মঙ্গলবার- ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজশাহী পদ্মায় শুধু কারেন্ট জাল

রাজশাহী পদ্মায় শুধু কারেন্ট জাল

ডেক্স নিউজ: রাজশাহী পদ্মায় কারেন্ট জালে ছেয়ে গেছে। পদ্মার পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা শত শত নৌকায় দেখা যায় অবৈধ কারেন্ট জাল। চারঘাট উপজেলার সাহাপুর, ইউসুফপুর, মুক্তারপুর এবং বাঘা উপজেলার প্রতিটি নৌকাতে শুধু কারেন্ট জাল আর কারেন্ট জাল। মানুষ রুপি বিবেকহীন এই জেলেদের কেউ নিষেধ করার নেই। আর কেই বা তাদের নিষেধ করবো। তাদের পরিচালনা করে গুটি কয়েক নেতা। নাম প্রকাশে এক জেলে বলেন, ভাই আমারা প্রতি মাসে দু’শত টাকা করে দিই তবেই মাছ ধরতে পারি অন্যথায় জাল ধরে নিয়ে যায় প্রশাসন।

স্থানীয় সুশীল সমাজের বিবেকবাণ মুরুব্বিগন বলেন, কারেন জালে জড়িয়ে থাকছে ৫০ গ্রাম ১০০ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিস। এত ছোট মাছতো আর খাওয়া যায় না, তাই বলে জেলেরা আবার ফেলেও দিয়ে আসে না। লক্ষ লক্ষ এই ছোট ইলিসের জাটকা নিধন দেখে বুকের মধ্য মোচর দিয়ে উঠে।

স্থানীয়রা নিউজের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবী জানান, যে বাহিনী দিয়ে নদীর মাছ রক্ষার চেষ্টা করছেন তাদের সহযোগিতায় জেলেরা মাছ ধরছে। পদ্মার মাছ রক্ষা করতে হলে কারেন জালের আমদানী বন্ধ করুন ও নদীতে নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। সেই সাথে নদী রক্ষা বাহিনী কেউ পালিসমেন্ট দিন। কেন তার এলাকায় অবৈধ কারেন্ট জাল। তবেই কারেন জাল বন্ধ হবে। অন্যথায় জাটকা নিধন বা কারেন জাল নিধন নামে বানিজ্য চলবে।

রাজশাহী জুড়ে দেখা যাচ্ছে, কারেন্ট জাল ছাড়া অন্য কোন জালের অস্তিত্য নেই। কোথাও নেতা আবার কোথাও মহাজনের মাধ্যমে মাসিক মাসোহারা দিয়ে প্রশাসন কে ম্যানেজ করেই চলছে রাজশাহীর পদ্মায় অহরহ মাছ ধরা। মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এই দুই মাস জাটকা সুরক্ষা দেওয়া গেলে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী কেন্দ্র চাঁদপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। ওই সময় সমুদ্রের লোনা পানি থেকে ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য নদীর মিঠা পানিতে আসে। এ বছর বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো হাওয়া ও নদীতে পানিপ্রবাহ ছিল বেশি। অনুকূল পরিবেশে বেশি পরিমাণে মা ইলিশ সমুদ্রের লোনা পানি থেকে নদীর মিঠা পানিতে এসেছে ডিম ছাড়ার জন্য।

ইলিশ গবেষক ও দেশের শীর্ষ মৎস্যবিজ্ঞানী ড. আনিছুর রহমান জানান, দুই মাস জাটকা সুরক্ষা দেয়া গেলে আগামী বছর ইলিশের উৎপাদন ছয় লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। এতে দেশে ইলিশের চাহিদা পূরণ করে আরও বেশি রফতানি সম্ভব। নিষেধাজ্ঞাকালে নিবন্ধিত জেলেদেরকে সরকারি খাদ্য সহায়তার চাল দেওয়া হয়।

এবছর রাজশাহীতে দু’তিনজন জেলেকে আটক করেছে প্রশাসন। জব্দ করেছে তাদের ছেড়া ফাঁটা কারেন্ট জাল। ওই সমস্ত জেলেদের সাথে কথা বলে যানা যায়, তারা কোন মাসোহারা দিতে না পারায় তাদের ওপর জুলুম হয়েছে। তবে আবার কাউকে আটক করে টাকার বিনিময়ে ছেড়েও দিয়েছেন।

পদ্মানদীর ইলিশ সহ সকল রেনু রক্ষার্থে সরকারের উচিত নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা এবং কারেন্ট জাল ব্যবহারকারিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহন করা। অন্যথায় মাছে ভাতে বাঙালি কাগজেই থেকে যাবে।

৫৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares