বুধবার, ২৩শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, English Version

বিরলে ভবেশ রায় এর মৃত্যুর ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা

বিরলে ভবেশ রায় এর মৃত্যুর ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা

আতিউর রহমান, বিরল (দিনাজপুর) ;; বিরলে শহরগ্রাম ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের মৃত তারক রায়ের ছেলে ভবেশ চন্দ্র রায় (৫৮) এর আলোচিত মৃত্যুর ঘটনায় ৪ দিন পর থানায় মামলা রুজু হয়েছে। ভবেশ রায়ের ছেলে স্বপন চন্দ্র রায় বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ৪ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেছে।
মামলার এজাহারে স্বপন চন্দ্র রায় জানান, তাঁর পিতা কৃষি কাজ করতেন এবং পূজা উদযাপন পরিষদ, বিরল উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। উপজেলার শহরগ্রাম ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের আব্দুল কাদের এর ছেলে মোঃ আতিকুর ইসলাম (৪০), শহরগ্রামের আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মোঃ রতন ইসলাম (৩০), নরসিংপাড়া গ্রামের আব্দুল মাজেদ এর ছেলে মোঃ মুন্না ইসলাম (২৭) ও পাঁচশালা গ্রামের আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মোঃ রুবেল (২৮)গণ দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের নিজ এলাকায় গোপনে ও প্রকাশ্যে সুদের ব্যবসা করে আসছে। তাদের সাথে আমার পিতার সম্পর্ক খুবই ভালো ছিল। আমার পিতা আর্থিক সমস্যার কারণে বিপদে পড়ে আতিকুর ইসলামের নিকট টাকা ধার চাইলে বিভিন্ন শর্ত দিয়ে গত ১ বছর পূর্বে আতিকুর ইসলামের নিকট থেকে নেয়া পঁচিশ হাজার টাকা ধার/ঋণ বাবদ প্রতি মাসে তিন হাজার দুই শত পঞ্চাশ টাকা লাভ আদায় করত। আমার পিতা আতিকুর ইসলামের নিকট উক্ত টাকা পরিশোধ করার চেষ্টা করে কিন্তু সংসারের খরচ ও অভাবের তাড়নায় পরিশোধ করতে না পেরে প্রায় ১ বছর যাবৎ উক্ত পঁচিশ হাজার টাকার সুদ/লাভের টাকা যা প্রতি মাসে তিন হাজার দুই শত পঞ্চাশ টাকা পরিশোধ করে আসে। এমনিভাবে চলাকালিন আসামীগনেরা গত ১৭ এপ্রিল-২০২৫ তারিখে বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৪ টায় দুইটি মোটরসাইকেলযোগে আমাদের বাড়ীতে আসে এবং আমার পিতাকে দেখতে পেয়ে প্রয়োজনীয় কথা আছে বলে সু-কৌশলে ডেকে নিয়ে যায়। প্রকাশ থাকে যে, আসামীগনেরা আমার পিতাকে তাদের সাথে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পরে আমার পিতার মোবাইল বন্ধ থাকে। এই বিষয়টি আমি জানতে পেরে আমার পিতার ০১৭৩৪৯৯৭০৯৩ এই নাম্বারে আমি ফোন দিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হই। আসামীগনেরা আমার পিতাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার পিতাকে সুদের টাকার জন্য বিভিন্ন মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। আমার পিতা আসামীগনের মানসিক চাপের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমার পিতা অসুস্থ হওয়ার পরে একই তারিখ রাত আনুমানিক ৭.৪৭ টায় আমার পিতার ০১৭৩৪৯৯৭০৯৩ এই নাম্বার থেকে আমার ০১৫২১৭৭২৭৮০ এই নাম্বারে ফোন আসে। তখন আমি ফোনটি বিছিন্ন করে পুণরায় আমার পিতার নাম্বারে ফোন করলে উক্ত ফোন রতন ইসলাম রিসিভ করে বলে আমি রতন বলছি তোমার বাবা ভবেশ চন্দ্র রায় নাড়াবাড়ী বাজারে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। তুমি তাকে নিয়ে যাও। তখন আমি রতনকে বলি আমি দিনাজপুর শহরে আছি আমার ঘটনাস্থলে যেতে সময় লাগবে তাই আমার পিতাকে যে কোনভাবে আমাদের বাড়ীতে পৌছে দেন। উক্ত সময় ০১৭৮৬৯৮৫১৯৩ এই নাম্বার থেকে পুণরায় আমার ০১৫২১৭৭২৭৮০ এই নাম্বারে ফোন আসে এবং একই রূপ কথা বলে। তখন আমি পুণরাবৃত্তি করি। পরে সকল আসামীগনেরা একটি ভ্যানযোগে আমার পিতাকে ফুলবাড়ী বাজারে এনে রাস্তার পাশে ফাঁকা জায়গায় রাখে। সেই সময় আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে উপরোক্ত সকল আসামীগনেরা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়ে আমি স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানতে পেরে দিনাজপুর শহর থেকে এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দ্রæত ফুলবাড়ী বাজারে গিয়ে আমি ও আমার মা শান্তনা রানী রায়সহ স্বাক্ষীগণদের সহযোগিতায় আমার পিতাকে এ্যাম্বুলেন্সযোগে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেই সময় হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার পিতার পালস সম্পর্শ করে বলেন আমার পিতা আগেই মারা গেছে। এরপর হাসপাতালে আমার পিতার পোষ্ট মর্টেম ১৮ এপ্রিল-২০২৫ তারিখ রাত ৬ টায় সম্পন্ন করে মৃতদেহ হস্তান্তর করার পরে উক্ত তারিখে রাত আনুমানিক ৭টা থেকে ১১ টার মধ্যে বিরল থানাধীন বাসুদেবপুর এলাকার তুলাই নদীর পাশে থাকা শশ্মশানঘাটে সৎকার কাজ সম্পন্ন করা হয়। আসামীগনেরা আমার পিতাকে আমাদের বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে আমার পিতাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মর্মে আমি আশাবাদি। তাই আসামীগণের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি।
বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুস ছবুর মামলা রুজু করা হয়েছে নিশ্চিত করে জানান, পরবর্তী আইনানুগ

১৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS