বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
কলমাকান্দায় পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

কলমাকান্দায় পাহাড়ি গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট

কলমাকান্দা প্রতিনিধি, নেত্রকোনা : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার পাহাড়ি গ্রামগুলোতে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিটি ঘরে এখন বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য হাহাকার চলছে। এ অবস্থায় পাহাড়ি ছড়ার ময়লাযুক্ত পানিই এখন তাদের একমাত্র ভরসা। তাই বাধ্য হয়ে ছড়া থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন তারা। তাও আবার অনেককে এক থেকে দেড় কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে এই পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে লেংগুরা, খারনৈ ও রংছাতি ইউনিয়ন মূলত পাহাড়ি এলাকা। এসব এলাকায় প্রধানত গারো ও হাজং সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। গ্রামের বাসিন্দারা সাধারণত ছড়া, খাল ও কুয়ার পানির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলমান তীব্র দাবদাহে সেগুলোও শুকিয়ে যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন প্রায় ৩০টি গ্রামে অন্তত ১০ হাজার মানুষ। কিছু গ্রামে পানির অভাবে দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে চন্দ্রডিঙ্গা, পাচগাঁও, সন্ন্যাসীপাড়া, জাকিরপাড়া, মনগড়া, বেতগড়া, চেংগ্নী, টেংরা টিলাপাড়া, বাঙ চাকুয়া, বাতানগ্রী,
কনকোণা,ধলধলাসহ আরো বেশ কয়েকটি গ্রামে খাবার পানির জন্য হাহাকারের কথা জানা যায়। নারীরা কলসি নিয়ে ছড়া থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। গ্রামের মানুষ ছড়ায় গিয়ে গোসল করছেন।

বেতগড়া গ্রামের কান্ত হাজংয়ের স্ত্রী অঞ্জনা হাজং বলেন, তাদের গ্রামে কোন গভীর নলকূপ নেই। কিছুদিন পূর্বে আব্দুর রহিম মেমোরিয়াল স্ট্রাস্টের
উদ্যোগে উজ্জ্বল হাজংয়ের বাড়িতে একটি নলকূপ বসান। পানির ট্যাংকিসহ নিচ পাকা করে দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই নলকূপ দিয়ে পানি আসেনি। উজ্জ্বল হাজং বলেন, অযথা আমার বাড়ির জায়গাটি বদ্ধ করে রেখেছে এই পানির  ট্যাংকি।

ওই গ্রামের সলচনা হাজং (২৬) নামের এক গৃনীনি বলেন, আমাদের গ্রামে কোন নলকূপ না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রতিদিন এক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পাহাড়ী ছড়া থেকে সকাল ও বিকেলে পানি সংগ্রহ করতে হয়। এ দিয়েই রান্নাবান্না, খাবারসহসব চলে। পানির জন্য খুবই কষ্ট করতে হচ্ছে।খারনৈ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওবায়দুল হক বলেন, পাহাড়ের গ্রামগুলোতে খাবার পানির সংকট আছে। পানির জন্য দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা।উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। এইসব গ্রামগুলোতে পাথর কেটে গভীর নলকূপ বসানো, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সরাসরি উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলেই পানির সমস্যা নিরসন করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লেংগুরা ও রংছাতি ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় বেশ কিছু গভীর কূপ সরকারিভাবে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় পাথরের জন্য নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। তাছাড়া বেশ কিছু রিংওয়েল বসানোর কাজ চলছে। অন্য এলাকাগুলোতেও তা করা হবে।

৪৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares