সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লালমনিরহাটে সরকারী বেসরকারি বিদ্যালয়সহ অধিকাংশ দপ্তরে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালুু হয়নি চলছে প্রতারণা

লালমনিরহাটে সরকারী বেসরকারি বিদ্যালয়সহ অধিকাংশ দপ্তরে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালুু হয়নি চলছে প্রতারণা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার প্রতি অতিগুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখলেও এই জেলায় সে ভুমিকাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দপ্তরগুলো। বাংলাদেশ
সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ’নাগরিক ও সরকারী কর্মচারীদের কর্তব্য‘ শিরোনামে ২১ (১) লেখা রয়েছে সংবিধান ও আইন মান্য করা, শৃঙ্খলা রক্ষা করা, নাগরিক দায়িত্ব পালন করা এবং জাতীয় সম্পদ রক্ষা করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। (২) সকল সময়ে জনগনের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।
দেশে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তন, তথ্য অধিকার আইন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলপত্র প্রণয়নের লক্ষ্যই হচ্ছে সরকারী স্বায়তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং বিদেশী অর্থায়নে পরিচালিত সরকারি এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এতে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্টা হবে।
সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি প্রবর্তন করছে। কিন্তু বেশির ভাগ সরকারী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সে পদ্ধতি তেমন না থাকায় শিক্ষক কর্মচারীরা নিজের ইচ্ছা মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হচ্ছন। ফলে শিক্ষার মান ধব্সে যাচ্ছে।
গরিকেরা সুবিধা ভোগ করছে। সকল ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হয়নি । লালমনিরহাট জেলার কয়েকটি দপ্তর ছাড়া অধিকাংশ দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বায়তশাসিত দপ্তরে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালু হয়নি। ফলে সরকারী আধাসরকারী স্বায়তশাসিত দপ্তরে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষকেরা যথাসময়ে কর্মস্থলে যোগদান করছে না। জনগন ও শিক্ষার্থীরা সেবা পাচ্ছে না এবং প্রতারিত হচ্ছেন।
সরকার জনসেবা ও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য সরকারী, কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন,ভাতা পেনশন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করছেন। সরকারী দপ্তরগুলোতে ২ দিন সাপ্তাহিক ছুটি। এতদসত্বেও জেলা অধিকাংশ সরকারী দপ্তরে সকাল ১০টার আগে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যোগদান করেন না। এমনকি ১২ টায় গিয়ে ৯ টার সাক্ষর করেন।আবার এক শিক্ষকের স্বাক্ষর আর এক শিক্ষক করেন জানাযাচ্ছে।
তারা শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের  সাথে প্রতারনা ও আত্মপ্রবঞ্চনা করছেন। অথচ সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, প্রত্যেক সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারীকে সকাল ৯টা থেকে ৯:৪৫ মিনিটে কর্মস্থলে অবস্থান করে, অত:পর জরুরী প্রয়োজনে অফিস ত্যাগ করবেন। কর্মস্থলে অবস্থান করার জন্য বাসা ভাড়া দেয়া হয়। সরকারের এই নির্দেশনা অবজ্ঞা প্রদর্শন পূর্বক সরকারী কর্মচারী আচরণ বিধি লংঘন করে জেলার অধিকাংশ কর্মকর্তা, কর্মচারী যুগ যুগ ধরে চাকুরী করে আসছেন।
জেলার বিভিন্ন সরকারী দপ্তর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা ও শিক্ষকেরা অধিকাংশ নিজ নিজ কর্মস্থলে অর্থাৎ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে অবস্থান না করে রংপুর বিভাগীয় শহর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট শহর ও উপজেলায় অবস্থান করেন। অবস্থানস্থল থেকে ট্রেন, বাস, অটো, মোটরসাইকেল যোগে কর্মস্থলে উপস্থিত হন। ইহা সরকারী, কর্মচারী বিধি-মালা ও আইন লংঘন। এরা সংবিধান লংঘন এর পাশাপাশি, রাজস্ব প্রদানকরী জনসাধারন ও শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারনা ও আত্মপ্রবঞ্চণা করছেন। এজন্য লজ্জিত হচ্ছে না কিংবা অনুশোচনাও করছেন না। বরং এরূপ দুস্কর্মের জন্য নিজেকেই গৌরাম্বিত মনে করছেন। অনেক নির্লজ্জ ও নিকৃস্ট প্রতারক গর্বের সাথে বলে বেড়ায় পেপারে লিখলে কি হবে? আবার অনেকে সরকারী দলের নেতাদের দাপট দেখিয়ে চলছেন।

এ জেলায় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তা, নির্বাচিত এম.পি, উপজেলা চেয়ারম্যান , ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সুধী সমাজ, সমাজ কর্মী, অভিভাবক, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের ব্যক্তির দায়িত্ব হচ্ছে এই প্রবনতার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি দপ্তরে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালু করার মাধ্যমে সরকারী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষকদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

৩৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares