শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৬ হাজার টাকায় আপসের পর মামলা

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৬ হাজার টাকায় আপসের পর মামলা

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : অপরাধীকে বাঁচাতে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এস আই) মোঃ আনোয়ার হোসেন আপ্রাণ চেষ্টা। পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শ্রবণ প্রতিবন্ধী (২৮) এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের সাত দিন পর মামলা নিয়েছে থানা পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের ২ নং ওয়াডের পুঁইবিল গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। অভিযুক্ত ঐ গ্রামের মৃত তোফাজ্জল প্রামাণিকের ছেলে শামছুল হক(৫২)।

জানা যায়, গ্রামের হতদরিদ্র এক বাবার মেয়ে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও দুই সন্তানের জননী কয়েক বছর ধরে স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করে। তার পিতা-মাতা বৃদ্ধ হওয়ায় তাদের কাজে সহায়তা করার জন্য মাঠে ছাগল চড়ানোসহ গরুর ঘাস কাটার কাজ করেন তিনি। প্রতিবদ্ধী ছাগল নিয়ে মাঠে যাওয়া আসার বিভিন্ন সময়ে তাকে শামছুল উত্যক্ত করতে থাকেন। বিষয়টি প্রতিবন্ধী নারী তার পরিবারের লোকজনসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে জানালে শামছুল ওই নারীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। গত সপ্তাহ খানেক আগে ওই নারী ছাগল নিয়ে মাঠে গেলে শামছুল সুযোগ বুঝে ঘাসের জমির আড়ালে তাকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণে চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে শামছুল পালিয়ে যায়। পরে বাড়িতে এসে ওই প্রতিবন্ধী নারী তার মাকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার প্রধানদের কাছে জানালে সালিশ বৈঠকে শামছুলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। কিন্তু বিষয়টি ভুক্তভোগী পরিবার না মেনে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কয়েক দিন পরে অভিযোগের তদন্তকারী ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এস আই) মোঃ আনোয়ার হোসেন ভুক্তভোগী ও তার মাকে থানায় নিয়ে আসে । কৌশলে ভুক্তভোগী ও তার মাকে শরৎনগর বাজার স্থানীয় আ.লীগ নেতা জিয়ার দোকানে পাঠিয়ে দেয়। এরপর রাত ৮ টার দিকে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এস আই) মোঃ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে শুরু হয় সালিশ। সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান, গ্রামপ্রধান সাহেব আলী, উত্তম প্রামানিক, কাওসার,জাকির হোসেন। সালিশের ভুক্তভোগীকে জোর করে ৬ হাজার টাকার বিনিময়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে । এ সময় ভুক্তভোগী টাকা নিতে ও স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুলিশসহ উপস্থিত সকলে ভুক্তভোগীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। পরে স্বাক্ষর নিয়ে ভুক্তভোগীর হাতে ৬ হাজার টাকা ধরিয়ে দেন জিয়া।

ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত শামছুল বলেন, প্রতিবেশী সম্পর্কে ওই প্রতিবন্ধী নারী তার নাতনী হয় তাই তার সাথে একটু ইয়ারকি করা হয়েছে মর্মে স্বীকার করেছেন। ভাঙ্গুড়া থানার এস আই আনোয়ার হোসেন সালিশের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী নিজেই বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-৫। তবে আমি কয়এক দিন ছুটিতে ছিলাম তাই সালিশের বিষয় আমার জানা নেই।

৬০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares