শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নওগাঁয় যৌতুকের কারণে গৃহবধুর মাথার চুল কর্তন-স্বামী শ্রীঘরে

নওগাঁয় যৌতুকের কারণে গৃহবধুর মাথার চুল কর্তন-স্বামী শ্রীঘরে

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মহাদেবপুরে যৌতুকের দাবিকৃত চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় এক গৃহবধূর মাথার চুল কেটে নির্যাতন করার ঘটনায় স্বামী ইমরান আহম্মেদ (৪৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার সকাল ১০টায় মহাদেবপুর উপজেলার জোয়ানপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত ইমরান আহম্মেদ মহাদেবপুর উপজেলার জোয়ান পুর গ্রামের এস.এ রকিব এর ছেলে বলে জানা গেছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ বছর পূর্বে নিয়ামতপুর উপজেলার কাপাষ্টিয়া (উত্তরপাড়া) গ্রামের ছাফাত আলীর মেয়ে পপি আক্তার (৩৫) এর সঙ্গে পাশে উপজেলার মহাদেবপুর এলাকার জোয়ানপুর গ্রামের এস.এ রকিব এর ছেলে ইমরান আহম্মেদ এর সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে যৌতুক লোভী স্বামী ইমরান যৌতুক এর কারণে পপিকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে। পপি নিরুপায় হয়ে কয়েক দফায় টাকা এনে দেয়। পরিশেষে গত শুক্রবার ইমরান পপিকে ২ লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দিতে চাপ সৃস্টি করে । পপি উক্ত দাবীকৃত যৌতুকের টাকা এনে দিতে অসার্মথ্য প্রকাশ করলে পাষন্ড যৌতুক লোভী স্বামী ইমরান পপিকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সহযোগিতায় শারীরিক নির্যাতন করে তাকে জখম করে। একপর্যায়ে গত শরিবার (৪জুন) গভীর রাতে স্বামী ইমরানের সাথে পপির চরম বাকবিতন্ডা হয়। নির্যাতনকারীরা পপির সারা শরীরে গরম তেল ছিটিয়ে দিয়ে শরীরে ফুসকা ও এলোপাতারী মারপিট করলে পপি আক্তার প্রায় জ্ঞান শূন্য হয়ে পরে। এ সময় স্বামী ইমরান সহ অন্যান্যরা কেঁচি দিয়ে পপির মাথার সব চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। পপির দু‘টি কন্যা শিশু নশীম (১১) ও তাশিম (৭) কে ঘর থেকে বের করে দিয়ে পপিকে ঘরে তালা দিয়ে আটকিয়ে রাখে। রবিবার প্রতিবেশির সহযোগিতায় পপি ঘর থেকে বের হয়ে মহাদেবপুর থানায় মোবাইল করলে পুলিশ এসে পপিকে উদ্ধার করে মহাবেপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয় এবং স্বামী ইমরানকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ পপি বাদি হয়ে গতকাল রবিবার মহাদেবপুর থানায় স্বামী সহ আরও দু‘জনকে আসামি করে মামলা করে। উল্লেখ্য উক্ত আসামির বিরুদ্ধে আরও একটি নারী শিশু নির্যাতন মামলা আদালতে চলমান আছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ইতোপূর্বে আসামী ইমরানের নির্যাতনের কারণে তার প্রথম স্ত্রী মৌসুমি এক সন্তান নিয়ে ইমরানকে পরিত্যাক করে বাড়ি থেকে চলে গেছে বলেও জানা গেছে। মহাদেবপর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‘সি) আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, উপজেলার জোয়ানপুর গ্রাম থেকে পপি আক্তার নামে এক গৃহবধু আমার নিকট ফোন করলে আমি তাৎখনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে দিয়ে ভিকটিম পপিকে উদ্ধার করে মহাবেপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। পরে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামি ইমরান কে আটক করি। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে মামলা করলে রবিবার বিকালে আসামি ইমরানকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

১০৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares