুরো চীফঃ
মায়ের ভাষার মর্যাদা রক্ষায় অকাতরে রক্ত ঝরিয়ে জাতির স্বাধিকারের পথ সুগম করেছিলেন যারা সেইসব শহীদ ও সংগ্রামীদের স্মরণ করছে পুরো বাংলাদেশ।
দেশের সব শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন আর নানা আয়োজনে গর্ব আর শোকের এই দিনটি বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন শুরু করেছে জাতি। এর সূচনা হয়েছে বুধবার প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে।
মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাঙালির আত্মত্যাগের এ দিন এখন আর বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। বাঙালির ভাষার সংগ্রামের একুশ এখন বিশ্বের সব ভাষাভাষীর অধিকার রক্ষার দিন।
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে মধ্যরাতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছোঁয়ার আগেই হাজারো মানুষ হাতে ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে যান শহীদ মিনার অভিমুখী লাইনে। বিশিষ্টজনদের শ্রদ্ধা জানানোর পর উন্মুক্ত হয় স্মৃতির মিনার।
একুশের প্রথম প্রহরে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বাজছিল অমর সেই গান ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি…’।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে এবার প্রথম একুশের বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষাশহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামসহ সারা দেশে প্রথম প্রহরেই শহীদ মিনারে শুরু হয়েছে শ্রদ্ধা জানানোর পালা, ফুলে ফুলে ভরে উঠতে শুরু করেছে স্মৃতির মিনার।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফুল দেওয়ার পর দলীয় নেতাদের নিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তারা ফুল দেওয়ার পর স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু ফুল দেন শহীদ বেদীতে।
এরপর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ বিচারপতিরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রিপরিষদের সদস্য এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা।
প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে এরপর তিন বাহিনীর প্রধানদের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান শহীদ বেদীতে ফুল দেন।
শহীদদের শ্রদ্ধা জানান ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতারা।
ঢাকার বিভিন্ন মিশনের কূটনীতিকরাও ফুল নিয়ে হাজির হন শহীদ মিনারে।
শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ঢাকার দুই সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম।
প্রথম প্রহরের অনুষ্ঠানের পর বুধবার দিনব্যাপী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাবেন সবাই। এজন্য পুরো এলাকার দেয়াল আর পিচঢালা রাস্তাকে ক্যানভাস বানিয়ে রঙ-তুলির আঁচড়ে আলপনায় সাজিয়ে তুলছেন চারুকলার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সরকারপ্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ২১ বার পুষ্পস্তবক অর্পণের ছবি নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় এবার থাকছে বিশেষ প্রদর্শনী।