বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ধরলা নদীর বুক এখন ধু ধু বালু চর, পানিও নাই, মাছও নাই পড়ছি বিপদে 

ধরলা নদীর বুক এখন ধু ধু বালু চর, পানিও নাই, মাছও নাই পড়ছি বিপদে 

মোঃবুলবুল ইসলাম,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ নাব্যতা সংকটে পানি প্রবাহ একেবারেই থেমে গেছে কুড়িগ্রাম জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ধরলা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমারসহ বেশির ভাগ নদ-নদীর। ফলে নদীর বুক জুড়ে জেগে উঠেছে ছোট বড় অসংখ্য বালু চর।
শুকনো মৌসুমের শুরুতেই এ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে জীববৈচিত্রসহ দেশী প্রজাতির মাছ। এতে করে জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছে নদী নির্ভর মানুষেরা। অন্যদিকে নদীগুলোকে বাঁচাতে সমীক্ষার মাধ্যমে খননের আশ্বাস পানি উন্নয়ন বোর্ডের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দেড় থেকে দুই কিলোমিটার প্রস্থ্য ও ৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘের ধরলা নদীর বুক এখন ধু ধু বালু চর। দেখে বোঝার উপায় নেই, এক সময়ের প্রমত্তা ধরলা নদী এটি। এই নদী এসব বালু চরের পাশে পরিনত হয়েছে সরু খালে। সেখানে সামান্য পানি থাকলেও তাতে নেই কোন প্রবাহ। একই অবস্থা অন্যান্য নদীরও। কয়েক বছর আগেও শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি প্রবাহ ছিল। কিন্তু বর্তমানে নাব্যতা সংকটে থেমে গেছে সে প্রবাহ। বছরের এই সময়টাতে নদীতে নৌকা না চলায় ও মাছ না থাকায় কষ্টে দিন পাড় করছেন এসব পেশার সাথে সম্পৃক্তরা।
ধরলা পাড়ের বাসিন্দা শাহাআলম মিয়া বলেন, নদ-নদীর তলদেশ ভড়াট হওয়ায় কমে গেছে পানির ধারন ক্ষমতা। ফলে বর্ষা মৌসুমে ভাঙ্গছে ঘর-বাড়ি আর শুকনো মৌসুমে থাকছে না পানি। এ অবস্থায় জীবিকার সংকটে পড়েছে নদী পাড়ের মানুষেরা। নদ-নদীগুলোকে খননের মাধ্যমে পুর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই।
ধরলা নদীতে নৌকা চালায়ি জীবিকা নির্বাহ করেন  ভানু চন্দ্র নামের এক জেলে। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগে ধরলা নদীতে সবসময় ভরা পানি থাকতো। নদীতে মাছ ধরে সংসার ভালোই চলছিল। এখন ধরলায় পানিও নাই, মাছও নাই পড়ছি বিপদে।  এখন কোনরকমে নৌকা চালাই। শহরের মানুষজন ঘুরতে আসে তাদেরকে নিয়ে যে ভালো ভাবে নৌকা চালাবো তাও পাই না। নৌকা ঠেকে যায় মাটিতে মানুষ নৌকায় উঠতেও চায় না। তার পরেও নৌকা চালিয়ে কোনরকমে সংসারের হাল ধরে আছি।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নন নদীর নাব্যতা বিষয়টি যেমন নৌ চলাচল যাতে বিঘ্ন না ঘটে এই বিষয়টি বিআইডব্লিউটিএ দেখছেন। আমাদের কাজ হচ্ছে খনন করা। যেখানে খনন করলে ভাঙন রোধ হবে। তাই নদী সমীক্ষার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি ও খননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীগুলো খনন হলে নদ-নদীগুলো জীবন্ত হয়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।
জেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো দ্রুত খনন করা না হলে বর্ষা মৌসুমে যেমন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বাড়বে তেমনি নদী কেন্দ্রিক জীবন-জীবিকাও পড়বে চরম সংকটে। হারিয়ে যাবে জীব-বৈচিত্র।
৬০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares