শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজারহাটে তিস্তা নদীতে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রির উৎসব চলছে

রাজারহাটে তিস্তা নদীতে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রির উৎসব চলছে

রাশেদুল ইসলাম,রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি \ রাজারহাট উপজেলার ডাংরারহাট নামক স্থানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছে বালু খেকোরা। সরকারি বালু মহাল না থাকায় প্রায়ই নদীর যত্রতত্র থেকে অবৈধ পন্থায় বালু সংগ্রহ চলছে। ফলে সরকার লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে,বাড়ছে নদী ভাঙনের ঝুঁকি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,২০২২ সনে উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি ও চতুরা মৌজায় তিস্তা নদীতে প্রায় ১১ একর জমির উপর “কালিরহাট বালু মহাল’’নামে একটি বালু মহাল অনুমোদন পায়। পরে গত বছরের ২১নভেম্বর সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম স্বাক্ষরীত পত্রে বালু মহাল ইজারা দরপত্রে অংশ গ্রহণের নিমিত্তে তালিকা ভূক্তির জন্য আহবান জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে ইজারা গ্রহনে ইচ্ছুক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর লাইসেন্সের জন্য পে-অর্ডার/ব্যাংক ড্রাফট সহ প্রায় দেড়’শ ঠিকাদার আবেদন করেন। তবে এখন পর্যন্ত লাইসেন্স প্রদান ও ইজারা কার্যক্রম শেষ হয়নি।

এদিকে সরকারি বালু মহাল না থাকলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন ও বেচাকেনা। বালু খেকোরা বিভিন্ন সময় নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে বালু বিক্রি অব্যাহত রেখেছে।

বর্তমানে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট বাজার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬নম্বর ক্রস বাঁধের সন্নিকটে থেকে উত্তোলিত স্তুপকৃত বালু প্রতিনিয়ত ট্রাক্টর দিয়ে বিক্রি করছে এলাকার বালু খেকো হিসেবে পরিচিত আব্দুল সালাম। এবিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলেও অবৈধ পন্থায় বালু বিক্রি বন্ধ হয়নি।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন,পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার আব্দুস সালাম বর্ষা মৌসুমে জিও ব্যাগ ভর্তির কথা বলে ডাংরারহাট বাজারের সন্নিকটে আনুমানিক ৪/৫ লক্ষ সেফটি বালু স্তুপ করে রাখেন। পরে নতুন করে বালু তুলে জিও ব্যাগ ভরলেও এখন স্তুপকৃত বালু ট্রাক্টরে করে অবাধে বিক্রি করে যাচ্ছেন।

ডাংরারহাট বাজারের মাহবুবার রহমান অভিযোগ করেন,অপরিকল্পিত উপায়ে নদীতে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে প্রতিবছর বসত ভিটে ও ফসলি জমি হারিয়ে বিপুল পরিমান মানুষ নিস্ব হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রায়হানুল কবির বলেন,৯০০ থেকে ১০০০হাজার টাকা দরে প্রতি ট্রাক্টর বালু বিক্রি করছেন বালু খেকো আব্দুস সালাম ও সহ তার সহযোগীরা। অভিযোগ হওয়ার পর থেকে দিনে বালু বিক্রি বন্ধ হলেও রাতে এবং সকালে তিনি অবাধে বালু বিক্রি করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুস সালাম অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,জিও ব্যাগ ভর্তির কাজ শেষ হওয়ার পর অবশিষ্ঠ বালু বিক্রি শুরু করেছিলাম,তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড নিষেধ করায় এখন বালু বিক্রি বন্ধ রেখেছি।

উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) এবিএম আরিফুল হক বলেন,এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিষয় ওনাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এবিষয়ে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে বলেন,এ্যাসিল্যান্ডকে মৌখিক ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি। এখন চিঠি দিয়ে ইউএনও,এ্যাসিল্যান্ড এবং ওসি’কে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলবো। #

১৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS