শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ডোমারে শহীদ রুমি’র জন্মতিথি উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন

ডোমারে শহীদ রুমি’র জন্মতিথি উদযাপন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন

 রবিউল হক রতন , ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমারে প্রথমবারের মতো বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রুমি’র জন্মতিথি উদযাপন উপলক্ষে ডোমারের কৃতি সন্তান অনুষ্ঠানের মূল উদ্যােক্তা ‘তিনবাংলা’ বিশ্ব সংগঠন কবি কথক ও গ্লোবাল সভাপতি সালেম সুলেরীর আয়োজনে শহীদ রুমি’র পক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার ১০ ফেব্রুয়ারী বেলা সাড়ে এগারোটায় শহীদ ধীরাজ ও মিজান স্মৃতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ডোমার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মনছুরুল ইসলাম দানু’র সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল সভাপতি তিন বাংলা, আমেরিকা প্রবাসী কবি কথক সালেম সুলেরী।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা আ”লীগের সহ-সভাপতি অধ্যাপক খায়রুল আলম বাবুল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরননবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, শহীদ ধীরাজ ও মিজান স্মৃতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক আনজারুল হক, ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য উজ্জ্বল কানজিলাল, মামুনুর রশীদ বসুনিয়া সজীব, রাশেদুজ্জামান রাশেদ, এবং বেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ডোমারের একজন পুত্রবধু, ওনার স্বামী প্রকৌশলী শহীদ শরীফ ইমাম উপজেলার ৯ নং সোনারায় ইউনিয়নের খাটুরিয়া গ্রামের সন্তান এবং ওই দম্পতির কৃতি সন্তান ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রুমি। ৭১ এর মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে তিনি জীবন দান করেন, ঐতিহাসিক ক্র্যাক প্লাটুনের এই যোদ্ধা ডোমারের গর্ব। ১৯৫১ এর ২৯ মার্চ তিনি পূণ্যভুমিতে জন্মগ্রহণ করেন, মাত্র ২০ বছর বয়সে মহান মুক্তিযুদ্ধে অদম্য ভূমিকা রাখেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর আমেরিকা যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন শহীদ রুমি, সেখানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য ইলিনর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয়,কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যুদ্ধ বাঁধলে তিনি ঘুরে দাড়ান। তিনি তার পিতা মাতাকে বলেন আগে দেশ,পরে বিদেশ। নিজের জন্মভূমিকে শত্রুমুক্ত করে তবেই বিদেশ যাবেন। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে ভারতের আগরতলা মেলাদহে গিয়ে গেরিলা প্রশিক্ষণ শেষে ক্র্যাক প্লাটুন এর সদস্যপদ লাভ করেন। ঢাকায় একাধিক অপারেশনে পাক সেনাদের ভিত্তি কাঁপানো রুমি একটি কমান্ডো অপারেশনে শত্রু বাহিনীর ৬ জন সৈন্যকে হত্যা করেন। অতঃপর ৩০ আগষ্ট মধ্যরাতে পাক বাহিনীর হাতে আটক হন। সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ঘাতকেরা গায়েব করে দেন। ঐ রাতেই রুমির পিতা শরীফ ইমাম গ্রেফতার ও পরে শহীদ হন এবং সহোদর সাইফ ইমাম জামীও গ্রেফতার হয়ে আবার মুক্তি পায়। পরবর্তীতে শহীদ শাফি ইমাম রুমি’র বিচারকার্য সম্পন্ন হয় এবং ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল আলী আহসান মুজাহিদকে ফাঁসি প্রদান করেন।
শহীদ রুমি’র মাতা জাহানারা ইমাম একজন লেখিকা, ‘একাত্তরের দিনলিপি’ একটি প্রামাণ্য বই যা রক্তাক্ত ইতিহাসে পূর্ণ। তিনি বাংলাদেশে ঘাতক দালাল নির্মূলে মূখ্য ভূমিকা রাখেন। এরপর ‘গণ আদালত’ গঠনের মাধ্যমে বিচারের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেন। কার্যত বাংলাদেশে ‘ইমাম পরিবার’ মুক্তিযুদ্ধের স্মারক পরিবাররুপে স্বীকৃত, যদিও ডোমারবাসীর সঙ্গে পরিবারটির সংশ্লিষ্টতা অনেকটা শুন্যের কোটায়।
প্রথমবারের মতো ‘তিন বাংলা’ একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে শহীদ রুমি’র ৫২ তম  জন্মতিথি উদযাপন করবে ডোমারের খাটুরিয়ায় এবং নীলফামারীতে। বর্তমান ও নতুন প্রজন্মকে তরুণ রুমি’র বীরত্বগাঁথা কাহিনী জানানো জরুরী, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রুমি’র আদর্শ ও প্রত্যায় বিশেষ প্রেরণা যোগাবে।
সেই লক্ষ্যে নিয়ে স্বাধীনতার মাসে ব্যপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে এর মধ্যে শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ও লুৎফুন্নেসা আব্বাস পদক প্রদান।
এর পাশাপাশি শহীদ রুমি স্মরণে তিনবাংলা সন্মাননা প্রদান করা হবে ২০২২ইং সালে উপজেলার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৩শত ৯ জন কৃতি ছাত্র ছাত্রীদের।
ডোমার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের স্বাধীনতা পরবর্তী সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষকদের এবং বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি। ডোমারের পিএইচডি -ধারী কৃতি কুশীলববৃন্দসহ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক ও বর্তমান কমান্ডারবৃন্দদের।
২৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS