শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডোমারে  পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জেলা এবং উপজেলার নামের ভুল, অভিভাবকদের মাঝে সমালোচনার ঝড়  ।

ডোমারে  পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জেলা এবং উপজেলার নামের ভুল, অভিভাবকদের মাঝে সমালোচনার ঝড়  ।

রবিউল হক রতন , ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডোমার উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এটি একটি ডোমার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রশ্নপত্রে তথ্যগত ভুল থাকায় অভিভাবকদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বইছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা সহ তাদের অভিভাবকদের অনেকেই।
সোমবার (১৩ জুন) উক্ত প্রশ্নপত্র নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়া। প্রশ্নপত্রটি ছিল অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার  ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির বাংলা (সৃজনশীল) বিষয়ের উপর। সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানায় উল্লেখ রয়েছে ‘ডোমার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়’।
মূলতঃ ডোমার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবস্থান থেকে পাশ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রায় ৮ কি.মি. দূরে অবস্থিত। ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্রে পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার নামের প্রশ্নে পরীক্ষা হওয়ায় গোটা নীলফামারী জেলার মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে।
প্রশ্নপত্রে জেলা এবং উপজেলার নাম ভুলের বিষয়টি বিস্তারিত জানতে চাইলে ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মোছাঃ লিপি আক্তার বলেন, “এটা আসলে একটা প্রিন্টিং মিসটেক। মাত্র ৭ জন শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়ে আমরা স্কুলের ক্লাসসহ সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসতেছি। সামনে এসএসসি পরীক্ষা সব মিলিয়ে আমরা সকলেই ব্যস্ত থাকায় বিষয়টি খেয়াল করিনি তবে ভবিষ্যতে যাতে এরকম ভুল আর না হয় এজন্য আমরা সতর্ক থাকবো।”
এবিষয়ে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ময়নুল ইসলাম বলেন, এতোদিন যাবত ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি বেশ  সুনামের সাথে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে পড়ালেখা এবং এসএসসি পরীক্ষায় ফলাফলের মানও নিম্নমুখী। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এমন তথ্যগত ভুল সত্যিই দুঃখজনক। শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর অথচ প্রশ্নপত্রে এমন একটা ভুল যেটা শিক্ষকদের কারো চোখে ধরা পড়লোনা। আমি মনে করি এটা শিক্ষকদের উদাসীনতা। প্রশ্নপত্রে  ডোমার, নীলফামারীর পরিবর্তে দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড় লেখাটা সমুচিত হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারে না।
বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ছাত্রীদের অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, গত কয়েক বছর ধরে ডোমার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাসমূহ দেবীগঞ্জ অলদিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রশ্ন-পত্রেই নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডোমার উপজেলার একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন, এই তথ্যগত ভুল একই দিনে আরেকটি প্রশ্নপত্রে ভুলের বিষয়টি ভাইরাল হয়েছে পার্শ্ববর্তী পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার অলদিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষার রচনামূলক প্রশ্নে। সেখানে লেখা হয়েছে, ডোমার অলদিনী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এখন জনমনে প্রশ্ন, মানুষ গড়ার কারিগর হয়ে যদি এমন ভুল করে বসে তাহলে তারা আমাদের বাচ্চাদের কি শিক্ষা দিচ্ছে, এবং এইসব বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ কি হবে? এমন প্রশ্ন এখন অভিভাবকদের মনে সমালোচনার ঝড় তুলছে। তারা বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি কামনা করছেন। যাতে করে কোমলমতি শিশুদের আগামী দিনের আলোর ভবিষ্যতের জায়গায় যেন অন্ধকারে হারিয়ে না যায়।
প্রশ্নপত্র ভুলের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম বলেন, আমি প্রধান শিক্ষিকাকে ফোন দিয়েছিলাম ওনি বলেছেন এটা একটা মিসটেক হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রশ্নপত্র তৈরি করার নিয়ম স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের, এটা একটা বড় ধরনের মিসটেক, এটার জবাব ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কতৃপক্ষ দিবে তাছাড়া ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজি স্যার কন্ট্রোল করে।
৪২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares