মঙ্গলবার- ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চট্টগ্রাম-১১ আসনে নৌকার প্রতিকের প্রার্থীর বিরোদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম ঘোষনা, এমপি বললেন! 

চট্টগ্রাম-১১ আসনে নৌকার প্রতিকের প্রার্থীর বিরোদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর নাম ঘোষনা, এমপি বললেন! 

এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থী এম এ লতিফ এমপি’র বিরোদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে (বিদ্রোহী প্রার্থী) ৩৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের নাম ঘোষনা করে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এমএ লতিফকে ভোট যুদ্ধে পরাজিত করতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে একাট্টা হয়েছেন মহানগর ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ। সংসদীয় এই আসনের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনকে প্রকাশ্য সমর্থন জানাতে একইমঞ্চে সমবেত হয়েছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরবৃন্দ।

২৭ নভেম্বর’২৩ ইং সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর বন্দর এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে সবাইকে চমকে দিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত একাধিক ওয়ার্ড কাউন্সিলরও। এতে করে অনেকটা প্রতীয়মান হয় যে, সাংসদ এম এ লতিফের বিরোদ্ধে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে একাত্ব হয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন ও আ জ ম নাছির উভয় বলয়ের সমর্থকরা। এ মত বিনিময় সভার মাধ্যমে চট্টগ্রাম-১১ সংসদীয় আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এমএ লতিফকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।

মতবিনিময় সভায় সংসদীয় আসনটির নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ, মহিলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ ও ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ সংসদ এমএ লতিফের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে মতবিনিময় সভায় বলেন, আমরা ১১ আসনে ১০টি ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগ পরিবার আজ জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমরা এমএ লতিফের একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবো।

সভায় এমএ লতিফের বিরুদ্ধে জামায়াত-বিএনপির সাথে যোগসাজশের অভিযোগ তুলে ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ বলেন, চট্টগ্রামের ১০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল করে ফেলা হয়েছে। সরকার ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকলেও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ সাংসদ লতিফের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ সময় মঞ্চে উঠে সাবেক নগর যুবলীগ নেতা ও বর্তমানে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমনকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে পূর্ণ সমর্থন জানান চট্টগ্রাম-১১ আসনের অন্তর্গত প্রায় সবকটি ওয়ার্ডের বর্তমান ও সাবেক কাউন্সিলরবৃন্দ।

তারা হলেন মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হাজী সফর আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ নঈুম উদ্দিন চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক হাসান মোহাম্মদ সমশের, সদস্য কামরুল হাসান ভুলু, সদস্য রোটারিয়ান মোহাম্মদ ইলিয়াছ, ইপিজেড থানা আ.লীগের সাবেক আহ্বায়ক হাজী হারুনর রশীদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু তাহের, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র আফরুজা কামাল, সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আবদুল কাদের, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের মা ও শিশু বিষয়কসম্পাদক শারমিন সুলতানা ফারুক, ইপিজেড থানা আ.লীগের সভাপতি হাজী সুলতান নাছির উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম আফজাল, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, কাউন্সিলর ছালেহ আহমদ চৌধুরী, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চৌধুরী।

এছাড়া সাবেক কাউন্সিলর হাজী মো. আসলাম, ৩৮  ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হাসান মুনম্বররাদ, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. হাসান, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জানে আলম, কাউন্সিলর আবদুল মান্নান, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহবায়ক মো. এসকান্দার, কাউন্সিলর মো. মোশের্দ, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল আলম চৌধুরী, আ.লীগ নেতা নুরুল নবী লিটন, আলী বক্স, কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ জুবায়ের, আ.লীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাহদুর, সেলিম রেজা আজিজ মোল্লা, কাউন্সিলর জাফরুল হায়দার সবুজসহ নেতৃবৃন্দ সুমনকে সমর্থন জানান।

এদিকে জিয়াউল হক সুমনের সমর্থনে আয়োজিত মত বিনিময় সভা সম্পর্কে এম এ লতিফ জানিয়েছেন, ভুল বুঝার অবকাশ নেই, এটি আওয়ামীলীগের মত বিনিময় সভা ছিলনা। নগর আওয়ামীলীগের সাধারন  উপস্থিত থাকলেও নগর সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ঐ মিটিংয়ে যাননি। সাধারন সম্পাদক মিটিংয়ের ব্যাপারে দলীয় কোন চিঠি ইস্যু করেননি, পিএসকে দিয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের মিটিং বলে ফোন করে সবাইকে ডেকে নিয়েছেন। তিনি মাঠের রাজনীতিতে ব্যস্ত সময় কাটান উল্লেখ করে আরো বলেন, দলীয় অফিসে বসে চা-নাস্তা খেয়ে বাসায় চলে যাওয়ার নাম রাজনীতি নয়। তিনি সবসময় মাঠের কর্মিদের সুখে দুঃখে মাঠে থাকেন দাবী করে আরো বলেন, অবৈধ কাজের সাথে জড়িত, যারা অবৈধ ও অসামাজিক কার্যক্রম করে এমপি’র কাঁছে জায়গা পায়নি, তাদেরকে দিয়েই সভায় বক্তব্য দেওয়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন অনৈতিক কাজে দলীয় কিছু লোক তাঁর প্রতি অসন্তোষ্ঠ বলেও জানান তিনি।

১৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS