বুধবার- ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা’র বিরুদ্ধে ১৪ কাউন্সিলরদের সংবাদ সম্মেলন

সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা’র বিরুদ্ধে ১৪ কাউন্সিলরদের সংবাদ সম্মেলন

দুলাল সরকার, সৈয়দপুর-নীলফামারী প্রতিনিধি ঃ নীলফামারীর প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা সৈয়দপুর পৌর মেয়র রাফিকা জাহান আকতার বেবির বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ৩০ মার্চ ওয়াপদা মোড় সংলগ্ন কাউন্সিলর শাহিন মার্কেটে বেলা ১১.০০ টায় ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। পৌর প্যানেল মেয়র-১ মোঃ শাহিন হোসেনের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে মেয়রের তিন বছরের দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলন বিভিন্ন চিত্র কাউন্সিলররা তুলে ধরেন। মেয়রের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বেহাল্লাপনা সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। তিনি (মেয়র রাফিকা) অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যক্তিগত চার জন পিএস রেখেছেন। মেয়রের আত্মীয় স্বজন ও গৃহকর্মী ১৫ জনের নামে তিনি নিজে বেতন উত্তোলন করে থাকেন। মেয়রের ব্যক্তিগত গাড়ির তেল ও ড্রাইভারের বেতন পৌর তহবিল থেকেই গ্রহণ করে থাকেন এবং মেয়রের ব্যবহৃত গাড়ি সৈয়দপুরের বাহিরে ঢাকা বা অন্য কোথাও পারিবারিক কাজে ব্যবহারকালীন সময়েও পৌরসভার ফান্ড থেকে তেলের টাকা গ্রহণ করে থাকেন। সৈয়দপুর পৌর এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। বিশেষ করে তামান্না মোড় হতে ওয়াপদা মোড় এবং দিনাজপুর রোড হতে বসুনিয়া বাড়ির মোড় পর্যন্ত খানা-খন্দকে পরিপূর্ণ। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। পৌরসভার নামিয় সম্পত্তি যাহা চেলুপাম্প নামে পরিচিত সেটি বিগত পরিষদের মামলা থাকা সত্তে¡ও বর্তমান মেয়র রাফিকা জাহান মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পুনরায় পূর্বের ব্যক্তিকে লিজ দেন । সৈয়দপুর পৌরসভার বিভিন্ন বহুতল ভবন ও বড় বড় মার্কেট হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে মালিককে ডেকে রিভিউ কমিটির অনুমোদন ছাড়াই একক সিদ্ধান্তে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কম রেটে ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। যাহা পৌর আইন পরিপন্থী। সৈয়দপুর রেল বাজারের নির্মানাধীন বিভিন্ন দোকান ও মার্কেট নির্মানাধীন বিল্ডিংয়ের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে চিঠি দ্বারা নোটিশ করা হয়। পৌর বিধি লঙ্ঘন করে মন মর্জি মোতাবেক মোটা অর্থ নিয়ে দোকানের নাম পরিবর্তন করা হয়। উল্লেখ্য যে, যার নাম পরিবর্তন করা হলো বছর না ঘুরতেই মোটা অংকের টাকা নিয়ে নাম পরিবর্তন করা হয়। (যেমন-ঢাকা টেইলার্স, আবুল খায়ের সহ অন্যান্য দোকান) মেয়র রাফিকা’র বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদে তার পরিবারের সদস্যগণ ইতিপূর্বে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন এবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। গত ১৪ আগষ্ট তারিখে পৌর পরিষদের কাউন্সিলরগণ একত্রে স্বাক্ষর করেন মেয়র রাফিকা জাহান আক্তারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সহিত পৌরসভার পরিচালনা প্রসঙ্গে মেয়রের বরাবরে পত্র দেন। সেই অভিযোগে লেখা ছিল মেয়রকে পরিষদ মূখী হতে হবে। প্রতিদিনের টোলের সমুদয় টাকা প্রতিদিনই ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। পৌরসভার ভেকু টেগের সংগৃহীত টাকা ভেকু টেগের নির্দিষ্ট একাউন্টে প্রতিদিন জমা করতে হবে। যানবাহন শাখা, সাধারণ শাখা, নাম খারিজ শাখা, জন্ম নিবন্ধন শাখাসহ প্রতিটি শাখার দৈনন্দিন সংগৃহিত টাকা স্বচ্ছতার সহিত প্রতিদিনই ব্যাংকে জমা করতে হবে। নক্সার ফি প্রতিদিন রাজস্ব একাউন্টে জমা করিতে হইবে। মাষ্টার রোল কর্মচারীদের বেতন ভাতাদি নিজ নিজ স্বাক্ষরে উত্তোলন করিতে হইবে। একজনের বেতন অন্যজন উত্তোলন করিতে পারিবেন না। মেয়রের অফিসের প্রয়োজনে ঢাকা সফরের ক্ষেত্রে গাড়ী ব্যবহৃত করিতে পারিবেন না। কাজের নামে ঢাকায় দিনের পর দিন কাল ক্ষেপন করিয়া আয়েশ ফ‚র্তি করা যাবে না। এদিকে কাউন্সিলরদের যৌথ স্বাক্ষরিত এসব বিষয়াদি মেয়র রাফিকা মেনে চলার অঙ্গিকার করিলেও পরবর্তীতে সকলকেই বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে আসছেন। তাই কাউন্সিলররা মেয়র রাফিকা জাহান আক্তারের কুরুচিপূর্ণ ভিডিও ক্লিপ, স্বেচ্ছারিতাসহ পৌরসভা পরিচলনে নানা দূর্নীতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। প্যানেল মেয়র-১ মোঃ শাহিন হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর আবুল কাসেম সরকার দুলু, জোবায়দুর রহমান শাহিন, আব্দুল খালেক সাŸু, এরশাদ হোসেন পাপ্পু, মঞ্জুরুল আলম, শাহিন আকতার, মানিক, ফরহাদ, জোবায়দুল ইসলাম মিন্টু, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর কাজী জাহানারা, মঞ্জুয়ারা, ইয়াসমিন ও শাকিলা আক্তার।

 

১৯০ বার ভিউ হয়েছে
0Shares