![রাজশাহীর বাগমারায় আলুর জমিতে লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হলেও কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা নেই রাজশাহীর বাগমারায় আলুর জমিতে লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হলেও কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা নেই](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2024/01/2-1.png)
রাজশাহীর বাগমারায় আলুর জমিতে লেট ব্লাইট রোগে আক্রান্ত হলেও কৃষি কর্মকর্তাদের দেখা নেই
![](https://spnewsbd.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাগমারায় লেট ব্লাইট আক্রান্ত রোগে আলু চাষীদের কপালে এবার চিন্তার ভাঁজ পড়ে যাচ্ছে। যে আলু চাষে তারা অধিক লাভের স্বপ্ন দেখেছিল, সেই স্বপ্ন এখন তাদের আশায় গুড়েবালি হয়ে দাড়িয়েছে। অধিক ঠান্ডা আর ঘন কুয়াশার কারণে আলুক্ষেতে ‘লেট ব্লাইট’ বা নাবি ধ্বসা আক্রমণ করেছে। নিয়মিত কীটনাশক প্রয়োগ করেও সমাধান না মেলায় বাগমারার কৃষকদের আজ দিশেহারা অবস্থা রয়েছে। তবে বাগমারা কৃষি অফিস বলছে,আপাতত ইউরিয়া ও সালফার জাতীয় সার প্রয়োগ বন্ধ এবং পানি সেচও বন্ধ রাখতে হবে তবেই মিলবে সমাধান। অপরদিকে কৃষকেরা সার ও কীটনাশকের পাশাপাশি পচন রোগ দমনে স্প্রে করা ছত্রাকনাশক ঔষধ কিনতে আরো বাড়তি খরচ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে বাগমারার কৃষকের জন্য। বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী,এ উপজেলায় ২২-২৩ অর্থ বছরে ৯,৯৯০ হে: জমিতে আলু চাষ হয়েছিল, গড় ফলন ২৬.৫৯ মে:টন অনুযায়ী উৎপাদন হয়েছিল ২,৬৫,৬৩৪ মে: টন। ২৩-২৪ অর্থ বছরে এ উপজেলায় আলু চাষ হয়েছে ১০,১০০ হে: জমিতে এবং গড় ফলন ২৬.৬ মে:টন অনুযায়ী উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২,৬৮,৬৬০ মে: টন। কিন্তু কৃষকরা বলছেন, এ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কোনভাবেই পূরণ হবেনা। কারণ, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে এবছর আলুর ‘লেট ব্লাইট’ বা নাবি ধ্বসা রোগ দেখা দেওয়ায় এবং কৃষি বিভাগ থেকে এ রোগের প্রতিকারে কোনরকম পরামর্শ না পাওয়ায় আমাদের আলু ক্ষেতের বিনিয়োগ ও পরিশ্রম ধুলোয় মিশে গেছে। গত বছরের আলুর দামে আমরা উদ্বুদ্ধ হয়ে আলু চাষের দিকে ঝুঁকেছিলাম কিন্তু আমাদের সে স্বপ্ন ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেছে। বাগমারা উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি বিলে কম-বেশি আলুর ক্ষেত লক্ষ্য করা গেছে,কৃষকেরা তাদের সর্বোচ্চ শ্রম বিনিয়োগ করে,কেউবা ধার-কর্জ করে এবার আলু চাষ করেছেন। আলু বিক্রি করে তারা ধার-কর্জের টাকা ফেরৎ দিবেন বলে আশায় ছিলেন। কিন্তু এখন তাদের ফসলের অবস্থা দেখে সবাই হতাশ হয়ে পড়েছেন। তারা এসব ঋণের টাকা কিভাবে পরিশোধ করবেন সে চিন্তায় তাদের নাওয়া-খাওয়া বন্ধ প্রায়। সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, মাড়িয়া ইউনিয়নের পাহাড়পুর, বৈলসিং, কুলিবাড়ি, বড়বিহানালী ইউনিয়নের প্রায় সকল গ্রাম, বাসুপাড়া ইউনিয়নের বাগমারা বিল,দেউলিয়া বিল সহ অন্যান্য সকল ইউনিয়নের কৃষকদের একই হাল হকিকত। সবার একই কথা আমরা এবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের কোনরুপ সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা জানান, আমাদের কেউ কোন পরামর্শ দেইনি, কারা বিএস (উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) কাউকে আমরা চিনিও না আমাদেরকেও তারা চেনে না। আমরা কাউকে কোনদিন মাঠে এসে কৃষকের সাথে কথা বলতে দেখিনি। বাসুপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের হাতেম আলী জানান, আমি প্রত্যেক বছর আলু চাষ করি, এবার একটু বেশিই করেছি কিন্তু আমার এবার শিক্ষা হয়ে গেছে। একই গ্রামের মোহাম্মাদ আলী, মেহের আলী, নমীর উদ্দিন, বাচ্চু মিয়ার সাথে কথা বলেও একই রকম মন্তব্য পাওয়া যায়। এদের মধ্যে অনেকেউ এনজিও থেকে লোন নিয়ে আলু চাষ করেছেন বলেও জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আব্দুর রাজ্জাক-এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই জানান,আমি সহ আমার কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শনে যায়, সেটার প্রমাণ আমাদের কাছে আছে আপনি অফিসে আসলে আমরা সব প্রমাণ দেখাব। মাঠ পর্যায়ের কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আবারো অফিসে যাওয়ার কথা বলেন। উল্লেখ্য,দিঘদিন ধরে বাগমারা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা এলাকায় তিন জন করে বিএস (উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা) থাকা সত্তেও কৃষকদের অভিযোগ তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন না।