শুক্রবার- ১৪ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মাদারীপুরে ১৯ বছর পর হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন

মাদারীপুরে ১৯ বছর পর হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রতিনিধি: মাদারীপুরের শিরখাঁড়ায় ইউপি নির্বাচনে হেরে গিয়ে তৎকালীন চেয়ারম্যনের মেঝভাইকে প্রকাশে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা মামলায় ৩ জনের ফাঁসি ও ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। দোষ প্রমান না হওয়ায় ৫ আসামীকে খালাস দেয়া হয়। দীর্ঘ ১৯ বছর পর হলেও মামলার রায়ে সন্তুষ্ট বাদীর পরিবার। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান আসামীপক্ষের আইনজীবি। এদিকে দন্ডপ্রাপ্ত সবাই চরমপন্থী দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
মামলার বিবরনে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৯ অক্টোবর মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাঁড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পর পরাজিত চেয়ারম্যানপ্রার্থী লুৎফর খালাসী তার দলবল নিয়ে তৎকালীন ও বর্তমান চেয়ারম্যান মজিবর রহমানের বড়ভাই আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারকে প্রকাশে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। ঘটনারদিনই নিহতের স্ত্রী সেলিনা বেগম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮-১০ জনের নামে মামলা করেন।
২০০৫ সালে তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ১৯ জনের নামে সংম্পৃক্ততা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দেন ও ৩ জনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়। পরে আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসারসহ ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। দীর্ঘ আইনীপ্রক্রিয়া শেষে বুধবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়র জজ আদালতে বিচারক লায়লাতুন ফেরদৌস মাহজারুল ইসলাম মঞ্জু, মাছিম শেখ ও জসিম শেখকে (তিনজনকে) মৃত্যুদন্ড ও হোসেন হাওলাদার, মনজুর আলী, সাইদুর হাওলাদার, সূর্য মাতুব্বর, ফয়েজ শেখ, সুজাল মাতুব্বরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেন (৬ জনকে) ও দন্ডপ্রাপ্ত সবাইকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। এছাড়া দোষ প্রমাণ না হওয়ায় আশরাফুল, আমিন সিদ্দিক, নুরুল হক বয়াতী, মহসিন হাওলাদর, সৈয়দ আলীকে (৫ জনকে) খালাস প্রদান করেন।
মামলার বাদী সেলিনা বেগম বলেন, রায়ের প্রতি আমার সবাই সন্তুষ্ট। সরকারের একটাই চাওয়া দ্রুত এই রায় কার্যকর করা হোক।
নিহত আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের বড় মেয়ে শিরিন আক্তার বলেন, আমরা নায্য বিচার পেয়েছি। উচ্চ আদালতেও যেন এই রায় বলবৎ থাকে। বাবার আদর ছোটবেল থেকেই পায়নি। এই রায়ের মাধ্যমে অপরাধীরা ভবিষ্যতে এমন অন্যায়-অপরাধ করতে সাহস পাবে না।
মাদারীপুর আদালতের পিপি এ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং জানান, আসামীপক্ষ ভয়ভীতি দেখানোতে সাক্ষীরা আদালতে আসতে বিলম্ব করায় মামলা দীর্ঘদিন পরে রায় হয়েছে। দন্ডপ্রাপ্তরা সবাই পূর্ব বাংলা চরমপন্থী দলের সদস্য। তারা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেই প্রকাশ্য দিবালোকে এই হত্যাকান্ড চালায়।
এদিকে রায়ে নায্য বিচার পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে উচ্চ আদালতে যাবার কথা জানান আসামীপক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়া।
প্রসঙ্গত, মামলার এজাহারে থাকা আসামীদের মধ্যে লুৎফর খালাসী ও তার দুই ভাই ওবায়দুর খালাসী ও খায়রুল খালাসীসহ ৫ জন আইশৃঙ্খলাবাহীর হাতে বন্দুকযুদ্ধে বিভিন্ন সময় নিহত হন। এছাড়া জাকারিয়া অপু, শামীম হোসেন, নুরুউদ্দিন মাতুব্বরসহ ৪ জনের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। হত্যাকান্ডে তাদের সম্পৃক্ততা থাকলেও রায়ের আগেই মৃত্যু হওয়ায় তাদেরও অব্যাহিত দেন আদালত।
২৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS