মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আদালতে নির্দেশকে অমান্য করে ঘুমধুমে চলছে ইটভাটা 

আদালতে নির্দেশকে অমান্য করে ঘুমধুমে চলছে ইটভাটা 

কায়সার হামিদ মানিক,কক্সবাজার। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ঘুমধুমের গহীন অরণ্যে অবৈধ ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ইট ভাটি। বনভূমির পাহাড় কাটা মাটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। জ্বালানী হিসেবে যোগান দেয়া হচ্ছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মূল্যবান গাছগাছালি। ইট ভাটির আশে পাশে নির্বিচারে বন জঙ্গল সাবাড়, পাহাড় কর্তনসহ নানাবিদ তান্ডবে বনভূমি লন্ডভন্ড হয়ে গেলেও দেখার যেন কেউ নেই।
এদিকে ইট ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় আক্রান্ত এলাকাবাসী প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দেয়ার পরও বহাল তবিয়তে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ইট তৈরি কাজ। প্রভাবশালী চক্রের কাছে বনবিভাগের দুর্নীতি পরায়ন কতিপয় কর্মকর্তা ম্যানেজ হওয়ায় অবৈধ ইটভাটি কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। ঘুমধুম ইউনিয়নের রেজু আমতলী, রেজু মগ পাড়া, আজু খাইয়া ও চাইল্লাতলী এলাকার স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, সর্বপ্রথম পূর্ব দিকের গহিন অরণ্যে ইটভাটিটি স্থাপন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা পাহাড় কেটে ইট তৈরির মাটি মজুদ করছে। বনাঞ্চলের গাছ কেটে শত শত মেট্টিকটন লাকড়ি মজুদ করা হয়েছে। পরে ইট ভাটি সংশ্লিষ্টরা বলেন, আজু খাইয়ার মেম্বার আবুল কালাম, সাজু বড়ুয়া, রশিদ আহাম্মদ, ফরিদ আলম, হায়দারের ইট ভাটায় ধাউ ধাউ করে জলছে বনজসম্পদ।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক জানান, সংশোধিত আইনে সংযোজিত পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ ও উন্নয়নের স্বার্থে আধূনিক প্রযুক্তির ইট ভাটা অর্থাৎ জিগজাগ কিলন, টানেল কিলন বা অনুরূপ উন্নততর প্রযুক্তিতে ইট ভাটি স্থাপন করতে হবে। কৃষি জমি বা পাহাড় বা ঢিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ইট তৈরি করার জন্য মজা পুকুর, খালবিল, নদনদী, চরাঞ্চল বা পাহাড় কেটে মাটি সংগ্রহ করা যাবে না। মাটির ব্যবহার কমানোর জন্য কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ফাঁপা ইট তৈরি করতে হবে। নির্ধারিত মান মাত্রায় কয়লা ব্যবহার করতে হবে। যেসব জায়গায় ইটভাটি স্থাপন করা যাবে না- সেগুলো হচ্ছে উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য বাগান বা কৃষি জমি, পরিবেশগত সঙ্কটাপন্ন এলাকা, নিষিদ্ধ এলাকার সীমা রেখা থেকে নূন্যতম ১ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে। পার্বত্য জেলায় পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির নির্ধারিত স্থানছাড়া অন্যকোন স্থানে ইট ভাটা তৈরি সম্পূর্ণ নিষেধ রয়েছে। তিনি জানান, বান্দরবানের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২৫টি ইট ভাটি রয়েছে। যার একটিও নীতিমালায় পড়ে না। ঐসব ইট ভাটির কোন লাইসেন্সও নেই।
রেঞ্জ কমকতা আনোয়ার হোসেন খান জানান, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইটভাটিগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। একই ভাবে বিট কমকতা বলেন ঘুমধুমে ৬/৭টি ইটভাটা অবৈধ ভাবে গড়ে উঠলেও তারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইট ভাটিগুলো চালিয়ে যাচ্ছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ উক্ত অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদের ব্যাপারে প্রসাশনের সহযোগীতা কামনা করে বলেন, ঘুমধুম ইউনিয়নে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা এসব ইটভাটার কারণে পাহাড় কাটা, বন সম্পদ ধ্বংসের তান্ডবলীলা চলছে।
৯ নভেম্বর  নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে  সোনাইছড়ি ইউনিয়নের এ এস, বি, ইট ভাটা, এ এফ  ডি ইট ভাটা  ও ঘুমধুম ইউনিয়নের আমতলী  বি এস বি  ইটভাটা ও সাহাব উদ্দিনের ইট ভাটায়  অভিযান পরিচালনা করে ৪ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
অপর দিকে পাহাড় কাটা ও নিষিদ্ধ এলাকায় ইট ভাটা গড়ে তোলার কারণে এ এফ ডি ইট ভাটা এবং সাহাব উদ্দিন ইট ভাটার বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে  নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
২৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS