বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোরে ভেস্তে গেছে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান

তানোরে ভেস্তে গেছে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে সরকারি ভাবে ধান চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ভেস্তে গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত নভেম্বর থেকে সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হলেও এক ছটাক ধান সংগ্রহ করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট খাদ্য বিভাগ এবং চাল সংগ্রহের জন্য ২৮ টি চাল কল থাকলেও মাত্র ৮ জন চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এতে করে সংশ্লিষ্ট মিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন এবং বিগত সময়ে যারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যারা ধান গুদামে দিয়েছিলেন, কিন্তু এবার না দেওয়ার কারনে ওই চক্রকে গুদামে কোন ভাবেই যেন ব্যবসা না করতে পারে সে ব্যাপারে নজর দিতেও দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, উপজেলায় দুটি খাদ্য গুদাম রয়েছে। পৌর সদর গোল্লাপাড়া ও কামারগাতে রয়েছে গুদাম। গত বছরের নভেম্বর মাসের ১৭ তারিখ থেকে ধান চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। যা আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে।
খাদ্য অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় দুটি গুদামে ১ হাজার ৪৫১ মে:টন ধান সংগ্রহের বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতি কেজি দাম ধরা হয় ২৮ টাকা । আর চাল ৩৪৯ মে:টন  সংগ্রহের বরাদ্দ হয়। প্রতি কেজির দাম ধরা হয় ৪২ টাকা। উপজেলায় চাল কল রয়েছে ২৮ টি। এর মধ্যে মাত্র ৮ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ করেছেন। ৮ টি মিলারের বিপরীতে ১০০ মে:টন দশমিক ৫০ কেজি চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, সরকারী  ২৮ টাকা কেজি মুল্যে ধান কিনবেন। যার প্রতি মন ১১২০ টাকা। আবার গুদামে নিয়ে গেলে আদ্রতা নাই তো, ভেজে আছেসহ নানান তাল বাহানা। অথচ যখন বাজারে ধানের দাম কম ছিল, তখন ক্ষমতাসীন দলের লোকজন কৃষকের ধান দিয়েছেন। দলীয় নেতারা যে ভাবেই দিক কোন সমস্যা হয় না। কৃষক সরাসরি দিতে গেলে ঝামেলার শেষ থাকে না। এজন্য গুদামে কোনভাবেই কৃষকরা ধান দিবেন না। কারন বাজার মুল্য সরকারি মুল্য প্রায় সমান, আবার কখনো বাজার মুল্য বাড়তি। তাহলে কেন কৃষকরা ধান দিতে গিয়ে নানা ভাবে হয়রানির  শিকার হবেন। ফসল ফলাবে কষ্ট করে, আবার ধান দিতে ঝামেলা পোহাবে কেন। যার কারনে কৃষকরা সরকারকে ধান দিতে যায় না। তবে সরকারি ভাবে বিভিন্ন হাট বাজার থেকে ধান কিনতে পারবে। সেটা তো তারা করবেন না।
এদিকে বাজারের চালের দাম বেশি থাকার কারনে মিলারেরা চুক্তি করেন নি।
তানোর গোল্লাপাড়া খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা ওসিএলএসডি ওহেদুজ্জামান জানান, ধান সংগ্রহ হয়নি। এগুদামের সাথে কোন চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ করেন নি।
তবে কামারগাঁ গুদামের ওসিএলএসডি রেজাউল ইসলামের মোবাইলে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি।
মোহনপুর উপজেলার খাদ্য কর্মকর্তা ও তানোরের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য অফিসার নুরনবী জানান, আমি চলতি মাসের ১০ জানুয়ারি দায়িত্ব নিয়েছি। ধানের দাম বাজারে বাড়তি থাকার কারনে কৃষকরা ধান দেয়নি। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে যে কোন কৃষক ধান দিলে আমরা নিব। তানোর সদরের খাদ্য গুদামের সাথে কোন চালকল মালিক চুক্তি করেন নি। কামারগাঁ গুদামের সাথে ৮ জন চাল কল মালিক চুক্তি করেছেন। তার মধ্যে ৬ জন মিল মালিক ৭৪ মে: টন চাল দিয়েছেন। বাকি দুজন মেয়াদের আগে দিবেন। আর যে ১৮ মিল মালিক চুক্তি করেন নি তাদের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ আছে, বাতিল করা হবে। ওএমএসএর চাল নাকি গুদাম থেকে বের হচ্ছে না, সেটাই নাকি সংগ্রহ দেখানো হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান  ৬ জন ওএমএসএর ডিলারের মধ্যে ৫ জন ডিলার সদরের গুদাম থেকে চাল তুলেন। বাকি ১ জন কামারগাঁ গুদাম থেকে তুলেন। আর ৭৪ মে: টন সংগ্রহ হয়েছে। ওএমএসএর চাল কালো বাজারি করার কোন সুযোগ নেই, যারাই এমন করবেন কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS