শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কুড়িগ্রামে হরতাল-অবরোধে সংসার চলে না কলা বিক্রেতা মেজাম্মেলের

কুড়িগ্রামে হরতাল-অবরোধে সংসার চলে না কলা বিক্রেতা মেজাম্মেলের

সাইয়েদ বাবু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : সত্তোরোর্ধ মোজাম্মেল হক,৯ বছর থেকে করেন কলার ব্যবসা। হরতাল-অবরোধের কারণে ২৫ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে হরতালের থাবায় ব্যবসায় লালবাতি জ্বলছে মোজাম্মল হকের। ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অসহনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার। তার উপর হরতাল-অবরোধের খড়গ। সব মিলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ও হতাশা বিরাজ করছে ক্ষুদ্র ব্যবসাসায়ী ও খেটে খাওয়া এসব মানুষদের।

জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে কলার ব্যবসা করেন মোজাম্মেল হক। পার্শ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাটের বড়বাড়ি এবং কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি হাট থেকে সপ্তাহে দুদিন কলা নিয়ে আসেন তিনি। হাট থেকে আনা কলা শহরের ঘোষপাড়া সেবা ক্লিনিক মোড়ে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি করার জন্য বসে থাকেন তিনি। সারাদিন ৮০-১০০ হালি কলা বিক্রি করেন। এতে হালি প্রতি ২-১ টাকা লাভ হয় তার। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ সর্বোচ্চ ২০০ টাকা আয় করেন। সম্প্রতি করোনার সময় ব্যবসা ভালো হলেও বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং হরতাল অবরোধের কারণে শহরে মানুষজন কম আসায় ব্যবসায় লাল বাতি জ্বলেছে মোজাম্মেল হকের। হাট থেকে কলা কিনে আনলেও তা পুরোপুরি বিক্রি না হওয়ায় পঁচে যায় প্রতিদিন। এতে লোকসান গুনতে হয়। ইতোমধ্যে ব্যবসায় মন্দাভাব-হরতাল ও অবরোধে আড়তদারের কাছে ২৫ হাজার টাকা ঋণগ্রস্ত হয়েছেন তিনি। হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি বন্ধ না হলে সহসাই কাটছে না মোজাম্মেলের মত ক্ষুদ্র ব্যবসাসায়ীদের জীবন জীবিকার পথ, তাদের দু’চোখে এখন শুধুই দুঃস্বপ্ন।

ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাফর আহমেদ বলেন, মোজাম্মেল ভাইয়ের বয়স হলেও তিনি খুব পরিশ্রমী। বৃদ্ধ বয়সে কোন রকমে কলা বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। কিন্তু হরতাল-অবরোধে লোকটা বিপদে পড়েছে। তার ব্যবসা প্রায় বন্ধের উপক্রম। সরকারের উচিত এসব অসহায় মানুষকে সহযোগিতা দেয়া।

শহরের হাটিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা বাবু মিয়া বলেন, ‘হরতাল-অবরোধে ব্যবসাসায়ীদের অবস্থা শোচনীয়। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ব্যবসাসায়ীরা মারাত্মক সঙ্কটে পড়েছে। কবে যে দেশের অচলাবস্থার অবসান হবে আল্লাই ভালো জানে।

কলা ব্যবসাসায়ী সত্তোরোর্ধ মোজাম্মেল হক বলেন, আমার বয়স এখন ৭০ বছর। অন্য কাজও করতে পারি না, এই বয়সে কেউ কামলাও (দিনমজুর)নেয়না। কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেম্বারকে ৮-১০ বার ধর্না দিয়ে বলেছি বয়স্ক ভাতার কার্ডের দেয়ার জন্য। শুধু প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু কার্ড দেয় না। হরতাল-অবরোধে জীবনটা শেষ। কবে বন্ধ হবে হরতাল-অবরোধ? আমাদের সাহায্য করার কেউ নেই। বউ-বাচ্চাকে নিয়ে বিপদে আছি বাবা।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম শহর সমাজেসবা কর্মকর্তা মো. আবু সুফিয়ান বলন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন করার সুযোগ নেই। তবে তারা আগ্রহী হলে সরেজমিনে তদন্ত করে ক্সুদ্র ব্যবসাসায়ী হিসেবে প্রতীয়মান হলে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

৭৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares