বুধবার- ২৬শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১২ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাতের আঁধারে কৃষকের ২৫০০ চাল কুমড়ার গাছ কাটল দুর্বৃত্তরা

রাতের আঁধারে কৃষকের ২৫০০ চাল কুমড়ার গাছ কাটল দুর্বৃত্তরা

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: নেত্রকোনার কলমাকান্দায় রাতের আঁধারে মন্তোস সরকার নামে এক কৃষকের ২৫০০ চাল কুমড়ার গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
পরিবারের সবটুকু সঞ্চয় ব্যয় করে দেড় একর জমিতে চাষ করা চাল কুমড়ার ক্ষেত ধংস হতে দেখে হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন মন্তোষ। কৃষক মন্তোসের দাবি প্রতিবেশী কাঁচাধন সরকারসহ পাঁচ ছয়জন মিলে এ কাজ করেছে। তাদের সাথে তার পুরনো বিরোধ রয়েছে।খবর পেয়ে কলমাকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহীদুল ইসলাম শুক্রবার সকালে কৃষক উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে কৃষক মন্তোসের চাল কুমড়ার ক্ষেতটি পরিদর্শন করেছেন।কৃষক মন্তোস সরকার একই গ্রামের মৃত. মনোরঞ্জন সরকারের ছেলে। অভিযুক্তরা একই গ্রামের মন্তোসের প্রতিবেশী।
কৃষক মন্তোস জানান, বাড়ির পাশে দেড় একর জমিতে ২৫০০ চাল কুমড়ার গাছ লাগিয়েছেন। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। পরিবারের সবটুকু সঞ্চয় বাদেও ব্যয় মেটাতে কিছু টাকা ধার দেনা করতে হয়েছে। ইতিমধ্যে সবগুলো গাছে ফুল ধরেছে। কোন কোন গাছে ছোট ছোট কুমড়াও ধরেছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি পুরোদমে কুমড়া বিক্রি করতে পারতেন তিনি। এতে তার ১০-১২ লাখ টাকার কুমড়া বিক্রি হতো বলে জানান তিনি। কিন্তু বুধবার রাতে খেতের সবগুলো গাছের গোড়া কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সকাল থেকে গাছ শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। নিজের ঘামে শ্রমে গড়া কুমড়া খেতের এই অবস্থা দেখে হতবাক হয়েছেন মন্তোস। উপায়ান্তর না দেখে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন তিনি। তবে তার ধারণা প্রতিবেশী কাঁচাধন ও কৃষ্ণ চরণ পুরনো শত্রুতার জেরে  এ কাণ্ড ঘটিয়েছে।
মন্তোস আরও জানান, এখন ধার দেনা কিভাবে শোধ করবো। আর পরিবার নিয়ে কিভাবে চলবো। তবে অভিয়ুক্ত কাঁচাধনকে শুক্রবার বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি। মোবাইন নাম্বারও বন্ধ পাওয়া যায়। চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। পুলিশের খরব পেয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানান এলাকার লোকজন।
কলমাকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শহীদুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে জানান, খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।  ওই কৃষকের ক্ষেতটি দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। দেড় একর জমিতে চাষ করা ২৫০০ গাছের সবগুলো রাতের আঁধারে গোড়া কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোদে গাছগুলো শুকিয়ে পড়ছে। সবগুলো গাছ ফুল ধরেছে, কোনটায় ছোট ছোট কুমড়া ঝুলছে।
তিনি বলেন, এটা কোন মানুষের কাঝ হতে পারে না। যেকোন বিবেকবান মানুষ এই দৃশ্য দেখে হতবাক হবেন। শত্রুতা মানুষের সাথে থাকতে পারে। কিন্তু এভাবে গাছ কেটে দেওয়া অমানুষের কাজ।  এ ক্ষতি শুধু কৃষক মন্তোস সরকারের নয় এলাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় কৃষক মন্তোস থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর তদন্ত করে অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বিষয়টি অবহিত করলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ফারুক আহমেদ বলেন, আপনার কাছ থেকে ঘটনাটি প্রথম জানলাম। এটা আসলে এলাকার ক্ষতি হয়েছে। এমন কাজ যারা করে তাদের কঠোর সাজা হওয়া উচিত। আমি খোঁজ নিয়ে ওই কৃষককে যথা সম্ভব সহায়তা করবো।
১৩৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares