সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোরে মাডার মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে হুমকিতে বাদীর পরিবার

তানোরে মাডার মামলার আসামীরা প্রকাশ্যে হুমকিতে বাদীর পরিবার

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে জমি জমা সংক্রান্ত মাডার মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইসু হলেও রহস্য জনক কারনে থানা পুলিশ গ্রেফতার করছেন না বলে বাদীদের অভিযোগ। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন(ইউপির) মহাদেবপুর ও হাতিশাইল গ্রামে ঘটে রয়েছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এঘটনায় আতাউর রহমান বাদী হয়ে গোলাম আজম  খোকনসহ ১২ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে বিচারক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও আটক হয়নি কেউ। অথচ আসামীরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও থানা পুলিশ বলছে আত্মগোপনে। ফলে দ্রুত আসামীদের গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা। নচেৎ পুনরায় সংঘাতের আশংকা করছেন গ্রামবাসী।
জানা গেছে উপজেললার কামারগাঁ ইউনিয়ন(ইউপির) মহাদেবপুর মৌজার অন্তরগত মৃত জানু মন্ডল ওরফে জানিপ মন্ডলের ১৮ বিঘা জমি  পুত্র আতাউর ও বাক্কারকে ওছিয়ত করে দেন। ১৮ বিঘা জমির মধ্যে তারা তিন বোনকে সমান ভাবে ৬ বিঘা জমি দেয়। দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর ধরে শান্তিপূর্ণ ভাবে বাকি ১২ বিঘা জমি ভোগ দখল ও চাষাবাদ করে আছসেন আতাউর বাক্কার। এঅবস্থায় মৃত জানু মন্ডলের আরেক স্ত্রীর সন্তান ইয়াকুবের পুত্র গোলম আজম ও খোকন ওই জমি নিজেদের বলে দাবি করে গত ডিসেম্বর মাসের ১৬ তারিখে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জে সজ্জিত হয়ে লাঠিয়াল ভাড়াটিয়া বাহিনী নিয়ে দখল করতে যায়। এসময় আলুর ফসলী জমিতে পরিচর্যা করছিলেন প্রকৃত মালিক বাক্কার। তাকে হাসুয়া দিয়ে মাথায় ও গালে  কোপ লোহার রডের আঘাতে হাত ভেঙ্গে দেয়। তার স্ত্রী স্বামী কে উদ্ধারে আসলে তাকেও কোপ দেয়। উভয়ের ডাক চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গেলে অন্যরা সহ গ্রামবাসী এগিয়ে আসলে গায়ে থাকা সোনা লুট করে হুমকি দিয়ে চলে যায়। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। টানা পাচ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে যায়। বাক্কারের মাথা গালে সেলাই ও ডান হাত ভেঙ্গে যায়। তার স্ত্রীর মাথা ফেটে যায়, সেলাই দেওয়া হয়। এঘটনায় থানায় অভিযোগ হলেও গোলাম আজম খোকন প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় মামলা নেয়নি। বাধ্য হয়ে আইনজীবির মাধ্যমে আদালতে এজহার দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গত ডিসেম্বর মাসে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও নামমাত্র অভিযান দিয়ে নিরবতা পালন করছে থানা পুলিশ।গ্রাম বাসী জানায়, কামারগাঁ ইউপির সাবেক সংরক্ষিত মহিলা ওয়ার্ড সদস্য দিলরুবার বাড়িতে বহিরাগতরা আশ্রয় নিয়ে ককটেল ফাটিয়ে অস্ত্র নিয়ে জমি দখলের জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলকার অপরিচিত লোকজনের আস্তানা তার বাড়ি। তার নাকি প্রশাসনের উপর মহলে হাত আছে। এজন্য হাজারো কিছু করলে পুলিশ ধরবে না বলে দাপট দেখায়।
আহত বাক্কার জানান, পিতা ওছিয়ত করেছে ও আদালতের এবিডেভিট করা আছে। তারপরও শুধু ক্ষমতার জোরে আমাদের কে মেরেছে। মামলা গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ভাবে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে। আজম ও খোকন শহরে থাকে, আমাদেরকে আদালতে দেখলে মেরে ফেলবে। এদিকে দিলরুবাও অপরিচিত লোকজন এনে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। তিনি আরো জানান, আমার স্ত্রী স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া মেয়েকেও মারধর করেছে। দিনের বেলায় সবকিছু প্রকাশ্যে করছেন।
মামলার বাদি আতাউর জানান, আসামীরা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে দাপটের সাথে চলাফেরা করলেও আটক করছেনা পুলিশ। আমরা পরিবার নিয়ে চরম আতংকে দিন পার করছি। আসামীদের গ্রেফতার না করলে যে কোন সময় আমাদের উপর হামলা করবে। যে ভাবেই হোক জমি দখল নিবেই।প্রভেটের আবেদন করে ২০০৮ সালে, এরপ্রেক্ষিতে  ২০০৯ সালে আদালত প্রভেট করে দেয়। এর বিরুদ্ধে গোলম আজম মিসকেস করে, দীর্ঘ দিন পর আবেদন করলে আদালত ২ হাজার টাকা জরিমানা নিয়ে আমলে নেয়। এর শুনানি আগামী জুন মাসের ২৩ তারিখে দিন ধার্য আছে। কিন্তু এর আগেই তারা জোরপূর্বক জমি দখল নিতে উঠেপড়ে লেগেছে।
ইউপি সদস্য তোফায়েল জানান, কাগজ যার জমি তার, আমি যতটুকু জানি আতাউর ও বাক্কারের জমি দখল নিতে গোলম আজম ও হাবিবুর রহমান খোকন রা বেধড়ক পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে এবং হাত ভেঙ্গে দেয়। আমি চাই বয়োজ্যেষ্ঠ আপন চাচা চাচী কে এভাবে মারা অন্যায়, দ্রুত তাদের আটক করা হোক।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাসির উদ্দিন জানান, আসামীরা পলাতক আছে বলে দায় সারেন।
ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, আসামীরা পলাতক গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
৫৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares