বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঝালকাঠিতে প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের ফাসি

ঝালকাঠিতে প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের ফাসি

গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন বশির,ঝালকাঠি:: ঝালকাঠির কুলকাঠি গ্রামে প্রেমিকা বেনজির জাহান মুক্তা (১৯) কে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে প্রেমিক মো. সোহাগ  (২৮) কে ফাসির আদেশ দিয়েছে আদালত।  মঙ্গলবার সকাল ১০.৪৫ মিনিটে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য: গত ৪ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) দুপুরে ঝালকাঠির নলছিটির বারইকরণ গ্রামের বাড়ি থেকে ফোনে ডেকে নিয়ে সামনের সড়কে ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী বেনজির জাহান মুক্তাকে (১৯) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ায় কলাপাড়ার নিশানবাড়িয়া গ্রামের সোহাগ মীর এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত মুক্তার বাবা পরের দিন দুপুরে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর র‌্যাব, পুলিশ ও ডিবি পুলিশের তিনটি টিম আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে। অবশেষে ফুফুর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ মীর জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, সে ঢাকায় একটি পলিথিন প্রস্তুতকারী কম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করেন।
তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে মুক্তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মুক্তাকে সে বিভিন্ন সময় নগদ টাকা ও পোশাক দিতেন। তাকে একটি মোবাইলফোনও দেন সোহাগ। মুক্তা তার কাছ থেকে এসব নিয়েও অন্য কয়েকজন যুবকের সঙ্গে মোবাইলফোনে কথা বলতো। বিষয়টি জানতে পেরে সোহাগ মুক্তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।
বিয়েতে মুক্তা রাজি ছিল না। ইদানিং তার সঙ্গে মুক্তা যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সোহাগ ঢাকা থেকে ৪০০ টাকায় একটি চাকু কিনে লঞ্চে করে ৪ ফেব্রুয়ারি বরিশাল যান। সেখান থেকে সকাল ৭টার মধ্যে তিনি ঝালকাঠি শহরের কলেজ খেয়াঘাট এলাকায় মুক্তার কলেজে যাতায়াতের পথে অবস্থান নেয়। মুক্তা সকালে কলেজে আসার সময় তার পথরোধ করে কথা বলে সোহাগ। সোহাগের কোনো কথাই মুক্তা না শুনে কলেজে চলে যায়। এতে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি।
পরে কলেজ থেকে ফেরার পথে মুক্তার গ্রামের বাড়ি বারইকরণ এলাকায় অবস্থান নেন সোহাগ। মুক্তা বাড়ি যাওয়ার সময় তার কাছ থেকে মোবাইলফোনটি কেড়ে নেন সোহাগ। মুক্তা তার কাছে ফোনের সিমটি দাবি করে। সিম ফেরত না দেওয়ায় মুক্তা বাড়িতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরই মুক্তার বড় বোনের মুঠোফোনে কল করে সিমটি নেওয়ার জন্য স্থানীয় কাপুড়িয়া বাড়ির সামনে বটগাছতলায় মুক্তাকে আসতে বলেন সোহাগ। মুক্তা আসলে তাকে চাকু দিয়ে আঘাত করেন তিনি।
সোহাগ একাই মুক্তাকে খুন করেন। পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মুক্তাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতে হাজির করা হবে।

৮২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares