বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শার্শায় ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে, বেলতা খালের উপর বাঁশ কাঠের সাঁকো পানির নীচে

শার্শায় ১৫ গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরমে, বেলতা খালের উপর বাঁশ কাঠের সাঁকো পানির নীচে

২৭ Views

আব্দুল মান্নান, শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি \ যশোরের শার্শার ডিহি ইউনিয়নের ‘বেলতা খালের’ উপর একটা সেতুর অভাবে দুই উপজেলার অন্তত প্রতিদিন ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সরকার উদ্যোগ না নেওয়ায় শার্শার সাড়াতলা ও ঝিকরগাছার বেলতা গ্রামের বাসিন্দারা একটি কাঠ ও বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু চলতি বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়াতে সাঁকোর উপরে পানি উঠে গিয়ে স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে গেছে। ফলে এই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও অতি বিশেষ প্রয়োজনের তাগিদে একমাত্র কলা গাছের ভেলা দিয়েই মানুষ জন পারাপার হচ্ছে। ফলে সাড়াতলা-বেলতা সড়ক ধরে চলাচলকারী আশপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এলাকাবাসী বলছেন, সাঁকোটি ভেঙে চলাচলের অনুপোযোগী হওয়ায় প্রতিনিয়ত মানুষকে ভোগান্তি পোয়াতে হচ্ছে। এখান দিয়ে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীদের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।যারা চলাচল করছে তারা কলার ভেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। কৃষিপণ্য মাঠ থেকে আনা ও বাজারজাতকরণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অথচ সাড়াতলা-বেলতা সড়কের বেলতা খালের দুপাশে ৩০০ ফুট দূরত্বের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামোর আওতায় নির্মিত পাকা সড়ক। স্থানীয় সমাজকর্মী ডা. নুর ইসলাম বলেন, কয়েক বছর আগে গ্রামবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে সাঁকোটি তৈরি করা হয়। ওই সাঁকো ব্যবহার করে পণ্ডিতপুর, সাড়াতলা, গোকার্ণ, দুর্গাপুর, চন্দ্রপুর, খলিসাখালী, পাকশিয়া, কাশিপুর, বাউন্ডারি গ্রামসহ আশপাশের ১৫টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে আসছিলেন। চলতি বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়াতে সাঁকোর উপরে পানি উঠে গিয়ে স্রোতে সাঁকোটি ভেঙে গেছে। ফলে এই রাস্তাটি চলাচলের সম্পুর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। বেলতা গ্রামের কৃষক আহম্মদ আলী বলেন, “মাঠের ফসল বাড়ি নিযাতি খুব সেকোস্ত (দুর্ভোগ) হচ্ছে। দুই-তিন মাইল ঘুরে যাতি হয়, না হলি ভ্যালায় করি ফসল পার করতি হয়। এতে সুমায়, ফসল সবই খ্যায় হচ্ছে।” কলেজ ছাত্র আবুল হাসান বলেন, “আগে বাড়ি থেকে কলেজে যেতে ২৫ মিনিট সময় লাগতো। কিন্তু সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার পর পথ বেড়েছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। এখন কলেজ যেতে ৪০-৪৫ মিনিট বেশি সময় লাগে। ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মুকুল বলেন, সেতু নির্মাণের সব কাগজপত্র উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে নিয়ে ঢাকা এলজিইডি দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছিল। প্রকল্প পরিচালক দ্রুততম সময়ে কাজ শুরু হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তার কোন প্রতিফলন দেখছি না। শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী সানাউল হক বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ বেলতা খালে সেতু নির্মাণে ২০২০ সাল থেকেই প্রস্তাবনা পাঠানো হচ্ছে। এখন এটা টেন্ডারের অপেক্ষায় রয়েছে। খালের উপর ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ দ্রুত বাস্তবায়নের আশা করেন তিনি।

Share This

COMMENTS