বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
রাজশাহীতে ৪ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা

রাজশাহীতে ৪ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা

ডেক্স নিউজঃ রাজশাহীর কেশরহাট পৌরসভার ৪ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করে হুমকিতে রয়েছেন বাদি। কেশরহাট বাজারের এফজে এন্টারপ্রাইজ নামের একটি মোটরসাইকেল শোরুমের ম্যানেজার মাহমুদ ইসলাম এ মামলা দায়ের করেন।

মামলায় ৪ জন কাউন্সিলরসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ১০ জনকে আসামী করা হয়েছে। বাকি ৫ জন অজ্ঞাত আসামী। এই মামলা তুলে নিতে বুধবার রাতে হলদাগাছি গ্রামে তিনজন আসামী মাহমুদকে হুমকি দেয়। মামলা তুলে না নিলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয় বলে বৃহস্পতিবার নিজের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন মাহমুদ।

মামলার এজাহারভূক্ত আসামীরা হলেন, পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাবের আলী, ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাবুল হোসেন, ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসলাম হোসেন, ১ নং ওয়ার্ডের একরামুল হক ও কাউন্সিলর সাবের আলীর সহকারি কোরবান আলী।

এদের মধ্যে বাবুল হোসেন পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। আর সাবের আলী জেলা যুবলীগের সহসাধারণ সম্পাদক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিএনপি ছেড়ে যুবলীগে যোগদান করেন।

মামলা ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর কেশরহাট বাজারের এফজে এন্টারপ্রাইজের মোটরসাইকেল শোরুমের ম্যানেজার মাহমুদ ইসলাম শোরুমের হিসাব-নিকাশ শেষ করে রাত পৌনে ১০ টায় দিকে বাড়ি ফিরছিলেন। শোরুম থেকে বের হয়ে প্রায় ১০০ গজ দুরে ব্রীজের উপর পৌঁছালে ৪ কাউন্সিলর ও তার লোকজন পথ রোধ করে পিস্তল ধরে চাঁদা দাবি করে। দিতে অস্বীকার করলে তাকে পিটিয়ে জখম করে তার কাছ থেকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকার ব্যাগ কেড়ে নেয়। পরে তার শোরুমের কর্মচারিরা মাহমুদকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনার পরের দিন ৩০ অক্টোবর এফজে এন্টারপ্রাইজের মালিক জামাল হোসেকেও হুমকি দেয় ওই কাউন্সিলররা। এ ঘটনায় ওই দিন তিনি মোহনপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। এছাড়াও এ ঘটনার একদিন পর রাতে আধারে ৪ কাউন্সিলের লোকজন কেশরহাট বাজারের জামাল হোসেনের নির্মাণধীন ভবনে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করে।

এ ঘটনায় থানায় একটি মামলাও করে জামাল হোসেন। এর পর চিকিৎসা শেষে গত ১ ডিসেম্বর মাহমুদ হোসেন আদালতে ৪ জন কাউন্সিলরসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মাহমুদ ইসলাম বলেন, আমি শোরুমের টাকা নিয়ে রাতে বাড়ি ফিরার পথে চারজন কাউন্সিলর তার লোকজন নিয়ে আমার পথ রোধ করে এবং বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ কেড়ে নেয়। এ সময় তারা আমাকে মারপিট করে জখম করে রাস্তার উপর ফেলে দেয়। আমি চিকিৎসা শেষে আদালতে মামলা দায়ের করেছি। এখন তারা এলাকায় প্রকাশ্যে চলাফেলা করছে। আমাকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। মামলা তুলে না নিলে গুলি করে মেরে ফেলবো বলেও হুমকি দিচ্ছে।

কেশরহাট এফজে শোরুমের মালিক জামাল হোসেন বলেন, তারা বেশ কিছু দিন আগে থেকে আমার কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলো। আমি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা প্রথমে হিজরা পাঠিয়ে আমার শোরুমে হামলা করায়। এ সময় আমাকে তারা মারপিটও করে। এর পর তারা আবার আমার ম্যানেজারের কাছ থেকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই সাখাওয়াত হোসেন জানান, আসামীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন। তাই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভাব হচ্ছে না। তবে হুমকি দেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এব্যপারে মোহনপুর থানার ইনচার্জ (ওসি) সেলিম বাদশাহ বলেন, আমি যোগদানের আগে এ ঘটনা। এছাড়াও মামলাটি আদালতে হয়েছে। আদালত মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলেছে। আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। তদন্ত শেষের পথে। দ্রুত প্রতিবেদন আদালতে পাঠাবো।

৫৭ বার ভিউ হয়েছে
0Shares