শনিবার- ১লা জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জি এম কাদের ও চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

জি এম কাদের ও চুন্নুর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ চেয়ে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতারা। জাতীয় পার্টিকে পারিবারিক দল বানানো, মনোনয়ন বাণিজ্য, তৃণমূলকে উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া, আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার নির্বাচনে নিজস্ব লোকদের মনোনয়ন দেওয়াসহ নানা অভিযোগে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের অপসারণ দাবি করেছে নেতারা। গতকাল দুপুরে দলের বনানী কার্যালয়ের সামনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপা।

এ সময় পার্টির কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, সুনীল শুভ রায়, লিয়াকত হোসেন খোকা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, জহিরুল ইসলাম জহির, জহিরুল আলম রুবেল, এমরান হোসেন মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আমানত হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, ফখরুল আহসান শাহাজাদা, বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন আশরাফ, সাইফুল ইসলাম, সৈয়দ ইফতেখার আহসান, মিজানুর রহমান মিরুসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধরা অফিসে ঢুকতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। লিয়াকত হোসেন খোকা বিক্ষুব্ধদের শান্ত করেন।

সাহিদুর রহমান টেপা লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে মনোনয়ন প্রশ্নে মতানৈক্য সৃষ্টি হওয়ায় প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ নির্বাচন থেকে বিরত ছিলেন। কিন্তু তিনি পার্টিকে বিভক্ত করতে দেননি। অথচ পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের গত চার বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা এবং অদক্ষতার কারণে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। পার্টির প্রার্থীদের সঙ্গে চরম বিশ্বাস ঘাতকতা, প্রতারণা এবং তাদের এক প্রকার পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য পার্টির ২ শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন।

সরকারের কাছে ধরনা দিয়ে ২৬টি আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, জাতীয় পার্টিকে এতটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির দায় নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু বোধোদয় হয়নি। তিনি বলেন, পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দেখতে চান। এ অবস্থায় জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করা এবং পার্টির ঐক্য বজায় রাখার জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদের এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর তারা তাদের পদ থেকে অপসারিত বলে বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে গঠনতান্ত্রিকভাবে পার্টিতে একজন ভারপ্রাপ্ত/নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নিয়োগ করে জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে পার্টির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে।

এখন একান্ত প্রয়োজনে কিছু রদবদল ব্যতীত পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য পদে অধিষ্ঠিত নেতৃবৃন্দ স্বপদে বহাল থাকবেন। টেপা বলেন, নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের মনোনয়ন দানে অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ কেলেঙ্কারি এবং ফল বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। জাতীয় পার্টির যেসব প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছেন, আগামীতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। এই মুহূর্তে পার্টিকে সুসংগঠিত করে একটি জাতীয় সম্মেলন করাই হবে আমাদের প্রধান কাজ। পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ‘চেয়ারম্যান আর মহাসচিব এককভাবে দল পরিচালনা করছেন। তারা কর্মীবান্ধব নেতা নন। তাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি বিকশিত হতে পারে না।’ দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, তাদের অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে জাতীয় পার্টি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দলের নেতৃত্ব দেওয়ার অধিকার তাদের নেই।

৪৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares