ভোলায় জনতা ও নেতা-কর্মীদের উপর সরাসরি গুলি করে ১ জনকে হত্যা করেছে- গোলাম নবী আলমগীর


ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে আঃ রহিম (৩৫) নামের একজন নিহত এবং শতাধীক আহত হয়েছেন। ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন।
গত কাল রবিবার (৩১জুলাই) সকাল দুপুর ২টায় জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী আলমগীরের বাসভবনে এক সংবাদ সন্মেলনে বলেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসুচির অংশ হিসাবে ভোলা জেলা বিএনপি লোডশেডিং ও জ্বালানি তেলের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করছিল।
এখানে প্রতিবাদ সভা শেষে একটি মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সেখানে পুলিশ তাদের মতো দায়িত্ব পালন করেছে । সমাবেশ শেষে আমাদের মিছিল করার কথা আগে থেকেই বলা ছিল। কিন্তু সমাবেশ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ-অস্ত্র নিয়ে হায়ানের মত নিরস্ত্র জনতা, বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করে গুলি, টিয়ার সেল, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, লাঠি পেটা, আসবাব ভাংচুর করতে থাকে। পুলিশের গুলিতে সেচ্ছা সেবক দলের নেতা আঃ রহিম মারা যান। সেচ্ছা সেবক দলের সভাপতি আল আমিন, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোপান, হেলাল উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা সুমনসহ শতাধীক নেতা-কর্মী আহত হন, জনতা কি পরিমান আহত হয়েছেন তার খবর আমরা এখনও পাইনি। গুরুত্বর আহত ১৫-২০ জনকে বরিশাল পাঠানো হয়েছে। ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ১০-১৫ জন। অন্যরা পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পথচারীসহ বিএনপির ১০/১২ জন নেতা কর্মীকে গ্রেপ্তারের প্রাথমিক খবর পেয়েছি। এ হামলা কিশের আলামত, এহত্যার দায় সরকারকেই বহন করতে হবে। জনতার পুলিশ এখন আওয়ামীলীগের হয়ে হত্যা যগ্যে নেমেছেন, বিদ্যৎত,জ্বালালি,গ্যাস নিয়েওতো তারাসহ াদের পরিবারও ভুগছেন, তাদের আতœীয় স্বজনও একর্মসুচিতে অংশ নিয়েছেন। অবরুদ্ধ করে রেখেছেন আমার বাসভবন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আমি মিছিলের একেবারে সামনে ছিলাম। আমাকেও তারা মেরেছে। এমন কেউ নেই যাকে মারেনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের এমন অবস্থা করেছে যে সামনে যাওয়ার আর কোনো সুযোগই পাইনি।
পুলিশের হামলা কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে নির্যাতিত ও নিপ্রিত জনতা সহ আমাদের ২০/২৫ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। হয়তো এত উপস্থিতি দেখেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি করেছে। অর্নির্বাচিত আওয়ামী সরকার শেষ রক্ষা পাওয়ার জন্য পুলিশ বাহিনী দিয়ে জনতা, বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে, তাদের শেষ রক্ষার পথ নাই।
তিনি বলেন, লাঠিপেটার সথে তারা টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং সরাসরি গুলি করে। গুলিতে সেখানেই আঃ রহিম নামের সেচ্ছা সেবক দলের একনেতা মারা যান। আমাদের ভোলা ছাত্রদলের সভাপতির, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকসহ আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শতাধিক নেতা-কর্মীরসহ হাজার হাজার জনতার গায়েও গুলি লেগেছে। শুনেছি ২ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
পুলিশ কেন এভাবে হামলা করল বা গুলি চালালো আমি জানি না। কোনো উসকানি ছাড়া পুরিম সরাসরি গুলি চালাতে আমি কখনো দেখিনি। এমনকি ঢাকাতেও না।
এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের অনুমতি ছিল কি না জানতে চাইলে ভোলা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ ট্রুমেন বলেন, অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হলে তারা নানাভাবে হয়রানি করে। স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছিলাম, আমরা সমাবেশ করব এবং মিছিল নিয়ে কয়েকশ গজ যাব। তারা আমাদের মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছিলেন। আমরা পার্টি অফিসের সামনে সমাবেশ শেষ করে মিছিল নিয়ে বের হব, সেই সময় অতর্কিত হামলা চালায় পুলিশ। তারা সরাসরি আমাদের ওপর গুলি চালায়। সাংবাদিক মিজানুর রহমান ও শিবলু আহত হয়েছেন।
ভোলা সদর সার্কেল ফরহাদ সদ্দার বলেন, বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উসকানি মুলক ¤েøাগান দিচ্ছিল ওইসময় তাদের বাধা দিলে পুলিশের সাথে সংঘষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় আমাদের ৬ পুলিশ আহত হয়েছেন। বিএনপির নেতা নিহতের বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।