বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মধুখালীতে সরিষার বাম্পার ফলন

মধুখালীতে সরিষার বাম্পার ফলন

শাহজাহান হেলাল,ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি ৪ ফেব্রæয়ারী ২০২৪খ্রিঃ রোববারঃ ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ১ টি পৌর সভা ও ১১টি ইউনিয়নের বিস্তৃত মাঠ জুড়ে এখন সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। সরিষা ফুলের মৌমৌ গন্ধে মুখরিত চারদিক। স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল হলেও ভালো দাম না পাওয়ায় কয়েক বছর আগে সরিষার চাষ থেকে অনেক কৃষক মুখ ফিরিয়ে নিয়ে ছিলেন। তবে বর্তমানে কৃষি বিভাগের প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সারবীজ প্রদান এবং বাজারে ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে উপজেলার চাষীদের। চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার সরিষা উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। চোখ জুড়ানো মাঠ চাষীদের আশা এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৬শত ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরিষার আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৬শত ৮২ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের তুলনায় ২ হেক্টর বেশি। যেখানে ২হাজার ৪শ টন সরিষা ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। বারি— ১৪, বারিড় ১৫, বারিড় ১৬, বারি— ১৭, বিনা— ৪, বিনা— ৯, টরি— ৭ এবং সম্পদ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে।

এ মৌসুমে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়াাতে উপজেলার প্রান্তিক পর্যায়ের ৩ হাজার কৃষকের মাঝে প্রত্যেককে এক কেজি উন্নত জাতের সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ডাই—অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। উপজেলার মধুখালী হাটে খোঁজ নিয়ে জানা যায়,বর্তমানে প্রকার ভেদে প্রতি মণ নতুন সরিষা ২ হাজার ৫শটাকা থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো পর্যাপ্ত সরিষা উঠা শুরু হয় নাই এছাড়া প্রতি কেজি সরিষার তেল পাইকারি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

আড়পাড়া ইউনিয়নের পূর্ব আড়পাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ আকরাম বলেন, গত বছর দেড় বিঘা জমিতে বারি— ১৪ জাতের সরিষা আবাদ করে ১১ মণ সরিষা পেয়েছিলাম। শুকনা সরিষা ২ হাজার ৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি করে ভালো লাভ হয়েছিল। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার আবাদও ভালো হয়েছে।

উপজেলার কোরকদী ইউনিয়নের পাচঁকোরকদী গ্রামের কৃষক কার্তিক কুমার বলেন, এ বছর ভালো দাম পাওয়ার আশায় জমিতে বারি— ১৪ জাতের সরিষার আবাদ করেছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রণোদনার সার ও বীজ পাওয়ায় সরিষা আবাদে খরচ অনেকটাই কম হয়েছে তার। গত বছর ২ হাজার ৭শটাকা মণ দরে শুকনা সরিষা বিক্রি করেছিলেন। উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ব্যাসদী গ্রামের বিশিষ্ট চাষী রাসেল আহমদের বলেন গত বছর আকের সাথে সাথী ফসল হিসেবে করেছিলাম ফলন ভাল হওয়ায় লাভবান হয়েছিলাম। এ বছর একক ভাবে প্রায় ১ একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি । ভালই হয়েছে । লাভের আশা করছি।

মধুখালী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলভির রহমান বলেন, স্বল্পসময়ে উৎপাদনশীল রবিশষ্য হলেও কয়েক বছর আগে বাজারে তেমন চাহিদা ও দাম না থাকায় অনেক চাষীই সরিষা আবাদ বন্ধ করে দেন। তবে বর্তমানে বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরিষার চাহিদা বেড়েছে। তাই সরিষা আবাদে সব পর্যায়ের কৃষকের আগ্রহ বেড়েছে। চাষীদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনার মাধ্যমে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেওয়াা হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বিগত বছরের তুলনায় আবাদ ভালো হয়েছে।

১৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS