বৃহস্পতিবার- ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
<span class="entry-title-primary">বাচ্চারা একটু মোটা হলে কী হয়</span> <span class="entry-subtitle">বেশিরভাগ মায়ের ভাবনা</span>

বাচ্চারা একটু মোটা হলে কী হয় বেশিরভাগ মায়ের ভাবনা

বাচ্চারা একটু মোটাসেটা হলে কী হয়? বাচ্চাকাচ্চা একটু গলুমলু না হলে কি দেখতে ভাল্লাগে? এখনই তো খাওয়ার সময়, যা খেতে ইচ্ছা তা-ই খাবে। বাচ্চাদের বিষয়ে এরকম বাক্য আমরা হরহামেশাই শুনে থাকি; কিন্তু এই যা ইচ্ছা তাই খাওয়ার পরিণতি কিন্তু সবসময় ভালো হয় না।
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের দেশের ৬৫ শতাংশ মা মনে করেন, শিশুদের স্থূলতা কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা নয়। জামালপুর জেলায় এই জরিপটি করা হলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চিত্রও ভিন্ন কিছু নয়।
কিন্তু আসলেই কি স্থূলতা কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না? এর উত্তর হচ্ছে হ্যাঁ। কারণ ইতোমধ্যে উন্নত বিশে^র বিভিন্ন দেশে শিশুদের ওবেসিটি বা মুটিয়ে যাওয়াকে বিভিন্ন ক্রোনিক ডিজিজ বা দুরারোগ্য রোগের অন্যতম একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

শরীরের উচ্চতার তুলনায় কারও ওজনের সঙ্গে চর্বি জমা হলে তাকে স্থূল বলা হয়। শরীরের মোট ওজনকে (কেজি) তার উচ্চতা (সেন্টিমিটার) দিয়ে ভাগ করে যে মান পাওয়া যায়, তাকে বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স বলে। এটি ২৫-এর বেশি হলে তাকে অতিরিক্ত ওজনের বা (ওভার ওয়েট) হিসেবে গণ্য করা হয়। অতিরিক্ত ওজনের সঙ্গে সঙ্গে যদি তার চর্বি জমা হয়, তখন তাকে বলা হচ্ছে স্থূলকায়। আর স্থূলতা বর্তমানে চিকিৎসকদের কাছে একটি ভয়াবহ বিপদ সঙ্কেত। এর চেয়ে ভয়ঙ্কর যে তথ্য, তা হচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের চেয়ে শিশুদের এই সমস্যায় ভোগার হার বেশি। তাদের শরীরে এর খারাপ প্রভাবও তুলনামূলক বেশি।
আইসিডিডিআরবি ২০১৪ সালে ১০ হাজার স্কুলগামী শিশু-কিশোরের ওপর ওবেসিটি বিষয়ক একটি জরিপ করেছিল। সেখানে দেখা যায়, আমাদের শহরাঞ্চলের শিশুদের ওবেসিটির হার ৫.৬ শতাংশ। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ওজনের শিশু ১০ শতাংশ। তবে অপুষ্টি এখনও এদেশে অন্যতম স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং এর হার ১৭.৬ শতাংশ।

শিশুদের স্থূলতার কারণ হিসেবে ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগের সার্জন ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, এখনকার বাচ্চারা উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার যেমন ফাস্টফুড, চকলেট, চিপস ইত্যাদি বেশি খায়। বাচ্চারা শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন খেলাধুলা কম করে। করোনার কারণে অনেক বাচ্চা বাইরে বের হচ্ছে না- এসব কারণেই বাচ্চাদের ওজন বেড়ে যাচ্ছে। এ থেকে কী ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হয় জানতে চাইলে নাজমুল ইসলাম বলেন, বয়স হিসেবে শিশুর হাড়ের ওপর বেশি চাপ পড়ে, বাচ্চাদের ডায়াবেটিস দেখা দেয়, হৃদরোগ ধরা পড়ে, এমনকি স্থূলতার কারণে শিশুর যোগাযোগ বৈকল্যও সৃষ্টি হতে পারে।
এসব সমস্যা এড়াতে বাচ্চাদের নিয়মিত খেলাধুলা, সময়মতো খাওয়া-দাওয়া, খাদ্য তালিকায় শাকসবজি, ফলমূল বেশি রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। এ ছাড়া শিশুদের স্থূলতা রোধে অভিভাবকদেরও করণীয় আছে বলে মনে করেন এই সার্জন। তার মতে, অনেক মা মনে করেন তিনি যতটুকু খান তার বাচ্চাও ততখানিই খাবে। সেটা তো সম্ভব নয়। কারণ বাচ্চার পাকস্থলীর আকার ছোট। এ ছাড়া অনেক মা মনে করেন বাচ্চাকে বেশি খাওয়ালে বাচ্চা বুদ্ধিমান হবে, তার ভবিষ্যৎ ভালো হবে, অন্য বাচ্চাদের থেকে আলাদা দেখার মানসিকতাও রয়েছে। এসব পরিবর্তন করতে হবে। বাচ্চাকে নির্দিষ্ট সময় নিয়ে খাওয়ায় অভ্যস্ত করতে হবে। অতিরিক্ত সময় নিয়ে খাওয়ার ফলে বাচ্চা বেশি খেয়ে ফেলে।
১৫৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares