বুধবার- ৩রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৯শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সিরাজগঞ্জে দুই কূলই হারালেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস

সিরাজগঞ্জে দুই কূলই হারালেন সাবেক মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুই কূলই হারালেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।
 মনোনয়ন না পেলেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি।   দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস তার ঈগল প্রতীক নিয়ে পরাজিত হন বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক  প্রার্থী শিল্পপ্রতি আব্দুল মমিন মন্ডল এর নিকট। তিনি  ৭৭ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে  বিজয়ী হয়েছেন। ২য় স্থান অর্জন করেছেন আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। তার ঈগল প্রতীক পেয়েছে ৭৩ হাজার ১৮৩ ভোট। এই নির্বাচনে আব্দুল লতিফ বিশ্বাস পরাজিত হয়ে ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ হারিয়ে এখন দিশেহারা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়,
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন না পেয়ে গত ২০২৩ সালের (২৮ নভেম্বর) জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তিনি উঠান বৈঠক, গণসংযোগ আর প্রচারণা করে নির্বাচনী মাঠ অনেকটা গরমও করে ছিলেন। ১৯৯৬-২০০১ ও ২০০৮-২০১৪ সালে দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে তিনি মন্ত্রী হওয়ায় তার জামাতা ও জামাতার ছোট ভাইয়েরা বেলকুচিতে নানা অপকর্ম ও দুঃশাসন করেছেন। এ কারণে সাধারণ মানুষ গত ৭ জানুয়ারী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রার্থীকে বিজয়ী করেছেন। আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের রাজনৈতিক জীবনী, তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসা আলহাজ আব্দুল লতিফ বিশ্বাস স্থানীয় সরকারেও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। দুই বার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পরে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে ১৯৯৬ সালে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে একই আসনে নির্বাচন করে পরাজিত হলেও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর তিনি ২৪ জানুয়ারি ২০০৯ সালে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং ২১ নভেম্বর ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হন। দলের ও সরকারের কোন দায়িত্ব না থাকলেও তিনি সকল দলীয় কর্মসূচীতে অংশ গ্রহণ করে সিরাজগঞ্জের রাজনীতিতে সক্রিয় ভুমিকা পালন করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তাকে দ্বিতীয় বারের মতো সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক পরে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার জন্য তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের স্ত্রী আশানুর বিশ্বাস বেলকুচি পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বর্তমানে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামীলীগের  সাধারণ সম্পাদক । তার জামাতা নুরুল সাজেদুল ইসলাম এমপি প্রার্থীর আশায় বেলকুচি উপজেলা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন।  জামাতার ছোট ভাই বেলকুচি পৌর সভার মেয়র মোঃ সাজ্জাদুল হক রেজা।
সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত এমপি আব্দুল মমিন মন্ডল বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সবাই ভোট কেন্দ্রে এসে উৎসর মুখরভাবে ভোট দিয়ে আমাকে বিজয়ী করেছেন এবং  আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এমপি ও মন্ত্রী থাকাবস্থায় নির্বাচনী এলাকায় যে অত্যাচার করেছে সাধারণ মানুষ ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিয়েছেন।
৭৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares