শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোর থেকে চোরাই পথে পচার হওয়া সার পটাশ জব্দ

তানোর থেকে চোরাই পথে পচার হওয়া সার পটাশ জব্দ

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়ন(ইউপির) ধান ব্যবসায়ী বখাটে রবিউল বিএসের সহযোগিতায় চোরাই পথে সার পাচারের সময় কৃষকরা আটক করেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে পাচন্দর ইউপি ভবনের কাছে ঘটে চোরাই সার পটাশ আটকের ঘটনাটি। সংবাদ পেয়ে বখাটে রবিউল বিএসের সহযোগিতায় প্রানপুর গ্রামের আম পুকুর পাড়ায় নুরুলের খৈলানে রাখা হয় আটককৃত সার। এখবর ছড়িয়ে পড়লে সার না পাওয়া স্থানীয় কৃষকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে একপ্রকার বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সার জব্দ করে ঘটনাস্থলেই রাখেন। অফিসার ও বিএস রবিউলের এমব কান্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রানপুর পাঠাকাটা মোড়ের ধান ব্যবসায়ী নামধারী বখাটে রবিউল নিয়োমিত পার্শ্বের উপজেলা মান্দার চৌবাড়িয়া এলাকায় চোরাই পথে সার পাচার করছেন। তিনি গত রোববার তিন স্টিয়ারিং ভটভটিতে করে সার পাচার করেন। একই ভাবে গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে দুই ভটভটিতে করে সার পাচারের সময় পাচন্দর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের কাছে কৃষকরা আটক করে কাগজ পত্র দেখতে চান। কিন্তু ভটভটি চালকরা কোন কিছু না দেখিয়ে বখাটে রবিউলকে ফোন করে ডাকেন। রবিউল এসেই সাধারন কৃষক ও স্থানীয় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে গালমন্দ করে আমার সার, আমার প্রজেক্টে যাবে, কারো বাবার ক্ষমতা থাকলে যেন কিছু করে বলে আমপুকুর পাড়ায় নুরুলের বাড়ির খৈলানে ১০০ বস্তা সার নামিয়ে রাখেন।
স্থানীয়রা জানান, রবিউল কোন ব্যবসায়ী না। সে বিএস রবিউলের সাথে যোগসাজশে সার পাচার করছেন। রবিউল গভীর নলকুপের অপারেটর। তার তালিকা অনুযায়ী নামমাত্র সার দিয়ে সব মজুদ করে বাড়তি দামে বিভিন্ন এলাকায় নিয়োমিত পাচার করছেন। সে অপারেটর হয়ে সার নিয়ে সিন্ডিকেট কিভাবে করেন। সবকিছু বিএস রবিউল জানে।
সরেজমিনে আমপুকুর পাড়ায় দেখা যায়, দুই ভটভটি থেকে সার নামাচ্ছেন অপারেটর রবিউল। ভটভটি চালকরা জানান, আমাদেরকে রবিউল সার লোড দিয়ে চৌবাড়িয়া যেতে বলেছে এর বেশি কিছুই বলতে চাননি তারা। তাদের সাথে কথা বলতেই অপারেটর রবিউল চরম আজেবাজে ভাবে গালিগালাজ করেন। যার ভিডিও ফুটেজ সংগৃহীত আছে। রবিউল মোবাইল করে আরেক আলু চাষি মোজাম্মেল কে ডাকেন। তিনি এসে বলেন, আমি রবিউলের আমপুকুর গ্রামের উত্তরে রবিউলের গভীর নলকুপে প্রজেক্ট করেছি।
বখাটে অপারেটর রবিউল জানান, সারগুলো মুন্ডুমালা পৌরসভার বিসিআইসির ডিলার এমদাদের কাছ থেকে নিয়েছি। অফিসার বিএস সবাই জানে। এমদাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার এলাকায় সার দিয়ে শেষ করতে পারছি না, আর পাঠাকাটা সার দিব কেন, সব মিথ্যা সাজানো।
রবিউল পুনরায় দাপট দেখিয়ে বলেন, আমার সার কোথায় নিব বা যাবে আমার একান্ত বিষয় বলে অফিসারের সামনে প্রচুর দম্ভক্তি দেখান।
মোজাম্মেল জানান, রবিউলের গভীর নলকুপে প্রজেক্ট করেছি, এসব সার চৌবাড়িয়া নিয়ে যাচ্ছিল প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, অনেক সারের প্রয়োজন, তাদেরকে আমি দিব, তারা আমাকে দিবেন। আমার বাড়ীতে আরো ৪০০-৫০০ বস্তা সার আছে যা অফিসার বিএস রবিউল জানে।
বিএস রবিউল সাফাই গেয়ে সার পাচারের বিষয় ধামা চাপা দিতে মরিয়া। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে সার জব্দ করা আছে। এমওপি ৬৩ বস্তা ডিএপি ৩৭ বস্তা মোট ১০০ বস্তা সার জব্দ করা হয়েছে।
কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ জানান, সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত কৃষি অফিসার ও বিএসকে পাঠানো হয়েছে। তাদের মুখে শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত কৃষি অফিসার কামরুল জানান, সার গুলো জব্দ করে ঘটনাস্থলে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, আমি বাহিরে আছি, সার গুলো পরিষদ চত্বরে আনা হবে।
উপপরিচালক মাজদার হোসেন জানান, সার পাচারের কোন সুযোগ নেই। আমি নির্দেশ দিয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
১৮৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares