মঙ্গলবার- ১৮ই জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৪ঠা আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সংকট; একাধিক বৈঠকে মেলেনি সুফল

সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সংকট; একাধিক বৈঠকে মেলেনি সুফল

হাফিজুল ইসলাম লস্করঃ সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সংকটের কারণে গত ৯-১০ থেকে দুর্ভোগে পড়েন সিএনজিচালিত গাড়ির চালকেরা। সেই সাথে সিএনজি চালিত যানবাহন চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। তবে আজ বুধবার (৩১ জানুয়ারী) সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় সিএনজিচালিত গাড়িগুলোর চালকদের মাধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। ফিলিং স্টেশনগুলোতেও সিএনজিচালিত গাড়ির লম্বা লাইন পরিলক্ষিত হয় নাই।
জানা যায়, সিলেটের সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছিলো চলতি মাসের ২১ তারিখ থেকে। ফলে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও গ্যাস পেত না অনেক গাড়ি। গাড়ির লাইন এত দীর্ঘ হত যে তা পাম্প ছাড়িয়ে বাজার ছাড়িয়ে লোকালয়ে চলে যেতো। ফলে একদিকে বাড়তো যাত্রীদের ভোগান্তি। আর অন্যদিকে যানযটের কারণে ভোগান্তি বাড়তো সাধারণ পথচারীদের। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস না পেয়ে অনেক সিএনজি চালক দিশেহারা হয়ে যেত। এবং পাম্পকর্মীদের সাথে অস্বাবিক আচরণ করতো। এমনকি যাত্রীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছিলেন।
মূলতঃ ফিলিং স্টেশনে এক মাসের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গ্যাস নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো। এ অবস্থায় ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, পাম্পগুলোর জন্য প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাস বরাদ্দ (লিমিট) দেওয়া হয়। সেই বরাদ্দ শেষ হয়ে গেলে সেই পাম্প পরবর্তী মাস না আসা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হয়। ফলে যেসব পাম্প তখনো খোলা থাকে সেই সব পাম্পে গ্যাসের জন্য গাড়ির প্রচন্ড চাপ তৈরি হয়। শত শত গাড়ির লাইন অনেক দূর পর্যন্ত চলে যায়। গাড়ি চালকের সাথে যাত্রীরাও ভোগান্তির শিকার হন। দিনের অনেকটা সময় গ্যাস নিতে গিয়ে নষ্ট হয়ে যায় বলে জানান চালকরা।
সিএনজি ফিলিং স্টেশন পরিচালনার সাথে জড়িত এক ব্যবসায়ী জানান, ২০২৪ সালে এসেও সিলেটের সিএনজি পাম্পগুলো ২০০৭ সালে নির্ধারিত বরাদ্দ অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে। অথচ ২০০৭ সালের পর ২০২৩ সাল পর্যন্ত গাড়ির সংখ্যা ও মানুষের চলাচল ব্যাপক পরিমাণে বেড়েছে। কিন্তু গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, সেই ২০০৭ সালের ডিমান্ড অনুযায়ী। ফলে মাসের শেষের দিকে এসে ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস সংকট দেখা দিচ্ছে। বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য অনেক বার চিঠি লেখা হয়েছে কিন্তু কোন সুফল আসেনি।
পেট্রোলিয়াম ডিলারস্‌, ডিস্ট্রিবিউটরস্‌, এজেন্টস্‌ এন্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন- সিলেটে প্রতি মাসের ১৫ বা ১৬ তারিখের পরেই গ্যাস পাম্পগুলোর সরবরাহ কমতে শুরু করে। শেষ দিকে এসে গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দেয়। যেসব পাম্পে গ্যাস থাকে সেগুলোতে প্রচন্ড ভিড়ের সৃষ্টি হয়। গ্যাস বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিসন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেডের সঙ্গে আমরা একাধিকবার বৈঠক করেছি। কিন্তু সুফল পাইনি। তারা জাতীয় সংকটের দোহাই দিয়েছেন। অথচ দেশের সিংহভাগ গ্যাস সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিডে সংযোজন হচ্ছে। কিন্তু সিলেটেই সেই গ্যাস সংকটে সিএনজি পাম্পগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে- যা খুবই দুঃখজনক।
১৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS