শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নাটোরে পুরাতন ইট দিয়েই চলে রাস্তা সংস্কারে

নাটোরে পুরাতন ইট দিয়েই চলে রাস্তা সংস্কারে

নিউজ ডেক্স: নাটোর জেলার গুরুদাসপুর পৌরসভার চাঁচকৈড় খলিফা পাড়া থেকে বিলদহর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে ১২দিন আগে। তবে খানাখন্দ রাস্তার সেই পুরাতন ইট দিয়েই চলে রাস্তা সংস্কারের কাজ।

গর্ত আর উঁচুনীচু জায়গাগুলোও ঠিক করা হয়নি। পিচগুলোও যেন সুচের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে। ঠিকমত রোলারটাও করা হয়নি। রাস্তার বেশির ভাগ উঠে যাচ্ছে পাথরের দেয়া ঢালাই। রাস্তায় চলাচলকারিরা পরছেন বিপাকে।

সওজের ৮১লাখ টাকার রাস্তাটি এখন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। রাস্তার পাথরের টুকরোগুলো সাথে নেই পিচের সম্পর্ক। হাত দিতেই উঠে যাচ্ছে পাথরের কুচি এভাবেই অভিযোগগুলো করছেন রাস্তার দুই ধারের বসবাসরত জনসাধারণ ও যান চালকেরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে নির্মাণের পরই রাস্তাটির পিচ উঠে যাচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের ১০দিনের মধ্যেই এমন লাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও রাস্তাটি ১২ফিট প্রসস্থ থাকার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও ৮ বা ১০ ফিট করা হয়েছে।

সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয়রা দুঃখ প্রকাশ করছেন। এ সময় তারা হাত দিয়ে পিচ উঠে যাওয়ার দৃশ্য দেখান। রাস্তাটি পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তাঁরা।

বেশ কয়েকজন স্থানীয় জানান, রাস্তা সংস্কার করার হবে শুনে খুব খুশি হয়েছিলাম। ঠিকাদার মেশিন, যন্ত্রপাতি নিয়ে আসলো সেটাও দেখলাম। কিন্তু ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে কাজটি শেষ হয়। রাস্তাাটিতে নিম্নমানের ইট, বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

অপরিষ্কার রাস্তায় পিচ দেওয়া এবং সেগুলো ভালোভাবে ডেজারআপ না করায় সেগুলো সহজেই উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়েই তুলে ফেলা যাচ্ছে কুচি পাথরগুলো।

এছাড়াও দুর্গাপুর র‌্যাবারড্যাম এলাকার লিটন মাষ্টার, জনপ্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম জানান, রাস্তার কাজটি অত্যান্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হয়েছে। যার কারনে পিচ দেওয়ার দশ দিনের মাথায় উঠে যাচ্ছে। এমন রাস্তা করার চেয়ে না করাই ভালো।

ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনের চাকার সঙ্গে পিচ উঠে যাচ্ছে। রাস্তার মাঝখানে উঁচুনীচু অসংখ্য গর্ত অসমতল রয়েছে। দুই ধারেও ঠিকমতো কাজ করা হয়নি। এমনকি বৃষ্টি শুরু হলে ১০দিনও ওই রাস্তা টিকবে না।

অটোভ্যান চালক রিপন বলেন, এই রাস্তায় আমাদের নিয়মিত চলাচল করতে হয়। কিন্তু এই নিম্নমানের সংস্কারের ফলে প্রতিনিয়ত দুঘটনায় শিকার হচ্ছি। এমন সংস্কার কখনো দেখেননি।

নাটোর জেলা সড়ক ও জনপথ(সওজ) অফিস সূত্রে জানা যায়, গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় খলিফাপাড়া বটতলা থেকে সাবগাড়ি আয়নার মায়ের ডোয়ার পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার করা হয়।

৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি পান নওগাঁর আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড। পরবর্তী সময়ে আমিনুল হকের কাছ থেকে কাজটি কিনে নেন নাটোরের জেমস নামের একজন ঠিকাদার। তিনিই কাজটি দেখাশোনা করেছেন।

তবে নাটোরের ঠিকাদার জেমস মুঠোফোনে চড়াও হয়ে বলেন, আপনারা কি প্রকৌশলী, আপনারা কাজের কি বোঝেন? আমি কাজ করেছি সেটা কর্তৃপক্ষ দেখবেন। আপনারা দেখার কেউ না।

নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) কামরুল হাসান সরকার বলেন, রাস্তার পিচ জমাট বাঁধতে একটু সময় লাগে। তবে অভিযোগ ওঠায় রাস্তাটি দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৪৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares