শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো জোঁয়ার-ভাটার স্কুল

চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো জোঁয়ার-ভাটার স্কুল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরবোরহান ইউনিয়নের দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেড়িবাঁধ না থাকায় জোঁয়ারে ডুবে আর ভাঁটায় জেগে উঠে। ফলে বিদ্যালটিতে নিয়মিত পাঠদান করা সম্ভব হয় না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পানি আর কাঁদার মধ্যে দিয়েই স্কুলে আসা-যাওয়া করে।

জানা যায়, দশমিনা উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নের চারদিকে নদী বেষ্টিত। সামান্য জোয়ারের পানি উঠলেই ২-৩ ফুট পানি উঠে যায়। বেড়িবাঁধ না থাকায় ১৩৩ নং চরবোরহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরশাহজালাল আর্দশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘ বছর ধরে বর্ষার মৌসুমে জোঁয়ারে সময় জোঁয়ারের পানিতে দুই-তিন ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। আবার ভাঁটার সময় পানি নেমে যায়। বিশেষ করে অমাবশ্যা এবং পুর্নিমার জোঁয়ারের পানির চাপ বেশি থাকে, তখন বিদ্যালয় দুটি ও ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের সিড়ি পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। এতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের এবং এলাকার ইউনিয়ন পরিষদে আসা সেবাগ্রহীতাগনকে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দুই থেকে তিন ফুট পানির মধ্যে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আসা-যওয়া করতে প্রায় সময়ই স্কুল ড্রেস ভিজে যায়। অনেক সময় ভেজা কাপড়েই তাদের ক্লাস করতে হয়। ক্লাস রুমের মধ্যে পানি জমে থাকার কারনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বেঞ্চের ওপরে পা রেখে লেখাপড়া করতে হয়।

চর-শাহজালাল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল হাসেম বলেন, সকালে বিদ্যালয়ে এসে তিনি দেখতে পান তেঁতুলিয়া নদীর জোঁয়ারের পানিতে বিদ্যালয়টি ২-৩ ফুট পানি উঠেছে। শ্রেনিকক্ষে পানি ঢুকে চেয়ার টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাসতেছে।

অপরদিকে, ১৩৩নম্বর চরবোরহান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোহাগ হোসেন বলেন, জোঁয়ারের পানিতে ডুবে থাকায় বিদ্যালয়ে আসা শতাধিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদেরকে বিপাকে পড়তে হয়েছে। ক্লাসরুমে পানির মধ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হয়। এই ইউনিয়নে বেরিবাঁধ না থাকায় বছরে প্রায় সময়ই প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও বন্যা সহ স্বাভাবিক পানি উঠলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যায় পড়তে হয়। বেরিবাঁধ হলে এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পাওয়া যাবে।

চরবোরহান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজির আহম্মেদ সরদার এই ব্যাপারে বলেন, চরবোরহান ইউনিয়নে বেরিবাঁধ না থাকায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে তেঁতুলিয়া নদীর জোঁয়ারের পানিতে চরাঞ্চল প্লাবিত হয় পূর্নিমার জোঁয়ারের কারনে তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর পানি বাড়ছে। সেই কারনে বিদ্যালয়সহ চরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা তিন থেকে চার ফুট পানিতে ডুবে যায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে থাকার কারনে আমাদের কোমল মতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। এছাড়া চরের কৃষকরা অপূরনীয় ক্ষতির মধ্যে পড়ে য়ায়।

এবিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হিটলারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের অনেক ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হয়। জোয়ার ও ভাটার কারনে পানিতে শ্রেণীকক্ষ প্লাবিত হয়। এলাকায় বেড়িবাঁধ দেয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধ হলেই সমস্যার সমাধান হবে।

এবিষয়ে পটুয়াখালী-৩ (দশমিনা-গলাচিপা) আসনের সংসদ সদস্য এসএম শাহজাদা সাজু এমপি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাকা ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। আর চরবোরহান ইউনিয়নের বেবিবাঁধের কাজ অতি জরুরী ভিত্তিতে শুরু করা হবে।#

১৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS