নবীগঞ্জে ছাত্রলীগ সভাপতির বাড়িতে হামলার মামলায় বিএনপি নেতা তৌহিদসহ ৭ জন কারাগারে
৭ Views
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ)প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীর বাড়িঘরে হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীসহ ৭জন আসামীকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (২) এর বিচারক রাহেলা পারভীনের আদালতে মামলার ১৯ জন আসামীর মধ্যে ১৩ জন উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে ১৩ জন আসামীর মধ্যে ৮জনের জামিন মঞ্জুর করেন এবং অপর ৭ জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
কারাগারে যাওয়া মামলার আসামীরা হলেন- নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও চরগাঁও গ্রামের মৃত তাজুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী (৫৩), নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের (স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেওয়া) সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও চরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল মতিন চৌধুরীর ছেলে সাইফুল জাহান চৌধুরী (৫১), একই গ্রামের মৃত আউয়াল মিয়া চৌধুরীর ছেলে আলমগীর চৌধুরী (৩৯), আনমনু গ্রামের মৃত নুর মিয়ার ছেলে কাজল মিয়া (৩৭), একই গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে আরিফুর রহমান প্রমি (২৮), গন্ধ্যা গ্রামের তৈয়ব উল্লাহর ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৮), নিজ চৌকি গ্রামের আব্দুল হাসিম প্রকাশ শাহ আব্দুল হাকিমের ছেলে জাকির আহমদ প্রকাশ শাহ জাকির (২৪)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়- ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারী রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের তৎক্ষালিন সভাপতি নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীর পৌর এলাকার জয়নগরস্থ বাড়িতে আসামীরা হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়। হামলায় বাড়িঘর ভাংচুর, ২টি সিএনজি অটোরিকশা ও ১টিমোটরসাইকেল ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের তৎক্ষালিন সভাপতি নাজিম উদ্দৌলা চৌধুরীর পিতা সমিজুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে হবিগঞ্জের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে নির্দেশ দেন। পরে নবীগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শিদ সরকার ২০২৪ সালের ২৩ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামী তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাইফুল জাহান চৌধুরী, রেজা আহমেদ চৌধুরী, জাবেদুল আলম চৌধুরী সাজু, মাসুদ পারভেজ রুবেল, সাইফ মিয়া ও তারেক আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে ও অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে বাদী সমিজুর রহমান চৌধুরী তদন্ত প্রতিবেদনের উপর অনাস্থা জানালে আদালত মামলার পুনরায় তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে নির্দেশ দেন। পরে গত (৩১ অক্টোবর) পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মৃনাল দেবনাথ এজহার নামীয় সকল আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার ১৯ জন আসামীর মধ্যে ১৩ জন উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালতের বিচারক রাহেলা পারভীন ১৩ জনের মধ্যে ৮ জনের জামিন মঞ্জুর করেন এবং ৭ জনের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন । আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুফি মিয়া ৮ জন আসামীর জামিন মঞ্জুর ও ৭ জন আসামীকে কারাগারে পাঠানোর সত্যতা নিশ্চিত করেন।