মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগে বিদ্রোহীদের মদদদাতা আসাদ  

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগে বিদ্রোহীদের মদদদাতা আসাদ  

সারোয়ার হোসেন,নিজস্ব প্রতিবেদক রাজশাহী:রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের মদদদাতা আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনাময় গোছানো মাঠ নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে খোদ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যে। নেতাকর্মীদের অভিযোগ,সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদ্রোহীদের মদদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সম্ভবনাময় গোছানো মাঠে নামিয়ে ফের নষ্ট করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। ফলে দিন দিন যেন জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনে মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদ চরম আকার ধারণ করছে।
এতে করে কেউ প্রর্কাশে আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করেছেন আবার কেউ প্রর্কাশে না করে গোপনে অর্থ সহায়তা দিয়ে করছেন নৌকার বিরোধিতা বলেও একাধিক নির্ভর যোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলে জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে লবিং গ্রুরুপিং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন করবে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ কে। জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নৌকার এমপিরা নিজ নিজ এলাকায় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করে তুলতে দিনরাত মাঠে সভা সমাবেশের মাধ্যমে কঠোর প্ররিশ্রম করে যাচ্ছেন। আর সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রতিটি এমপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী বগি মার্কা নেতাদের দাঁড় করিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে ফাটল ধরাচ্ছেন।
এমপি তো দূরের কথা ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ার মতো যাদের যোগ্যতা নাই তাদের কে এমপি হওয়ার (ক্ষোয়াব) দিবাস্বপ্ন দেখিয়ে মাঠে নামিয়ে আওয়ামী লীগের রানিং এমপিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদ সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন সাবেক এই নেতা আসাদ। নেতাকর্মীদের অভিযোগ,গত জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে শুরু করে পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রর্কাশে বিদ্রোহী প্রার্থী দাঁড় করিয়ে ভোট করিয়েছেন আসাদুজ্জামান আসাদ। যার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসাদের নাম রেখেছেন (বিদ্রোহীদের গডফাদার)আসাদুজ্জামান আসাদ। শুধু তাই না, সম্প্রতি রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকার প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধেও বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান নামের একজন বগি নেতাকে দাঁড় করিয়ে প্রর্কাশে নৌকা ফুটো করার চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সক্রিয় ভাবে মাঠে থাকায় বিদ্রোহীদের মুখে কুলুপ পড়ে যায়। তার পরেও থামেনি বিদ্রোহীদের গডফাদার আসাদের ষড়যন্ত্র। তিনি পৌরসভা নির্বাচনে তানোর মুন্ডুমালা পৌরসভায় নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে জগ মার্কা দিয়ে মাত্র ৬৭ভোট বেশি পেয়ে নৌকা ফুটো করান। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গোদাগাড়ী ও তানোরের প্রতিটি ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করিয়ে নৌকা ফুটো করার চেষ্টা করেছিলেন আসাদ।
এমনকি তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রাব্বানী ডাইরেক্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, অনেক দিন ধরে মোটরসাইকেলে চড়া হয়নি “এবার একটু মোটরসাইকেলে চড়ে খেলতে চাই” ইনশাআল্লাহ আমরাই জিতবো, আর যখন হোন্ডা পামচার হয়ে গেলো তখন পোস্ট দিলেন”চুরি করা ভোটে চেয়ার দখল করে কতদিন,প্রশ্ন- আপনি একজন তৎকালীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে কি ভাবে নৌকার বিজয়ী প্রার্থীকে ভোট চোর বললেন? আওয়ামী লীগের মনোনীত জনপ্রতিনিধিদের ভোট চোর বলা মানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট চোর আখ্যা দেওয়া নয় কি?। অথচ গোলাম রাব্বানীকে পরপর দুইবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
কিন্তু তৎকালীন তার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মামুন গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ভোট করে গোলাম রাব্বানীকে ফেল করান। আজ সেই মামুনের সাথে হাত মিলিয়ে গোলাম রাব্বানী আসাদের নিয়ন্ত্রণে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন রাজশাহী-১ আসনের তিন বারের সফল এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। অবশ্য ইউপি নির্বাচনে দু-একটি ও পৌরসভায় দুটি নৌকা ফুটো করতে সক্ষম হয়েছিলেন আসাদুজ্জামান আসাদ। এতে করে একের পর এক আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী দাড় করিয়ে দিয়ে বিরোধিতায় অতিষ্ঠ হয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ করলে,গত মাসের ১৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আসাদকে ডেকে সাবধান করে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অথচ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে জনসভার পরের দিন থেকেই ফের শুরু হয়ে যায় আসাদের আওয়ামী লীগের রানিং এমপিদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার। জেলার এই সাবেক নেতা আসাদ রাজনীতির মাঠে পদপদবী হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। যার জন্য মিথ্যা অপপ্রচার করতে করতে তারা আওয়ামী লীগের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কেও ভোট চোর বলতে মুখে বাঁধছেনা। আবার তারাই বড় গলায় গলা বাজিয়ে দাবি করেন প্রকৃত আওয়ামী লীগ বলে তৃণমূল আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা চাপাক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র আয়েজ উদ্দিন বিশ্বাস বলেন,গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকন হাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাড়ানো জনপ্রিয় মেয়র আব্দুল মজিদ মন্ডলকে নির্বাচন থেকে বসিয়ে দেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। কিন্তু মুন্ডুমালা ও গোদাগাড়ী পৌরসভার আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনীত মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাড়ানো সেভেন স্টার চক্রের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কোন মতে বসাতে পারেন নি সেভেন স্টার চক্র। এতেই জনগণ বুঝে গিয়েছিলো নৌকার প্রার্থীকে ডোবানোর জন্য বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে তাদের রেখে ছিলেন সেভেন স্টার তথা বিদ্রোহী আসাদ চক্র।
তানোর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশীদ ময়না বলেন, যেখানে কাঁকন হাট পৌরসভার তিন বারের সফল জনপ্রিয় মেয়র আব্দুল মজিদ মন্ডলকে হাইকমান্ডের নির্দেশে বিদ্রোহী প্রার্থী থেকে বসিয়ে দেন এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। সেখানে হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করে আওয়ামী লীগের নৌকা ডোবাতে সেভেন স্টার বাহিনী  বিদ্রোহী প্রার্থী
হিসেবে সাইদুর ও মনিরুল ইসলাম বাবুকে দাঁড় করিয়ে ভোট করিয়েছেন। যদি তাঁরা আওয়ামী লীগ করে তাহলে দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে কি করে ভোট করে তাঁরা।
আসলে এরা ভোট করতে আসেনা,এরা আওয়ামী লীগের নৌকা ফুটো করে নিজের স্বর্থ হাসিল করতে এসব করে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারার কাছে বর্তমান জেলা উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে লবিং গ্রুরুপিং কোন্দলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব বিবাদ নাই, উত্তরবঙ্গের মধ্যে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠন সবচেয়ে শক্তিশালী। এখানে বিএনপি জামাত মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠার অবস্থায় নাই,তাদের মাজা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একে অপরের কাঁধে কাঁধ হাতে হাত রেখে কাজ করছেন।
এখানে বিএনপি জামাত মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠতে না পারলেও নিজ দলের কিছু ছিটকে পড়া ভূঁইফোড় কিছু কর্মীদের নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ আওয়ামী লীগের মনোনীত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে গিয়ে স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নৌকা ডোবাচ্ছেন তাঁরা। যার সবগুলো তথ্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আছে। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরে সকল বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দলীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে কেন্দ্রীয় নেতারা।
৩৭৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares