ভোলা এলজিইডির উন্নয়ন প্রকল্প দুর্নীতির আখড়া হাজার কোটি টাকার লুটে অভিযোগ
ভোলা প্রতিনিধি ; ভোলা স্থানীয় সকরার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডিতে) আওয়ামীলীগের সাবেক এমপিরা পছন্দ করে, আওয়ামী নেতা নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইব্রাহীম খলীলকে ভোলায় আনার পরে,লীগের সবাই মিলে ৩ বছরে উন্নয়ন প্রকল্পে নামে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাট করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা, জনগন ও ঠিকাদারেরা অভিযোগ করেছেন। ১১ নভেন্বর ঢাকার একটি হোটেলে বসে ঘুষের কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী ইব্রাহীম খলীল।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও স্থানীয়রা অভিযোগে জানান, জনগনের নুন্নতম জীবন যাপনের জন্য এলজিইডি উন্নয়ন প্রকল্পগুলো গ্রহন করে তা নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে হবে। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজে যাতে স্বচ্ছতা থাকে এবং কোনো অভিযোগ না হয়, সে বিষয় মাথায় রেখে নির্বাহী, সহকারী ও উপসহকারী প্রকৌশলীরা কাজ গুলোকে তদারকী করে সময় মত বাস্তবায়ন করে বিল প্রদান করবেন। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইব্রহীম খলীলের বেলায় ছিল অনিয়ম, র্দূনীতি আর লুটপাট, ঠিকাদারেরা কাজ করুক আর না করুক তিনি ৫ থেকে ৬ ভাগ ঘুষ পেলেই বিল দিতেন ঠিকাদার নামধারী আওয়ামী নেতাদের। আর তিনি ওই টাকা দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-গাড়ি করে সম্পদের পাহাড় করেছেন। প্রায় সময়ে ভ্রমন করতেন বিভিন্ন রাষ্ট্রে।
ভোলার ক্ষেত্রে প্রকল্প গুলো নেয়া হয়েছে নেতাদের কথা মতে এবং অনেক সময়ে কিছু অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নেয়ার কথাও শোনা যায়, যে গুলো মূলত দুর্নীতি করার জন্যই নেওয়া হয়। এ ধরনের প্রকল্পে নাম আছে কিন্তু সরজমিনে কাজ নাই, সময় মত বিলও তুলে নেয়া হয়েছে। অনেকগুলো প্রকল্প প্রয়োজন থাকলেও দলীয় প্রতিপক্ষের কারনে তা ১৬ বছরেও করা হয়নি। আর রাস্তা-কালভাট যে গুলো করা হয়েছে সেগুলো নিন্মমানের সামগ্রী দিয়ে নামেমাত্র । কয়েকদিন পরে ওই রাস্তা ও কালবাটের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে আলীনগর, শিবপুর, ধনিয়া, ভেদুরিয়া, পূর্ব ইলিশা, পশ্চিম ইলিশা, রাজাপুর ইউনিয়ন, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ৬ উপজেলার সকল ইউনিয়ন। প্রম্প্রতি পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের পশ্চিম চরপাতা বাইপার্স রাস্তা কার্পেটিং করা হয়েছে, ভিটুমিনের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে পোড়া মবিল যা দেখতে ভিটুমিনের মত। পাথর ও ইট মিশ্রন করা। আর যে সব বক্স কালভাট করা হয়েছে তা পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া এবং সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে ২০টায় ১টি (অর্থাৎ ২০ বস্তা বালু-১ বস্তা সিমেন্ট)। কার্পেটিংয়ের ঢালাই সপ্তাহের মাথায় রিক্সার চাকার সাথে উঠে গিয়ে রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে যা মানুষের মরন ফাদ হয়ে দাড়ায়। এখন নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইব্রাহীম খলীলের ভোলা থেকে বদলীর সময়, সম্প্রতি তিনি ঢাকায় গিয়ে সে বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত করেও ফেলেছেন বলে নির্ভর যোগ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ভোলা এলজিইডিতে ২০২৩-২৪, ২৪-২৫ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগ প্রকল্প রয়েছে কতটি। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতাভুক্ত চলমান প্রকল্প রয়েছে কতটি, আবার প্রকল্প বাদ পড়া তালিকা থেকে নতুনভাবে অনুমোদিত হয়েছে কতটি। সমাপ্ত দেখানো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে কত কোটি টাকা আর চলমান প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ কত কোটি টাকা এসেছে তার তথ্য চাইলে তিনি বার বার তা এড়িয়ে গিয়ে কাজের ব্যস্ততা দেখিয়ে পালিয়ে যান। তবে অফিসের একটি সুত্র জানায়, কয়েকশত কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে, প্রাপ্ত বরাদ্দ সবই খরচ দেখানো হয়েছে, কিন্তু উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সরজমিনে ২০ শতাংশের বেশী দেখা যায়না বলেন জানান তারা। ২০২৪ সালের কাজের অগ্রগতি সব মিলিয়ে গড়ে ২৬ শতাংশ বলে জানান নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সহকারী প্রকৌশলী। কিন্তু ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইব্রাহীম খলীল, আওয়ামীলীগের সকল ঠিকাদারকে ঢাকায় ডেকে (৯-১১ নভেন্বর) একটি হোটেলে বসে শতভাগ বিল পাশ করে দিয়ে ৫ থেকে ৬ ভাগ হারে কয়েক শত কেটি টাকা ঘুষ নিয়ে গেছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারেরা। এখন তার বদলীর সময়, তাই সংশ্লিষ্ট বিভাগের একটি অডিট টিম টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে তাদেরকে ভোলায় এনে অডিট রিপোট নিয়ে তার অনিয়ম ও র্দূনীতিকে বৈধ করার জন্য অডিট চলছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইব্রাহীম খলীল কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি। এলজিইডির হিসাব রক্ষক মিজানুর রহমানও এ বিষয়ে মুখ খুলতে অপারগতা জানান। জেলা হিসাব রক্ষন অফিস থেকে বরাদ্দের পরিমান জানার চেষ্টা করলে তারা হিসাব বেড় করতে পারবেননা বলে জানিয়ে দেন। ভোলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ ইব্রাহীম খলীল বদলীর আগে গত ৩ বছরের প্রকল্প গুলো বাস্তবায়ন, বরাদ্দ ব্যয়ের হিসাব বুঝে নেয়ার জন্য স্থানীয় জনগন, ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উর্ধতন কর্মকর্তাদের দাবী জানান।