শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ভোলায় কৃষকের মুখে সূর্যমুখী হাসি

ভোলায় কৃষকের মুখে সূর্যমুখী হাসি

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় ফলন ভালো হওয়ায় আর দাম বেশি পাওয়ায় জেলায় কৃষকেরা সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন। এক বছরেই চাষ প্রায় চার গুণ বেড়েছে। প্রণোদনার পাশাপাশি দামও ভালো পাওয়ায় সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার কৃষকদের। অন্যদিকে বীজ ভাঙিয়ে তেল নেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় স্থানীয় ভোক্তারাও সূর্যমুখী তেল কিনছেন। এতে দুপক্ষই দিচ্ছেন খুশির হাসি।

ভোলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী করে তুলতে এ বছর সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি প্রদর্শনী প্লটের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সব মিলিয়ে গতবারের তুলনায় এবার ভোলায় ৭৩২ হেক্টর বেশি জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ হয়েছে। আগের বছর যেখানে ৫৫০ হেক্টরে আবাদ হয়েছে, সেখানে এ বছর হয় ৭৩২ হেক্টরে। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৭ দশমিক ৩ মেট্রিক টন। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ২ মেট্রিক টন। চলতি বছর মোট ফলন চার গুন বেশী হবে বলে আশাবাদী কৃষকদের।

কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ হাসান ওয়ারিসুল এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে চার হাজার টাকা মণ দরে সূর্যমুখীর বীজ বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসাবে মোট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৪০ কোটি ২৩ লাখ ১১ হাজার টাকা। আর সূর্যমুখীর আবাদে কৃষকদের মোট খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তাঁদের লাভ হবে ৩৬ কোটি টাকা। তবে যাঁরা তেল ভাঙিয়ে বিক্রি করেন, তাঁদের লাভ হবে আরও বেশি।

কৃষকেরা জানান, মৌসুমের শুরু দিকে বৃষ্টি হওয়ায় ঠিকমত ফুল বেড়িয়েছে এবং বীজ অনেক পুষ্ট হয়েছে। তাই ফলন আরও বেশি ভালো হয়েছে।

জানা গেছে, কৃষি সম্প্রসারনের মাধ্যমে সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দিয়েছে। উপপরিচালক জানান,সূর্যমুখী তেল মানবদেহের জন্য উপকারী হওয়ায় সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দিয়ে আসছে, যাতে এ ফসলের চাষাবাদ বৃদ্ধি পায়। চলতি বছর ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েক হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সরেজমিনে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর দিঘলদী ইউনিয়নে গেলে কৃষক আঃহক জানান, তিনি এবার কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের সহায়তায় ৬০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর আবাদ করেছেন। এতে তাঁর জমি লগ্নীসহ ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে এক হাজার কেজি ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। তা মেশিনে ভাঙানোর পরে ৪০০ কেজি তেল ও ৫৫০ কেজি খইল পাবেন। সেই সঙ্গে পাবেন কয়েক মণ জ্বালানি। তিনি জানান, দোকানে প্রতি কেজি তেল ২৫০ টাকা ও খইল ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। সব মিলিয়ে দাম াাসে এক লাখ ৩৩ হাজার টাকা। খরচ বাদে তাঁর নিট লাভ হবে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা।

কৃষকেরা বলেন, ভোলায় যদি সূর্যমুখী বীজ ভাঙানোর ব্যবস্থা না থাকত, তাহলে এত লাভ হতো না। বেশি লাভ হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও অনেক কৃষক সূর্যমুখীর আবাদ করবেন। তবে সূর্যমুখীর বীজের দাম বেশি। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা ও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সাহায্য দরকার।

৪৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares