ঘোড়াঘাটে ত্রিমোহনী ব্রিজ সংলগ্ন রাবার ড্রাম স্থাপনের দাবি

ঘোড়াঘাটে ত্রিমোহনী ব্রিজ সংলগ্ন রাবার ড্রাম স্থাপনের দাবি

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার তিরমোহনী ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় রাবার ড্রাম স্থাপনের দাবী জানিয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসী। পরিকল্পিতভাবে রাবার ড্রাম স্থাপন করা হলে কৃষি ফসল উৎপাদন ও মাছ চাষের সুযোগ পাবে এলাকার কৃষক ও মৎস জীবিরা। এটি কৃষি ও পরিবেশের জন্য উপকারী হবে। তাই এলাকাবাসীর দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন তারা। তাদের দাবি, বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে এই এলাকার নিচু জমি প্লাবিত হয়, যা কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পরে। এছাড়া, পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের অভাবে আশপাশের গ্রামগুলোতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, যা স্থানীয়দের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। “প্রতি বছর বর্ষায় আমাদের ফসল ডুবে যায়। রাবার ড্রাম থাকলে আমরা অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ করতে পারব এবং সেচের সুবিধাও পাব। “বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রæত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কামনা করেছেন তারা। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা, নবাবগঞ্জ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী রংপুরের পীরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলা ঘেষে বয়ে গেছে এই করতোয়া নদী। খনন আর সংস্কারের অভাবে নদীর প্রবাহমান স্তর অনেকটা কমে গেছে। বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানিতে নদীটি ভরে যায়। এর কারনে নদীর তীর সংলগ্ন শত শত বিঘা কৃষি জমির ফসল পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। আবার বর্ষা মৌসুম শেষে শুকনো মৌসুম আসলে দুই ধারের কৃষি জমিগুলো আবাদের উপযোগী হয়ে পড়ে। উৎপাদনের সাথে জড়িত থাকা কৃষকেরা জানান, ত্রিমোহনী ঘাট সংলগ্ন করতোয়া নদীতে রাবার ড্রাম স্থাপন করা হলে বর্ষা মৌসুমের পানি ধরে রেখে ওই পানি দিয়ে শুকনো মৌসুমে রবি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। অপরদিকে দৃষ্টিনন্দন এই ত্রিমোহনী ঘাট সংলগ্ন করতোয়া নদীতে সেতুটি ভ্রমণ পিপাসুদের দর্শনীয় স্থান হিসেবে চিহ্নিত হবে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো”র তথ্য মতে, করতোয়া নদী মহাস্থানগড়ের কাছে রাজশাহী বিভাগ সহ রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া, গাইবান্ধা জেলা উৎস দেওনাই-চাডালকাটা-যমুনেশ্বরী নদী মোহনা বাঙালি নদী দৈর্ঘ্য ১২২ কিলোমিটার (৭৬ মাইল) করতোয়া নদী বা করতোয়া নিম্ন নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১২২ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১৪৪ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বন্যাপ্রবণ নদীটির প্রবাহের প্রকৃতি বারোমাসি এবং নদীতে জোয়ারভাটার প্রভাব নেই। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বা “পাউবো” কর্তৃক করতোয়া নদীর প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর (উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের) ১৪। করতোয়া নিম্ন নদীটি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার মিলনপুর ইউনিয়নে প্রবহমান দেওনাই-চাডালকাটা-যমুনেশ্বরী নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। এই নদী ক্রমান্বয়ে মিঠাপুকুর, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট, পীরগঞ্জ, পলাশবাড়ী, গোবিন্দগঞ্জ, শিবগঞ্জ, বগুড়া সদর, শাজাহানপুর ও শেরপুর উপজেলায় পৌছেছে। তীরবর্তী স্থাপনা এই নদীর। তীরে বগুড়া পৌরসভা, শেরপুর পৌরস-ভা, শিবগঞ্জ পৌরসভা, গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভা এবং দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌরসভা। এই নদীতে ব্যারাজ বা রেগুলেটর এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ কোন বাঁধ নেই। এ বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলার ৩ নং সিংড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাত হোসেন জানান, দীর্ঘদিনের দাবি ছিল করতোয়া নদীতে রাবার ড্রাম স্থাপনের, কিন্তু তা বাস্Íবে রূপ নেয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড দফায় দফায় ভাঙ্গন রোধে তদন্ত করেও তা আমলে নেয়নি। রাবার ড্রাম স্থাপন হলে কৃষি ফসল উৎপাদনে সুযোগ পাবে এলাকার কৃষকেরা। অপরদিকে ভাঙ্গন রোধও কমে যাবে। “এলাকাবাসীর দাবির বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রæত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।” ঘোড়াঘাটের ত্রিমোহ-নীসহ করতোয়া নদী তীরবর্তী গ্রামের কৃষকরা জানায়, করতোয়া নদীতে রাবার ড্রাম স্থাপন করার জন্য কর্তৃপক্ষ যেন জোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে ৪নং ঘোড়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান ভুট্টু সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, করতোয়া নদীতে রাবার ড্রাম স্থাপনের জন্য তিনিও দীর্ঘদিনের দাবি মনে করেন।

 

বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS